ওয়ার্ড ১৩৯
সেখ মুস্তাক আহমেদ (বাচ্চুদা)– একজন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও ব্যবসায়ী। তিনি এবার কলকাতা পুরভোটের ময়দানে ১৩৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী। কেন রাজনীতিতে এলেন– কাউন্সিলর হিসাবে কী কী করতে চান সেখ মুস্তাক আহমেদ– সেসব কথা ওঠে এল একান্ত সাক্ষাৎকারে। তাঁর সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন পুবের কলম-এর প্রতিনিধি আসিফ রেজা আনসারী।
পুবের কলম প্রথমে আপনার পরিবার সম্পর্কে যদি কিছু বলেন।
সেখ মুস্তাক আহমেদ আমার আব্বা সেখ আবদুল সামাদ– দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কর্মচারী ছিলেন। ছিলেন একজন ক্রীড়াবিদও। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত রঞ্জি ট্রফির ক্রিকেটার ছিলেন। মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ক্রিকেট টিম-এর চারবারের ক্যাপ্টেন হিসাবে কাজ করেছেন। সমাজসেবী ও পশুপ্রেমী হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। বড়িশা ক্লাব এবং মেটিয়াবুরুজ এলাকায় ক্রিকেট কোচ হিসাবে বিশেষ পরিচিত অর্জন করেন। তিনি ইন্তেকাল করেছেন। আমার মা রওশন আরা বেগম আমাদের সঙ্গেই থাকেন। আমরা চার ভাইবোনের মধ্যে আমিই একমাত্র পুত্র সন্তান।
পুবের কলম রাজনীতিতে এলেন কীভাবে– কেন ভোটে দাঁড়ানোর প্রয়োজন মনে হল?
সেখ মুস্তাক আহমেদ রাজনীতিতে হঠাৎ করেই এসেছি এমনটা ঠিক নয়। আগে বামপন্থী দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সিঙ্গুরের ঘটনার পর সিদ্ধান্ত নিই সক্রিয় রাজনীতি করব না। এ দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজ– আদর্শ আমাকে আকৃষ্ট করতে থাকে। আগে থেকেই সমাজসেবার কাজ করতাম– লকডাউনের পর আরও বেশি সক্রিয় হই। ধীরে ধীরে পরিচিতির জগৎটা বড় হতে থেকে। তারপর মানুষের চাহিদা মেনে ও রাজ্যের উন্নয়নের কাছে শামিল হতে চেয়েই রাজনীতিতে সক্রিয় হতে থাকি।
এবারের পুরভোটে দল আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। আমি চাই সেবার ব্রত নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক কাজ সব ঘরে পৌঁছে দিতে চাই। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে অনেক কাজ করেছি। তবে মনে হয়েছে– একটা পোস্ট থাকলে আরও বৃহত্তর আকারে কাজ করতে পারব। এই কারণেই ভোটে দাঁড়ানো। ছোটবেলা থেকে যাঁরা আমার পাশে রয়েছেন তাঁরা হলেন- সানাউল্লাহ মোল্লা– হাজী হাসেম আলি মোল্লা– সমীরুদ্দিন মীর– হাজী আবদুর রহিম– ইউনুস আলি মণ্ডল– মুহাম্মদ নিজামুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
পুবের কলম লকডাউন ও করোনা নিয়ে কথা বলছিলেন– কী কী করেছেন সে-সময়?
সেখ মুস্তাক আহমেদ কী কাজ করেছি– তা নিজে থেকে বলা আমার কাছে কষ্টকর। তবুও যদি উল্লেখ করতে চান– আমি মেটিয়াবুরুজ জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি। এর মাধ্যমে গরিব মানুষকে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া– বস্ত্র প্রদান ইত্যাদির কাজ করেছি। পথকুকুরদেরও নিজে হাতে রান্না করা খাবার খাওয়ানোর কাজ করি।
আর একটা কথা– শুধু মেধাবী ছাত্র হিসেবে নয় ছোটবেলা থেকেই সমাজসেবা– পশুপ্রেম এবং এলাকার স্কুলছুট ছেলেদের বিনা পরিশ্রমে নিজ উদ্যোগে পড়িয়ে তাদের শিক্ষিত করে তোলার চেষ্টা করেছি সব সময়। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের অসহায় মানুষের সেবায় দিনরাত নিজেকে নিয়োজিত রাখার চেষ্টা করেছি। আমাদের পারিবারিক পোশাক প্রস্তুত সংস্থা ‘সুহানা ফ্যাশন’-এর প্রভূত উন্নতির কাজে যেমন মন দিয়েছি– তেমনি এলাকার মানুষের ভালোর জন্যও চেষ্টা করি।
পুবের কলম কাউন্সিলর হিসাবে কোন কাজের উপর প্রথম নজর দেবেন?
সেখ মুস্তাক আহমেদ মানুষের সমস্যা ও তার সমাধানের পথের শেষ থাকবে না। তবে সবাই জানেন– মেটিয়াবুরুজ এলাকা অনেক বড়। এখানে পানীয় জলের একটা সমস্যা দেখা যাচ্ছে। বাড়ি বাড়ি ঘুরতে গিয়ে পানীয় জলের সমস্যার কথা বলছেন মানুষজন। সেটা যেমন সমাধানের চেষ্টা করব– তেমনি জঞ্জাল সাফাই করা– রাস্তার হাল ফেরানোর উপর জোর দিতে চাই। যানজট বড় সমস্যা– তার সমাধানের জন্যেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আওয়াজ তুলব।
পুবের কলম ভোটার ও কর্মীদের কী বার্তা দেবেন?
সেখ মুস্তাক আহমেদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক হিসাবে ময়দানে নেমেছি। সবাইকে নিয়েই চলতে চাই। সব মানুষকে সমান গুরুত্ব দিয়েই কাজ করব– তাই সাবাইকে বলব, একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে।
পুবের কলম জেতার বিষয়ে কতটা আত্মবিশ্বাসী?
সেখ মুস্তাক আহমেদ আমি খুবই আশাবাদী। বিরোধী নেই বললেই চলে। সবচেয়ে বড় কথা আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থী। তাই মানুষ আমাকে ভোট দেবেন– সবার আশীর্বাদে কাউন্সিলর হব।