পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: পাশ-ফেল তুলে দেওয়া হয়েছিল। এবার সেই পাশ-ফেল ফের ফিরিয়ে আনছে কেন্দ্রের শিক্ষা মন্ত্রক। আর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে শিক্ষা মহল। সোমবার কেন্দ্রের শিক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, পাশ ফেল চালু করা হবে। তবে এই উদ্যোগ শুধুমাত্র পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণির জন্য।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণির কোনও পড়ুয়া পরীক্ষায় সফল না-হলে তাকে ফের সুযোগ দেওয়া হবে। ফলাফল বেরোনোর পর দু’মাসের মধ্যে ফের পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবে অকৃতকার্য হওয়া পড়ুয়া।
দ্বিতীয় পরীক্ষাতেও কোনও পড়ুয়া সফল না-হলে তাকে পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করা হবে না। তবে কোনও পড়ুয়াকেই স্কুল থেকে বিতাড়িত করা যাবে না। প্রয়োজনে গলদ কোথায়, তা খুঁজে বার করা হবে। দ্বিতীয় বারের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া পড়ুয়াদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে সহায়তা করবেন শ্রেণি শিক্ষকেরা।
শিক্ষা হল যুগ্ম তালিকাভুক্ত। কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথ উদ্যোগে শিক্ষার পদক্ষেপ গুলি কার্যকর করে থাকে। ইতিমধ্যেই দেশের ১৬টি রাজ্য এবং দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কেন্দ্রের নীতি অনুসরণ না-করে পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল প্রথা চালু করেছিল। হরিয়ানা এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরি অবশ্য এখনও এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। আর কেন্দ্রের নীতি মেনেই চলছিল পশ্চিমবঙ্গ-সহ বাকি রাজ্যগুলি।
শিক্ষার অধিকার আইনে বদল এনে ২০১৯ সালে কেন্দ্র জানিয়েছিল, দেশের সব প্রান্তে পড়ুয়াদের বুনিয়াদি শিক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে কাউকে ফেল করানো হবে না। পাঁচ বছর পর সেই শিক্ষার অধিকার আইন ফের বদলাতে চলেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের নয়া পাশ-ফেল নীতি কার্যকর হতে চলেছে কেন্দ্রীয় বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন দেশের ৩০০০-এরও বেশি স্কুলে। এই তালিকায় রয়েছে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, নবোদয় বিদ্যালয় এবং সৈনিক স্কুলগুলিও।
বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, যে-হেতু মন দিয়ে পড়াশোনার জন্য পুরস্কার বা তিরস্কার কিছুই থাকছে না, তাই ছাত্রছাত্রীরা পড়ার ইচ্ছেটাই হারিয়ে ফেলছে। ফলে স্কুলছুটের প্রবণতাও বাড়ছে। কলকাতার এক নামী স্কুলের প্রধান শিক্ষক বললেন, ‘অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত যে-হেতু পাশ করা সহজ, তাই তার পরে অনেকেই আর স্কুল আসতে চায় না।’ অনেকে আবার বলছেন, পাশফেল তুলে দেওয়ার ফলে স্কুলে ড্রপআউট কমেছিল। তবে অধিকাংশই পাশফেলকে স্বাগত জানাচ্ছেন।