ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে ৬ শ্রমিকের মৃত্যু, শোকার্ত পরিবার সহ গোটা গ্রাম

- আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২২, শনিবার
- / 13
শফিকুল ইসলাম, নদিয়া/ জাহির হোসেন, বারাসতঃ পেটের তাগিদে ভিনরাজ্যে কাজে যাওয়াই কাল হল। অন্ধ্রপ্রদেশের অমরাবতীতে দেয়াল ধসে মৃত হল নদিয়ার ২ শ্রমিকের। তাদের বাড়ি তেহট্টর টোপলা গ্রামে। নিহত দুই শ্রমিকের নাম মঞ্জু শেখ ও আমিন বিশ্বাস। উভয়ের বয়স ৩০ বছরের কাছাকাছি। শুক্রবার তাদের মৃতদেহ টোপলা গ্রামে আসে। রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে দেওয়াল ধসে তাদের মৃত্যু হয়। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে উভয়ের পরিবার।
অপরদিকে কেরলে মাটি ধসে মৃত্যু হয়েছে রাজ্যের আরও চার শ্রমিকের। এর মধ্যে অশোকনগরের তিন জন শ্রমিক আছেন। অন্যজন নদিয়ার হরিণঘাটা থানা এলাকার বলেই জানা গেছে। আহত হয়েছেন কয়েক জন।
শ্রীকৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতের প্রধান রফিকুল হাসান বলেন, খুব দুঃখজনক ঘটনা। মৃতদের ময়নাতদন্ত হয়ে গিয়েছে। মৃতদেহ গুলি বিমানে করে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ৫ তারিখ কেরলে বেসরকারি কোম্পানির কাজে যোগ দেওয়ার জন্য উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর ও নদিয়ার হরিণঘাটা থেকে যান মোট ১০ জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অশোকনগরের বেড়াবেড়ি গ্রামের কুদ্দুস মণ্ডল, শ্রীকৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতের আসুদি গ্রামের নজ্জেস আলি, নুর আমিন মণ্ডল ও হরিণঘাটার ফয়জুল মণ্ডল। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কেরলে গিয়ে কাজে যোগ দেন সকলে। ভাবতেও পারেননি এত বড় বিপদ অপেক্ষা করছে তাঁদের জন্য। শুক্রবার সন্ধেয় মাটি ধসে কেরলে মৃত্যু হয় চার শ্রমিকের। গুরুতর জখম হয়েছিলেন আরও ২ জন। এই চার শ্রমিকের মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের সদস্যদের দাবি, অবিলম্বে রাজ্য সরকারকে দেহগুলি ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি আর্থিক সাহায্যের আর্জিও করা হয়েছে। তবে এবিষয়ে এখনও সরকারের সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। ফলে কতদিনে দেহগুলি ফিরবে তা স্পষ্ট নয়। এদিকে সত্যিই ধসের কারণেই এই মৃত্যু নাকি অন্য রহস্য রয়েছে গোটা ঘটনার নেপথ্যে, তা ধোঁয়াশা।
পরিবার সূত্রে খবর, গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার দুপুরে খাবার খেয়ে পঁচিশ ফুট গর্তে নেমে কাজ করছিলেন। তখন হঠাৎ করে উপর থেকে মাটির ধসের নিচে চাপা পড়ে কয়েকজন কর্মী আহত হয়। সঙ্গীরা তরিঘড়ি তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক চারজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই এলাকায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।