পুবের কলম প্রতিবেদকঃ রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাতের বাতাবরণ বহুদিনের। জগদীপ ধনকর পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসাবে দায়িত্ব নিয়েই নবান্নের সঙ্গে নানা সময়ে সংঘাতে জড়িয়েছেন। সেই বিতর্ক কিছুতেই যেন শেষ হচ্ছে না। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে ট্যুইটারে ব্লক করেছেন। তারপর ফের মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা করার জন্য চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল। এরই মধ্যে হাজির নয়া বিতর্ক। ফের নতুন করে ট্যুইট করেছেন রাজ্যপাল। যা নিয়ে ফের শুরু হয়েছে চর্চা। রাজ্যের তরফে বিধানসভা অধিবেশনের যে সুপারিশ করা হয়েছিল, তা ফেরত পাঠিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন করতে চেয়ে রাজভবনে প্রস্তাব দেওয়া হয়। রাজ্য সরকার চাইছে বিধানসভার অধিবেশন ৭ মার্চ থেকে শুরু হোক। কিন্তু ওই দিন থেকে আদৌ বিধানসভার অধিবেশন শুরু হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
অনেকেই মনে করছেন জটিলতা দেখা দিতে পারে। কেন-না এ নিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের বক্তব্য, ৭ মার্চ থেকে বিধানসভা অধিবেশন শুরু করার যে সুপারিশ রাজভবনে পাঠানো হয়েছে তা সংবিধান মেনে করা হয়নি। সেই কারণে অধিবেশন ডাকার জন্য ওই সুপারিশ ফেরত পাঠানো ছাড়া রাজ্যপালের কাছে আর কোনও উপায় নেই। এ দিন ট্যুইট করে এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যপাল।
জানা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি নিয়েই বিধানসভার অধিবেশন ডাকার জন্য রাজ্যপালের কাছে সুপারিশ করেছিলেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই সুপারিশে বলা হয়েছিল, আগামী ৭ মার্চ দুপুর ২টোর সময় রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশন ডাকা হোক। কিন্তু সেই সুপারিশ ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। রাজ্যপালের দাবি, তিনি ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের সুপারিশ পেয়েছেন। তিনি রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রীর ওই সুপারিশ পেয়েছেন। তাতে অনুমোদন রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব¨্যােপাধ্যায়ের। তারপরও কেন তা ফেরত পাঠানো হচ্ছে?
এ নিয়ে রাজ্যপালের বক্তব্য সংবিধান অনুযায়ী একমাত্র রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়ার পরেই বিধানসভার অধিবেশন ডাকার জন্য সুপারিশ করতে পারেন পরিষদীয় মন্ত্রী। এ দিকে পরিষদীয় মন্ত্রী যে সুপারিশ রাজভবনে পাঠিয়েছেন, তাতে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের বক্তব্য বিষয়টি সংবিধানের ১৬৬ (৩) ধারার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। রাজ্যপাল কেবল রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন মিললেই বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে পারেন। তাই তিনি রাজ্যের সুপারিশ ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন।
রাজ্যপালের কাজের সমালোচনা করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। দলের নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, রাজ্যপাল ভেসে থাকার জন্য এবং তাঁর কোনও কাজকর্ম না থাকার কারণেই তিনি এই কাজ করছেন।