পুবের কলম প্রতিবেদক: আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু মানেই বিরাট কোহলি। তাকে আইপিএলে একযোগে সবাই আরসিবির ক্রিকেটার হিসেবেই চেনেন। একইভাবে মুহাম্মদ সিরাজকেও ক্রিকেটপ্রেমীরা বেঙ্গালুরু ফ্র্যাঞ্চাইজির ক্রিকেটার হিসেবেই চেনেন। টানা সাত বছর সাফল্যের সঙ্গে এই দলের হয়ে ধারাবাহিকভাবে খেলে গিয়েছেন তিনি। এই দলের হয়ে ৮৭ ম্যাচে ৮৩টি উইকেট নিয়েছেন। অথচ এবারের নিলামের আগে সিরাজকে রিটেন না করে ছেড়ে দেয় আরসিবি টিম ম্যানেজমেন্ট। অনেকেই ভেবেছিলেন, জেদ্দায় আয়োজিত হয়ে যাওয়া মেগা নিলামে টিম বেঙ্গালুরু বোধহয় ‘রাইট টু ম্যাচ’ কার্ড ব্যবহার করে সিরাজকে তার নিজের ক্লাবে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। বাস্তবে অবশ্য তেমনটা ঘটেনি। নিলামে তার জন্য বিড পর্যন্ত করেনি তারা। সেই সুযোগে ভারতীয় দলের অন্যতম সেরা পেস ব্যাটারি সিরাজকে ১২.২৫ কোটি টাকায় কিনে নেয় গুজরাত টাইটান্স। এতেই সাত বছর পর আরসিবির সঙ্গে সিরাজের বিচ্ছেদ ঘটেই গেল।
সিরাজ যে মনেপ্রাণে বেঙ্গালুরুর এই ফ্র্যাঞ্চাইজি ছাড়তে চাননি, সেটা প্রমাণ পাওয়া গেল তার এদিনের আরসিবি ভক্তদের উদ্দেশ্যে পোস্ট করা বিদায় বার্তায়। অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজির সদস্য হওয়ার আগে এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় আরসিবি সমর্থকদের জন্য আবেগঘন এক বার্তায় সিরাজ লিখলেন, ‘সাতটা বছর একটা দলের হয়ে খেললাম। আমি কিন্তু গর্বের সঙ্গে আরসিবির জার্সি গায়ে মাঠে নামতাম। যেদিন আমি প্রথম এই দলের জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলাম, সেদিনও বুঝিনি যে পরবর্তীতে আরসিবির সঙ্গে এতটা আত্মস্ত হয়ে যাব। আরসিবির জার্সিতে প্রথম বল করা, প্রথম উইকেট নেওয়া, প্রতিটা মুহূর্তের জন্য আমি এই দলের সমর্থকদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব। এই সাতটা বছর আমার হৃদয়ের খুব কাছের। আজ যখন আমি সেই পিছনের সময়ের দিকে ফিরে তাকাচ্ছি, আমার হৃদয় ভালোবাসা, আবেগ ও কৃতজ্ঞতায় ভরে উঠছে।’
নিজের সদ্য ছেড়ে আসা দলটি প্রসঙ্গে সিরাজ আরও লেখেন, ‘এই দলটার হয়ে খেলার সময় কত চড়াই উতরাই দেখেছি। যে ম্যাচে আমরা হেরে যেতাম, তখনও এই সমর্থকদের মুখে কটু কথা শুনিনি। গ্যালারির পাশাপাশি সোশাল মিডিয়াতেও ওরা আমাদের পাশে থেকেছে। আমাদের হয়ে সওয়াল করেছে। আসলে তোমরাই (সমর্থকরা) আরসিবি-র আত্মা। মাঠে যতবার পা রেখûছি, ততবার তোমাদের চোখে আশা ও স্বপ্ন দেখেছি। তোমাদের চোখে উচ্ছ্বাস দেখেছি। যখন হেরেছি, তোমাদের চোখে জল দেখেছি। একটা কথাই বলতেই হয়, আরসিবি-র থেকে ভালো সমর্থক গোটা পৃথিবীতে নেই। আরসিবি শুধু একটা ফ্র্যাঞ্চাইজির নাম নয়, ওটা যেন নিজের পরিবার।’ পাল্টা আরসিবিও সিরাজকে বিদায় জানিয়ে লেখে, ‘তোমাকে ধন্যবাদ সিরাজ। তুমি মাঠে ও মাঠের বাইরে আমাদের হিরো হয়ে থাকবে।’