দামেস্ক: সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের আকস্মিক পতন আঞ্চলিক ও পরাশক্তিগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই অবস্থায় ক্ষমতার শূন্যতা কাটাতে বিদ্রোহী জোট সরকার গঠনে মনোযোগী হয়েছে। বর্তমানে একটি অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব পালন করছে। তবে তাদের কাছ থেকে ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিতে এরই মধ্যে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো কাজ শুরু করেছে। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সোমবার রাতে এক গোপন বৈঠক করেছে। কূটনীতিকরা বলেছেন, ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের পর মাত্র ১২ দিনের মধ্যে আসাদের পতনে সবাই বিস্মিত। রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যসহ সবাই বিস্মিত। তবে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে এবং পর্যবেক্ষণ করতে হবে যে;পরিস্থিতি কীভাবে এগিয়ে যায়।’
Read More: বাশারের ‘আয়নাঘরে’ বন্দি ১৩৭০০০!
রাশিয়া আসাদের সরকারকে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। রবিবার আসাদ দামেস্ক ছেড়ে মস্কো পালিয়ে যান, যা তাঁর পরিবারের ৫০ বছরের বেশি সময়ের কঠোর শাসনের অবসান ঘটিয়েছে।
দামেস্কে এখনো উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। আসাদের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ জালালি গত সোমবার বিদ্রোহী-নেতৃত্বাধীন স্যালভেশন গভর্নমেন্টের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের সম্মতি দেন। এই প্রশাসন বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় অবস্থিত।
প্রধান বিদ্রোহী নেতা আহমেদ আল-শারা;যিনি আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামে বেশি পরিচিত;তিনি প্রধানমন্ত্রী জালালি এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল মিকদাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। জালালি বলেছেন, ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে। অন্তর্র্বতী প্রশাসনের নেতৃত্ব দেবেন মোহাম্মদ আল-বাশির, যিনি বর্তমান স্যালভেশন গভর্নমেন্টের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন।
Read More: গাজায় যুদ্ধ চলবে, হুংকার নেতানিয়াহুর
বিদ্রোহী জোট এখনো সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা প্রকাশ করেনি। এমন একটি অঞ্চলে এ ধরনের ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনো নির্দিষ্ট মডেলও নেই। গত সোমবার সিরিয়ার রাজধানীর দামেস্কে কিছু বিদ্রোহী যোদ্ধা আশা প্রকাশ করেছেন, শিগগির একটি নাগরিক প্রশাসন দেশ পরিচালনা করবে। ইদলিব প্রদেশের যোদ্ধা ফেরদৌস ওমর জানান, ‘আমরা চাই রাষ্ট্র এবং নিরাপত্তা বাহিনী যেন ক্ষমতায় থাকে।’ ফেরদৌস শিগগির নিজের আদি পেশা কৃষিকাজে ফিরে যেতে চান।
অপরদিকে, সিরিয়া জুড়ে শৃঙ্খলা ফেরানোর কিছু চিহ্ন ধরা পড়েছে। সিরিয়ার মঙ্গলবার খোলা হয় এবং জ্বালানি মন্ত্রক আজই এই খাতের সব কর্মচারীকে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।