‘বাংলায় কোনও অবস্থাতেই সিএএ হবে না, জীবন দেব, নাগরিকত্ব দেব না’, নদিয়া থেকে হুংকার মমতার

- আপডেট : ৯ নভেম্বর ২০২২, বুধবার
- / 9
পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: তিনদিনের সফরে নদিয়ায় এসে আজ বুধবার কৃষ্ণনগর গভর্মেন্ট কলেজের মাঠের জনসভা থেকে ফের সিএএ, নাগরিকত্ব ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই সঙ্গে রাজ্যসরকার যে মতুয়াদের পাশে সব সময় ছিল সে কথা বুঝিয়ে দিলেন তিনি।
এদিনের সভা থেকে মমতা বলেন, নির্বাচন আসলেই মাথায় এনআরসি’র ভূত চাপে। সামনেই গুজরাত নির্বাচন তাই এনআরসি’র ভূত মাথায় চেপেছে। বাংলায় কোনও অবস্থাতেই সিএএ হবে না। নাগরিকত্ব আছে বলেই ভোটাধিকার রয়েছে সবার। মতুয়াদের নাগরিকত্ব কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। রাজ্য সরকার উচ্ছেদ বিরোধী। আপনাদের নাগরিক থাকবেন, আপনাদের নাগরিকত্ব আমি কাড়তে দেব না, জনসভা থেকে হুংকার দেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলায় বসবাসকারী মতুয়ারা নাগরিক। জীবন দিতে প্রস্তুত, নাগরিকত্ব ছাড়ব না। মতুয়াদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, বড়মা যতদিন বেঁচে ছিলেন কেউ দেখেনি, উন্নয়ন আমি করেছি।
রাজনৈতিকভাবে লড়াইয়ের জন্য আমি সব সময় প্রস্তুত। তৃণমূল একটি মানবিক সরকার। একটা মানবিক সরকারকে দাণবিক সরকারের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। ভোট এলেই মতুয়া রাজনীতি। রাজ্যে সিএএ করতে দেওয়া হবে না। নাগরিকত্ব নিয়ে ভুল বোঝাচ্ছে বিজেপি। আমরা সবাই নাগরিক।
মমতা বলেন, সব উদ্বাস্তু নিঃশর্তে জমি পাবে। রাজ্য সরকার উচ্ছেদের বিরোধী।
মুখ্যমন্ত্রী জনসভা থেকেই সোচ্চার হয়ে বলেন, বিজেপি কিভাবে মিথ্যা বলে লোকসভা, বিধানসভায় আসন পেল? রাণাঘাট, নদিয়ায় প্রভূত উন্নতি করেছে রাজ্য সরকার। আর বিজেপি কিছুই করছে না, তাহলে নদিয়ার মানুষ ভোট দিল কেন? ২০২৪ এ বিজেপি ক্ষমতায় আসবে না।
মমতা বলেছে, বিজেপি চোরদের সাহায্য করছে। আর তৃণমূলকে হেনস্থা করছে। সব থেকে বেশি টাকা তোলে বিজেপি। লোকসভা, বিধানসভা ভোট আটকাতে অফিসার দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে, এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। ইডি, সিবিআই দিয়ে সম্মানহানি চলছে।
রাজ্যে চলা অস্থিরতার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একজন ভুল করলেই সবাই খারাপ এই রকম নয়। ভুল করাটাও মানুষের অধিকার। আমি চাই ভুল করলে শুধরে নেবে।
ফের আরও একবার কেন্দ্রের ১০০ দিনের টাকা বঞ্চনা নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি বলেন, ১০০ দিনের কাজে বাংলাকে বঞ্চনা করা হচ্ছে। ১ বছর ধরে ১০০ দিনের প্রাপ্য দেওয়া হচ্ছে না। বিজেপির মিথ্যাচার এখানে চলবে না। প্রতি বছর বাংলা ১০০ দিনের কাজে প্রথম, তাই এই বঞ্চনা।
নাম না করে, সিপিএম, কংগ্রেসের নামে তোপ দেগে মমতা বলে, নির্বাচনের সময় তিন দল এক হয়ে যায়।
নদিয়ায় দলীয় কোন্দল নিয়ে মমতা কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বিধায়করা ঝগড়া করলে পার্টিতে জায়গা নেই। ইগো থাকলে ঘরে বসে যান। ভালো কাজ করলে তবেই দলে গুরুত্ব। তৃণমূল কোনও গ্রুপ নয়, তৃণমূল একটা পরিবার। ফিল্ডে কাজ করলে আমি তাকে ডেকে নেব।
এদিন জনসভা থেকে জনসংযোগ বাড়াতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা এদিন বলেন, আমার চিন্তা, মনন, দর্শনে বাংলা। এমনকী আমি যে শাড়িটা পরি, সেটাও বাংলার তাঁতির ঘরে বোনা।
জনসভায় থেকের রাজ্য ডেঙ্গু পরিস্থিতির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে পুরসভা, পঞ্চায়েতকে সকলকে সতর্ক করার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।