১৩ জুলাই ২০২৫, রবিবার, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তাররা গ্রামে না গেলে বন্ধ হবে বেতন, বিজ্ঞপ্তি জারি নবান্নের

পুবের কলম
  • আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার
  • / 60

পুবের কলম প্রতিবেদক: তিন বছর সময়সীমার চুক্তিভিত্তিক চাকরির মধ্যে গ্রামে গিয়ে পরিষেবা দিতে বাধ্য থাকেন রাজ্যের সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তাররা। কিন্তু অনেক সময়ই সেই কাজে ফাঁকি দেন তাঁরা। কেউ গ্রামে গিয়ে পরিষেবা না দিয়ে চুপচাপ তিন বছর কাটিয়ে দেন। কেউ আবার ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে এই গ্রামে যাওয়াটা এড়িয়ে যান। এবার সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের গ্রামে গিয়ে পরিষেবা দেওয়া এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা আটকাতে কড়া অবস্থান নিল রাজ্য সরকার। সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সব মেডিক্যাল কলেজের অ্যাকাউন্ট অফিসারদের রাজ্য সরকার জানিয়ে দিল, জেলা- মহকুমা-স্টেট জেনারেল বা গ্রামীণ হাসপাতালের নির্দেশিত সময়ে ‘বন্ড সার্ভিস’-এর চিকিৎসকরা না গেলে তাদের ভাতা দেওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। অর্থাৎ চুক্তিভিত্তিক চাকরির তিন বছরের মধ্যে সিনিয়র রেসিডেন্টরা মাসে যে ৬৫ থেকে ৭৫ হাজার টাকা করে ভাতা পান তা বন্ধ করে হয়ে যাবে, যদি না তারা সরকারের নির্দেশ মেনে গ্রামে পরিষেবা দিতে যান। আর জি কর-কাণ্ডের পরে এটা সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের ওপর একটা কঠোর পদক্ষেপ।
স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য জানাচ্ছে এই নিয়ম আগেও ছিল। তবে এবার জনস্বার্থে আরও বেশি কঠোর হতে হল রাজ্য সরকারকে। বর্তমানে এমডি বা এমএস পাশের পরে স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে কর্মরত সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারের সংখ্যা প্রায় ১০০০-এরও বেশি। সিনিয়ার রেসিডেন্ট ডাক্তাররা জনস্বার্থে পরিষেবা না দিলে তাদের ভাতা বন্ধ করা যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত। এই বিষয়ে ওই সমস্ত নিয়ম ভাঙা সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তাররা যে-সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে পড়েছেন সেখানকার অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষের ওপরও দায় চাপাচ্ছে রাজ্য সরকার। স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নিয়ম না মানার সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের অবিলম্বে রিলিজ করে দিতে হবে। ২০২৫ সালের পয়লা জানুয়ারি এই সংক্রান্ত আর কোনও অজুহাত মানা হবে না। চুক্তিভিত্তিক চাকরির দ্বিতীয় বা তৃতীয় বর্ষে গ্রামে গিয়ে পরিষেবা দেওয়া নিয়ে কোনও সমঝোতা করা যাবে না। অবশ্য নিজেদের পারফরম্যান্স ভালো থাকলে কাউন্সেলিংয়ের সময় পছন্দের পোস্টিংয়ের সুযোগ মিলবে তাঁদের।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে সরকার নির্দেশিত হাসপাতালে না যাওয়ার জন্য কলকাতার বেশ কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ৩১ জন সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারকে প্রতি বছর ১০ লক্ষ টাকা হিসেবে ২০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। তখন তাঁরা অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষদের ওই ক্ষতিপূরণ মুকুবের জন্য অনুনয়-বিনয় করলে রাজ্য সরকার সেই টাকা মকুব করে। তবে এবার গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরও উন্নত ও জনকল্যাণকর করতে চুক্তিভিত্তিক সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের গ্রামে যাওয়া বাধ্যতামূলক করতে কড়া নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার।

Tag :

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তাররা গ্রামে না গেলে বন্ধ হবে বেতন, বিজ্ঞপ্তি জারি নবান্নের

আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: তিন বছর সময়সীমার চুক্তিভিত্তিক চাকরির মধ্যে গ্রামে গিয়ে পরিষেবা দিতে বাধ্য থাকেন রাজ্যের সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তাররা। কিন্তু অনেক সময়ই সেই কাজে ফাঁকি দেন তাঁরা। কেউ গ্রামে গিয়ে পরিষেবা না দিয়ে চুপচাপ তিন বছর কাটিয়ে দেন। কেউ আবার ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে এই গ্রামে যাওয়াটা এড়িয়ে যান। এবার সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের গ্রামে গিয়ে পরিষেবা দেওয়া এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা আটকাতে কড়া অবস্থান নিল রাজ্য সরকার। সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সব মেডিক্যাল কলেজের অ্যাকাউন্ট অফিসারদের রাজ্য সরকার জানিয়ে দিল, জেলা- মহকুমা-স্টেট জেনারেল বা গ্রামীণ হাসপাতালের নির্দেশিত সময়ে ‘বন্ড সার্ভিস’-এর চিকিৎসকরা না গেলে তাদের ভাতা দেওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। অর্থাৎ চুক্তিভিত্তিক চাকরির তিন বছরের মধ্যে সিনিয়র রেসিডেন্টরা মাসে যে ৬৫ থেকে ৭৫ হাজার টাকা করে ভাতা পান তা বন্ধ করে হয়ে যাবে, যদি না তারা সরকারের নির্দেশ মেনে গ্রামে পরিষেবা দিতে যান। আর জি কর-কাণ্ডের পরে এটা সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের ওপর একটা কঠোর পদক্ষেপ।
স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য জানাচ্ছে এই নিয়ম আগেও ছিল। তবে এবার জনস্বার্থে আরও বেশি কঠোর হতে হল রাজ্য সরকারকে। বর্তমানে এমডি বা এমএস পাশের পরে স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে কর্মরত সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারের সংখ্যা প্রায় ১০০০-এরও বেশি। সিনিয়ার রেসিডেন্ট ডাক্তাররা জনস্বার্থে পরিষেবা না দিলে তাদের ভাতা বন্ধ করা যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত। এই বিষয়ে ওই সমস্ত নিয়ম ভাঙা সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তাররা যে-সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে পড়েছেন সেখানকার অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষের ওপরও দায় চাপাচ্ছে রাজ্য সরকার। স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নিয়ম না মানার সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের অবিলম্বে রিলিজ করে দিতে হবে। ২০২৫ সালের পয়লা জানুয়ারি এই সংক্রান্ত আর কোনও অজুহাত মানা হবে না। চুক্তিভিত্তিক চাকরির দ্বিতীয় বা তৃতীয় বর্ষে গ্রামে গিয়ে পরিষেবা দেওয়া নিয়ে কোনও সমঝোতা করা যাবে না। অবশ্য নিজেদের পারফরম্যান্স ভালো থাকলে কাউন্সেলিংয়ের সময় পছন্দের পোস্টিংয়ের সুযোগ মিলবে তাঁদের।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে সরকার নির্দেশিত হাসপাতালে না যাওয়ার জন্য কলকাতার বেশ কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ৩১ জন সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারকে প্রতি বছর ১০ লক্ষ টাকা হিসেবে ২০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। তখন তাঁরা অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষদের ওই ক্ষতিপূরণ মুকুবের জন্য অনুনয়-বিনয় করলে রাজ্য সরকার সেই টাকা মকুব করে। তবে এবার গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরও উন্নত ও জনকল্যাণকর করতে চুক্তিভিত্তিক সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের গ্রামে যাওয়া বাধ্যতামূলক করতে কড়া নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার।