সেখ কুতুবউদ্দিনঃ করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এবার সশরীরে ক্লাস শুরু হবে। তার আগে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করতে চাইছে ইংলিশ মিডিয়াম মাদ্রাসাগুলি। শনিবার ডাইরেক্টরেট অফ মাদ্রাসা এডুকেশন আবিদ হোসেন বলেন, জানুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হতে পারে। তাই ইংলিশ মিডিয়াম মাদ্রাসাগুলিতে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
বর্ধমান ইংরেজি মডেল মাদ্রাসার প্রধানশিক্ষক মুহাম্মদ নাসিরউদ্দিন বলেন, ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের জন্য ১৬ নভেম্বর থেকে ফর্ম দেওয়া শুরু হবে। ভর্তির জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে। ফর্ম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩ ডিসেম্বর। আর ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই ভর্তির প্রক্রিয়া শেষ হবে। ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ক্লাস চালু হবে।
অনেকের অভিযোগ, ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসাগুলি পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে। অনেক মাদ্রাসায় শিক্ষককের অভাব রয়েছে। বহু ইংরেজি মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও কম।
মোট ১৪টি মাদ্রাসা। এর মধ্যে ২টি ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসায় এখন সশরীরে চালু করা হচ্ছে। ডিএমই বলেন, এখন নবম শ্রেণি থেকে খুলবে। তাই অধিকাংশ ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসা অর্থাৎ নবম শ্রেণি নেই এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সশরীরে পঠন-পাঠন চালু হচ্ছে না।
রাজ্যের সংখ্যালঘুদের শিক্ষার উন্নয়নের কথা ভেবে ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসা চালু করেছে রাজ্য সরকার। ১৪টি ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসার মধ্যে চালু হয়েছে ১২টি। শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াও চালাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)। নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে পিএসসি-র বিরুদ্ধে।
আবিদ হোসেন আরও জানিয়েছেন, ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসাগুলি পুরোপুরি সরকারি। রাজ্যের সরকারি স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের মতো ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসার শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্বও পিএসসি’কে দেওয়া হয়।
ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসাগুলি যেহেতু সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান। তাই সংরক্ষণ নেই। সাধারণ নিয়মেই নিয়োগ ও ছাত্রভর্তি করা হচ্ছে। সুষ্ঠ পঠন-পাঠনের জন্য এই মাদ্রাসাগুলির সমস্ত বিষয়ের শিক্ষক চাওয়া হয়েছে বলে ডিএমই জানিয়েছেন।
ইতিমধ্যে প্রতিটি মাদ্রাসাকে ১২ জন্য শিক্ষক দেওয়ার কথা। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ এখনও সম্পন্ন করেনি পিএসসি। মাদ্রাসা খুললে নিয়োগ পুনরায় শুরু হবে। এদিকে ১৪টি মাদ্রাসার মধ্যে ৭টি মাদ্রাসায় স্থায়ী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে।
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকরা জানান, ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসায় শিক্ষক অনুপাত কম। তবে বেশিরভাগ মাদ্রাসায় এখন পার্শ্বশিক্ষক দিয়ে চালানো হচ্ছে। বাকী মাদ্রাসায় যাতে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ হয়, তার জন্য পিএসসিকে জানিয়েছেন ডিএমই। এ দিকে মাদ্রাসাগুলিতে যাতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুরা সুযোগ পায়, তার জন্য রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানিয়েছেন কিছু বিশিষ্টবর্গ।
অনেকের অভিযোগ, ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসা চালু হলেও পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। এই মাদ্রাসায় বহু অস্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন।
অস্থায়ী শিক্ষকদের জন্য গ্রান্ড দেয় রাজ্য সংখ্যালঘু দফতর। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, চক– ডাস্টার বা অন্য কিছু সরঞ্জাম কিনতে টাকা দেওয়া হয় না।
এ ক্ষেত্রে মাদ্রাসাগুলিকে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। মাদ্রাসার শিক্ষক নাসিরউদ্দিন আরও বলেন, এই মাদ্রাসার পড়ুয়াদের ভর্তির জন্য কোনও টাকা নেওয়া হয় না। কিন্তু এই সব জিনিসের দৈনন্দিন প্রয়োজন। তাই মাদ্রাসাগুলিকে এই কাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া উচিত।