বেইরুট: অবশেষে আশার আলো! মধ্যপ্রাচ্যের একাংশ থেকে সরছে যুদ্ধের মেঘ। হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সিলমোহর ইসরাইলের। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর অবশেষে নতুন সূর্যের কিরণ দেখল লেবাননবাসী। যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হয়েছে বলেই খবর। ফলত প্রায় ১৪ মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘাত আপাতত থামলো। স্থানীয় সময় বুধবার ভোর ৪টে থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল। লেবাননে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছে ইরান। দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর এই প্রতিক্রিয়া জানায় তেহরান।
ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘায়ি এক বিবৃতিতে লেবাননের সরকার, জনগণ ও প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতি ইরানের দৃঢ় সমর্থনের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ইরান ছাড়া অনেক দেশেই যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছে। দেশগুলো যথাক্রমে চিন, ইরাক, ইজিপ্ট, তুর্কি, অস্ট্রেলিয়া, সায়প্রাস, এছাড়া আনসারুল্লাহ। বলা বাহুল্য, মঙ্গলবার রাতে যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দেয় ইসরাইল মন্ত্রিসভা। এর পর নীতিগত ভাবে এই চুক্তি অনুমোদন করেছেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ২৭ নভেম্বর স্থানীয় সময় ভোর ৪টে থেকে লাগু হচ্ছে এই সংঘর্ষবিরতি। আপাতত ২ মাসের জন্য একে অপরের বিরুদ্ধে কোনও হামলা চালাবে না হিজবুল্লাহ ও ইসরাইল। পরিস্থিতি অনুযায়ী বাড়ানো হবে চুক্তির মেয়াদ।
চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর এক্স হ্যান্ডেলে দীর্ঘ পোস্ট করেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন। তিনি লেখেন, মধ্যপ্রাচ্যের জন্য সুখবর। হাজার টালবাহানার পর অবশেষে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ শেষ করতে আমেরিকার প্রস্তাব মেনে নিয়েছে দুই পক্ষ।’ আমেরিকার পাশাপাশি এই শান্তি প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ফ্রান্সও। সংশ্লিষ্ট ঘটনায় নেতানিয়াহুও এই চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার জন্য আমেরিকাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। চুক্তি অনুযায়ী, ৬০ দিনের অন্তর্র্বতী সময়সীমার মধ্যে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে। সেখানে লেবাননের সরকারি বাহিনী পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েন করবে। লিটানি নদীর দক্ষিণে তারা অবস্থান নেবেন। এর মধ্যে থাকছে ইসরাইল-লেবানন সীমান্তের ৩৩টি চৌকি। হিজবুল্লাহর সদস্যরা দক্ষিণ লেবানন ছেড়ে যাবে এবং সেখান থেকে তাদের সব সামরিক অবকাঠামো সরিয়ে ফেলা হবে। যুক্তরাষ্ট্র মূল চুক্তির পাশাপাশি আলাদা করে একটি চিঠি যুক্ত করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতির কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে ইসরাইলের পাল্টা জবাব দেওয়ার অধিকার রয়েছে।