৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘দ্য কেরালা স্টোরি’: ‘কেরলে লাভ জিহাদের ঘটনা ঘটলে দায়বদ্ধ থাকবে সরকার’, মন্তব্য রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ৬ মে ২০২৩, শনিবার
  • / 8

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: : ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে বিতর্কের পারদ ক্রমশই জোরালো হচ্ছে। যার আঁচ সরাসরি পড়েছে রাজনীতির আঙিনায়। মুক্তির আগেই কেরলের বিভিন্ন জেলায় এই সিনেমার স্ক্রিনিং বাতিল করা হয়েছে। বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেন ও অভিনেত্রী আদাহ শর্মা অভিনীত ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ঘিরে বিভিন্ন মহলে বিরুদ্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

তালিকায় থাকার পরেও কোচিতে স্ক্রিনিংয়ের দুটি শো-বাতিল করা হয়। লুলু মল ও সেন্টার স্কোয়ার মল দুটি এই শো-এর স্ক্রিনিং বাতিল করে। পাশাপাশি কোল্লাম, পাঠানমথিতা, কোট্টায়াম, ইদুক্কি, কান্নুর সহ ওয়েনাড় জেলায় এই সিনেমার স্ক্রিনিং বয়কট করেছে। বিতর্ক আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।

এই অবস্থায় কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান বলেন, কেরলে লাভ জিহাদের ঘটনা ঘটলে সেই দায় রাজ্য সরকারকে নিতে হবে। রাজ্যপাল খান বলেন, ‘আমি ছবিটি দেখিনি, যারা শান্তি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের অবশ্যই বিষয়টি দেখা উচিৎ। কেরলে লাভ জিহাদের ঘটনা ঘটলে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। রাজ্যপাল আরও বলেন, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ একটি বিতর্কিত সিনেমা বলে প্রচার করছি না।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এবং কেরল বিধানসভার প্রাক্তন বিরোধী নেতা রমেশ চেন্নিথালা অভিযোগ করেছিলেন যে ”দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমাটি সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করার একটি পরিকল্পনামূলক পদক্ষেপ। কংগ্রেস কোনও সিনেমা বা নাটকের বিরুদ্ধে নয়, তবে এটি যদি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা এবং বিভাজন তৈরি করে তবে তা বন্ধ করা উচিৎ। চেন্নিথালা আরও বলেন, আমরা নাটক বা সিনেমার বিরুদ্ধে নেই। স্ক্রিনিংকেও অনুমতি দেওয়া উচিৎ নয়, তাহলে এটি সমাজে সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলবে। চেন্নিথালার দাবি, আমরা সব সময় ব্যক্তির স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এসেছি। এই সিনেমা সমাজে সাম্প্রদায়িক বিভেদ আনতে পারে মনে করেই আমরা এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছি।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার কেরল হাইকোর্ট ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র উপর স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার করে প্রশ্ন তুলে বলে ‘সিনেমাটিতে ইসলামবিরোধী কী রয়েছে? কাল্পনিক একটি সিনেমা কী ভাবে সমাজে বিভাজন ও সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে?’ এই ছবির মুক্তি স্থগিত রাখতে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা দায়ের হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট ফুৎকারে উড়িয়ে দেয় এই মামলার আবেদন। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এই ছবি ইতিমধ্যেই সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। তাই এই ছবির মুক্তি আটকানো যাবে না।

প্রসঙ্গত,‘দ্য কেরালা স্টোরি ছবির টিজারে দেখানো হয়, কেরল থেকে ৩২ হাজার মহিলাকে ধর্মান্তরিত করে নিয়ে তাদের সিরিয়া ও আফগানিস্তানে আইএসআইয়ের প্রশিক্ষণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবিতে কেরলকে জঙ্গিদের ‘সেফ হেভেন’ হিসেবে দেখানো হয়েছে। সংলাপেও আপত্তি রয়েছে। এই নিয়েই বিতর্কে সূত্রপাত।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

‘দ্য কেরালা স্টোরি’: ‘কেরলে লাভ জিহাদের ঘটনা ঘটলে দায়বদ্ধ থাকবে সরকার’, মন্তব্য রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের

আপডেট : ৬ মে ২০২৩, শনিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: : ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে বিতর্কের পারদ ক্রমশই জোরালো হচ্ছে। যার আঁচ সরাসরি পড়েছে রাজনীতির আঙিনায়। মুক্তির আগেই কেরলের বিভিন্ন জেলায় এই সিনেমার স্ক্রিনিং বাতিল করা হয়েছে। বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেন ও অভিনেত্রী আদাহ শর্মা অভিনীত ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ঘিরে বিভিন্ন মহলে বিরুদ্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

তালিকায় থাকার পরেও কোচিতে স্ক্রিনিংয়ের দুটি শো-বাতিল করা হয়। লুলু মল ও সেন্টার স্কোয়ার মল দুটি এই শো-এর স্ক্রিনিং বাতিল করে। পাশাপাশি কোল্লাম, পাঠানমথিতা, কোট্টায়াম, ইদুক্কি, কান্নুর সহ ওয়েনাড় জেলায় এই সিনেমার স্ক্রিনিং বয়কট করেছে। বিতর্ক আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।

এই অবস্থায় কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান বলেন, কেরলে লাভ জিহাদের ঘটনা ঘটলে সেই দায় রাজ্য সরকারকে নিতে হবে। রাজ্যপাল খান বলেন, ‘আমি ছবিটি দেখিনি, যারা শান্তি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের অবশ্যই বিষয়টি দেখা উচিৎ। কেরলে লাভ জিহাদের ঘটনা ঘটলে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। রাজ্যপাল আরও বলেন, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ একটি বিতর্কিত সিনেমা বলে প্রচার করছি না।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এবং কেরল বিধানসভার প্রাক্তন বিরোধী নেতা রমেশ চেন্নিথালা অভিযোগ করেছিলেন যে ”দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমাটি সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করার একটি পরিকল্পনামূলক পদক্ষেপ। কংগ্রেস কোনও সিনেমা বা নাটকের বিরুদ্ধে নয়, তবে এটি যদি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা এবং বিভাজন তৈরি করে তবে তা বন্ধ করা উচিৎ। চেন্নিথালা আরও বলেন, আমরা নাটক বা সিনেমার বিরুদ্ধে নেই। স্ক্রিনিংকেও অনুমতি দেওয়া উচিৎ নয়, তাহলে এটি সমাজে সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলবে। চেন্নিথালার দাবি, আমরা সব সময় ব্যক্তির স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এসেছি। এই সিনেমা সমাজে সাম্প্রদায়িক বিভেদ আনতে পারে মনে করেই আমরা এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছি।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার কেরল হাইকোর্ট ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র উপর স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার করে প্রশ্ন তুলে বলে ‘সিনেমাটিতে ইসলামবিরোধী কী রয়েছে? কাল্পনিক একটি সিনেমা কী ভাবে সমাজে বিভাজন ও সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে?’ এই ছবির মুক্তি স্থগিত রাখতে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা দায়ের হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট ফুৎকারে উড়িয়ে দেয় এই মামলার আবেদন। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এই ছবি ইতিমধ্যেই সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। তাই এই ছবির মুক্তি আটকানো যাবে না।

প্রসঙ্গত,‘দ্য কেরালা স্টোরি ছবির টিজারে দেখানো হয়, কেরল থেকে ৩২ হাজার মহিলাকে ধর্মান্তরিত করে নিয়ে তাদের সিরিয়া ও আফগানিস্তানে আইএসআইয়ের প্রশিক্ষণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবিতে কেরলকে জঙ্গিদের ‘সেফ হেভেন’ হিসেবে দেখানো হয়েছে। সংলাপেও আপত্তি রয়েছে। এই নিয়েই বিতর্কে সূত্রপাত।