নিশ্চিন্তে ফিরে যান, ক্লাস নিনঃ মমতা
SSC CASE: বেতন পাবেন, যোগ্য-অযোগ্য নিয়ে ভাববার দরকার নেই: মমতা

- আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার
- / 132
SSC CASE: যোগ্য-অযোগ্য নিয়ে না ভেবে ক্লাস করান
পুবের কলম প্রতিবেদক: ‘SSC CASE’… চাকরি নিয়ে রাজনীতি নয়, বরং মানবিকতার জয় হোক। মেদিনীপুরের মঞ্চ থেকে এই বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় এসএসসি ভবনের সামনে বিক্ষোভরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশ্যে এদিন পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে স্পষ্ট বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনারা বেতন নিয়ে ভাববেন না। নিশ্চিন্তে স্কুলে ফিরে যান, ক্লাস নিন। আইন মেনেই রাজ্য সরকার আপনাদের পাশে থাকবে।’
গত কয়েকদিন ধরে আদালতের নির্দেশে বাতিল হওয়া চাকরি ও বকেয়া বেতন নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন বহু শিক্ষক। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এই আন্দোলনের আড়ালে কিছু ‘সুবিধাবাদী’ গোষ্ঠী আছে, যারা কথায় কথায় আদালতের দ্বারস্থ হন এবং পিআইএল করে সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বিপর্যস্ত করে তোলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলায় কয়েকজন আছেন যারা নিজেরা চাকরি খাওয়ার জন্য, সরকারি চাকরি (SSC CASE) আটকে দেওয়ার জন্যই পিআইএল করেন। এরা জনগণের কাজ করে না, ভোটও চায় না। কেবলই আদালতে গিয়ে বাংলার সর্বনাশ করছে।’
♦ মে মাসের প্রথম সপ্তাহে Murshidabad যাচ্ছেন মমতা
মুখ্যমন্ত্রী এও স্পষ্ট করেন, (SSC CASE) ‘আমরা কারও চাকরি খেতে চাই না। বরং যারা চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছে, তাদের উপরই আস্থা রাখুন। যারা মামলা করে চাকরি কেড়ে নিতে চায়, তাদের নয়।’ তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের তরফে রিভিউ পিটিশন দাখিল করা হয়েছে এবং তারই ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ‘আপনারা যে বেতন পাবেন, সেই সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি এবং সেইমতো ব্যবস্থা হবে,বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আন্দোলনকারীদের একাংশ ‘উসকানি’ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যারা উস্কানি দিচ্ছে, তারা কিন্তু আপনাদের বেতন দেবে না। সেই দায়িত্ব সরকারের। কাজেই আপনারা উত্তেজিত হবেন না, দাঙ্গা করার দরকার নেই। আইনের পথে হেঁটেই সমস্যা মিটবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যাদের চাকরি বাতিল হয়েছে, সেই গ্রুপ সি ও ডি’র বিষয়ে আমরা আবারও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছি। প্রয়োজনে ফের আদালতের দ্বারস্থ হবো। আপনাদের বলছি, আমাদের উপর বিশ্বাস রাখুন। যারা মানবিক মুখ হারিয়ে ফেলে রাজনীতি করছে, তারা আপনাদের কোনও সুরাহা দেবে না।’
হাইকোর্টে প্রাথমিকের ৩৫ হাজার শিক্ষককে ছাঁটাইয়ের দাবিতে যারা মামলা করেছেন তাদের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের চাকরি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, তারা কেউ কেউ ব্যাংক লোন নিয়ে বাড়ি করেছে, পরিবার রয়েছে। একটা চাকরি কেড়ে নেওয়ার আগে ভাবতে হবে তার পেছনে একজন মানুষের জীবন জড়িয়ে আছে। রাজনীতি করতে গিয়ে মানুষকে মারবেন না, বরং মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর কথা ভাবুন।’
তিনি ইউপি ও ত্রিপুরার উদাহরণ টেনে বলেন, ‘ইউপিতে ৬৯ হাজার ও ত্রিপুরায় ১০ হাজার চাকরি গিয়েছে, কেউই তা ফেরত পায়নি। আমরা কিন্তু আদালতে গিয়ে লড়ে চাকরি ফেরানোর ব্যবস্থা করেছি। বাংলায় আমরা মানবিক মুখ দেখাতে চাই।’
বক্তব্যের শেষে মুখ্যমন্ত্রী ফের আবেদন জানান, ‘শিক্ষক-শিক্ষিকারা, আপনারা স্কুলে যান, ক্লাস নিন। যেটুকু সমস্যা আছে সেটা সরকার ও আদালতের দেখার বিষয়। আইন যেমন নিয়ম মানতে বলে, তেমনি নতুন পথও খুলে দেয়। আমাদের লক্ষ্য বেকারত্ব কমানো, কাজের সুযোগ বাড়ানো।’
মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের এই মন্তব্যের পর বিক্ষোভরত (SSC CASE) শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি কোন পথে এগোয়, এখন সেটাই দেখার। তবে, সরকারের অবস্থান যে এই মুহূর্তে অনেকটাই দৃঢ় এবং আইনসঙ্গত পথেই সমস্যার সমাধান চাইছে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।