অসমে মাদ্রাসাগুলিকে সরকারি স্কুলে রূপান্তরিত করার বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারকে নোটিশ সুপ্রিম কোর্টের

- আপডেট : ২ নভেম্বর ২০২২, বুধবার
- / 15
পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: ২০২০ সালের গুয়াহাটি হাইকোর্টের মাদ্রাসা সংক্রান্ত একটি রায়ের বিরুদ্ধে মাদ্রাসাগুলির ম্যানেজিং কমিটি সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে। সেই মামলা গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার নোটিশ পাঠিয়েছে অসম সরকারকে। অসম সরকার ২০২০ সালের অসম রিপিলিং আইনের দৌলতে রাজ্যের সমস্ত সরকারি মাদ্রাসা সরকারি স্কুলে রূপান্তরিত করেছিল। এর বিরুদ্ধে গুয়াহাটি হাইকোর্টে মামলা হয়। কিন্তু হাইকোর্টে অসম সরকারের পদক্ষেপকে ঠিক বলে অসম রিপিলিং আইন বজায় রাখে। অসম সরকার ২০২০ সালে অসম রিপিলিং অ্যাক্ট আনার আগে দু’টি আইন বাতিল করে।
আইনগুলি হল অসম মাদ্রাসা এডুকেশন প্রভিন্সিয়ালাইজেশন আইন ১৯৯৫ এবং রিঅর্গানাইজেশন অব মাদ্রাসা এডুকেশনাল ইন্সটিটিউশন আইন ২০১৮। চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট মাদ্রাসা ম্যানেজমেন্ট কমিটির আর্জি বাতিল করে। আর্জিতে বলা হয়েছিল সরকারি অর্থসাহায্য প্রাপ্ত মাদ্রাসাগুলি সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যার প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনা করে থাকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। কিন্তু গুয়াহাটি হাইকোর্ট তাদের রায়ে বলে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীদের সরকারি কর্মীর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। তাই এই মাদ্রাসাগুলি সংখ্যালঘুদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কিংবা পরিচালিত বলা যাবে না। এই রায় দিয়েছিলেন গুয়াহাটি হাইকোর্টের তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া। ধুলিয়া পরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অজয় রাস্তোগি এবং বিচারপতি সিটি রবিকুমারের বেঞ্চ এই মামলায় অসম সরকারের বক্তব্য জানতে নোটিশ পাঠিয়েছে মঙ্গলবার। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলাটি করেছেন জনৈক মুহাম্মদ ইমাদউদ্দিন বড়ভুঁইয়া আইনজীবী আদিল আহমেদের মাধ্যমে। এই মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, হাইকোর্ট তাদের রায়ে ভুলবশত মাদ্রাসাগুলিকে সরকারি স্কুল বলে উল্লেখ করেছে।
এটাও ভুল যে মাদ্রাসাগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে সরকার। এর ফলে সংবিধানের ২৮(১) ধারা লঙ্ঘিত হয়েছে, কারণ এরপর মাদ্রাসাগুলিতে আর ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া যাবে না।
হাইকোর্ট সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে সরকারি স্কুল হিসেবে মান্যতা দেওয়ায় সংবিধানের ১৪, ২১, ২৫, ২৬, ২৯ এবং ৩০নং ধারায় বর্ণিত মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
আপিল মামলায় আরও বলা হয়েছে, অসম মাoাসা এডুকেশন (প্রভিন্সিয়ালাইজেশন) আইন ১৯৯৫, যাকে রাজ্য সরকার বাতিল করে দিয়েছিল, সেটি রাজ্যকে সীমিত অধিকার দিয়েছে যেমন বেতন দেওয়া এবং মাদ্রাসার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের সুবিধা প্রদান করা।
কিন্তু সরকার মাদ্রাসাগুলিকে সরকারি স্কুলে রূপান্তরিত করে মাদ্রাসায় ধর্মীয় শিক্ষা প্রদানের সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার এভাবে মাদ্রাসার সম্পত্তি আদিও হাতিয়ে নিয়েছে। আর্জিতে আরও বলা হয়েছে, হাইকোর্ট অসম সরকারের সিদ্ধান্তকে বহাল রেখে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এবং পরিচালিত মাদ্রাসাগুলির চরিত্র এবং নাম দু’টিই পাল্টে দিয়েছে। মাদ্রাসার অস্তিত্ব লোপ পাওয়ায় বর্তমান শিক্ষা বৎসরে ছাত্রদের ভর্তি করা যাচ্ছে না।