মস্কো: মারণরোগ ক্যানসারের ছোবলে আর অকালে মরতে হবে না। চিকিৎসা বিজ্ঞানে বড় জয় পেল রাশিয়া। মারণরোগ ক্যানসারের ভ্যাকসিন বানিয়ে অসাধ্য সাধন করল পুতিনের দেশ। এবার থেকে বিনামূল্যেই মিলবে ক্যানসারের ভ্যাকসিন। রুশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা একটি ক্যানসারের ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। যা তারা বিনামূল্যে নাগরিকদের দিতে পারবে। তবে এই ভ্যাকসিনটি কী ধরনের ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে, কতটা কার্যকর হবে, কীভাবে এটির প্রয়োগ হবে, সে-সম্বন্ধে এক্ষুনি কিছু বলতে নারাজ রাশিয়া। পাশাপাশি ভ্যাকসিনের নামও প্রকাশ করেনি তারা।
আন্তর্জাতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রেডিয়োলজি মেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের প্রধান আন্দ্রে কাপ্রিন জানিয়েছেন, তারা ২০২৫ সাল থেকেই ক্যানসারের ভ্যাকসিনের শটটি দেওয়া শুরু করবে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ভ্যাকসিনটি দেওয়া হবে শুধুমাত্র ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসার জন্য। যাদের টিউমার সংক্রান্ত কোনও রোগ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিনটি কোনও কাজে আসবে না। রাশিয়ান বিজ্ঞানীদের মতে, এই ভ্যাকসিনের প্রতিটি শট পৃথক রোগীর জন্য তৈরি করা হবে। যা হবে পশ্চিমা দেশগুলিতে তৈরি হওয়া ক্যানসার ভ্যাকসিনগুলির অনুরূপ।
Read More: ইসরাইল ধ্বংস হবে: খামেনি
বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি রাশিয়াতেও ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আর এই মারণরোগের ওষুধপত্র, টিকাগুলির অত্যধিক দাম হওয়ার কারণে অনেকেরই এগুলি কেনার সামর্থ্য নেই। তাই বিনা চিকিৎসায় মরতে হয়। তাই এবার চিকিৎসা বিজ্ঞানে রীতিমতো বিপ্লব ঘটাল রাশিয়া। এবার এমন ক্যানসারের ভ্যাকসিন তৈরি করল, যা কি না বিনামূল্যেই পাওয়া যাবে। ২০২২ সালে রাশিয়ায় ক্যানসার রোগীর সংখ্যা ছিল ৬,৩৫,০০০-এরও বেশি। যাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই কোলন, স্তন এবং ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগেছে। যদিও বেশ কিছুদিন আগেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছিলেন, তার দেশের বিজ্ঞানীরা ক্যানসারের ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছেন। এটি তৈরি করতে তারা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
নতুন প্রজন্মের ইমিউনোমোডুলেটরি ওষুধ তৈরির খুব কাছাকাছি রয়েছেন তারা। তবে রাশিয়ার পাশাপাশি একাধিক দেশও তাদের নিজস্ব ক্যানসার ভ্যাকসিন তৈরি করতে কাজ করেছে। এর আগে মে মাসে, ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা চারজন রোগীর উপর একটি পৃথক ভ্যাকসিন পরীক্ষা করেছিলেন। এ ছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, বর্তমানে ছ’টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ভ্যাকসিন রয়েছে। যেমন, হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি), জরায়ুর ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়াও ক্যানসার মহামারি চলাকালীন, রাশিয়া কোভিড-১৯’এর জন্য নিজস্ব স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন তৈরি করেছিল। যা কয়েকটি দেশে বিক্রিও হয়েছিল।