পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: একের পর এক অভিনেত্রীর মৃত্যুর ঘটনা বর্তমান সময়ে সব মহলেই জোর চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফের এক ওড়িয়া অভিনেত্রীর মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। মৃতার নাম রশ্মিরেখা ওঝা(২৩)। তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে একটি ভাড়া বাড়ি থেকে। সেখানে রশ্মিরেখা তার এক পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় থাকতেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে রশ্মিরেখা যে স্বামী-স্ত্রী’র পরিচয় দিয়ে থাকতেন সে ব্যাপারে সমস্তটাই অজানা বলে দাবি তার বাবার।
ওড়িয়া টেলিভিশনের অভিনেত্রী হিসাবে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন জগৎসিংহপুরের বাসিন্দা রশ্মিরেখা। ‘কেমিটি কাহিবি কহা’ নামে একটি জনপ্রিয় ধারাবাহিকে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। সেখানে লেখা আছে ‘আমি খারাপ মেয়ে’। গোটা ঘটনায় মেয়ের মৃত্যুর জন্য তার লিভ ইন পার্টনার সন্তোষ পাত্রকে দায়ী করেছেন তার বাবা।
পুলিশ সূত্রে খবর, ভুবনেশ্বরের নয়াপল্লি এলাকায় একটি ভাড়াবাড়িতে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে বসবাস করছিলেন রশ্মিরেখা ওঝা এবং তাঁর পুরুষসঙ্গী সন্তোষ পাত্র। মেয়েকে বার বার ফোন করেও কোনও উত্তর পাননি তার বাবা। পরে মেয়ে রশ্মিরেখার দেহ উদ্ধারের খবর পান তিনি। গত ১৮ জুন, শনিবার রাতে ভুবনেশ্বরের নয়াপল্লি এলাকায় ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যু হয়েছে ২৩ বছরের অভিনেত্রী রশ্মিরেখা ওঝার। নয়াপল্লির ভাড়াবাড়িতে একটি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় রশ্মিরেখার দেহ পাওয়া যায়। ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোটও মিলেছে। তাতে লেখা, ‘তোমাকে মিস্ করছি বাবা। ওপর থেকেও তোমাকে মিস্ করব।’ সঙ্গে আরও লেখা, ‘আমি খুব খারাপ মেয়ে!’
এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে ভুবনেশ্বর পুলিশ। পুলিশের এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলেই মনে করা হচ্ছে। মৃতার পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।
মৃতার বাবার বয়ান অনুযায়ী, সন্তোষই মেয়ের মৃত্যুর খবর জানায়। যে বাড়িতে তারা থাকত সেই বাড়ির মালিকের থেকে জানতে পারি, সন্তোষ ও রশ্মিরেখা দুজনেই স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে সেখানে থাকত। তবে এই ব্যাপারে আমাদের কিছু জানা ছিল না।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন ধরেই রুপোলী জগতে একের পর আত্মহত্যার ঘটনা খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। পল্লবী দে নামে টলিপাড়ার এক তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পল্লবী সাগ্নিক চক্রবর্তীর নামে এক যুবকের সঙ্গে লিভ-ইন-এ থাকতেন। এর পরেই বিদিশা দে মজুমদার নামে মডেল, অভিনেত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। এর পরেই ফের কলকাতার পাটুলির বাড়ি থেকে মঞ্জুষাও নিয়োগী নামে আরও এক মডেল অভিনেত্রীর দেহ উদ্ধার হয়।
এক মনোবিদের কথায়, সম্প্রতি মানুষ স্রোতের সঙ্গে গা ভাসিয়ে দিয়ে চলেছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নিজেকে শো-অফ করা। অল্প বয়স থেকে হাতে প্রচুর টাকা। ফলে কোনও সময় সেই রোজগার বন্ধ হয়ে গেলে সে দিশেহারা হয়ে পড়ছে। নেমে আসছে অবসাদ। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লিভ-ইন-এর মতো সম্পর্ক। ২০ থেকে ২৫ বছরে বয়সের মধ্যে এই সম্পর্কে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। অনেক আশা নিয়ে সেই সম্পর্ক শুরু হয়। পরে খুব ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝিতে সম্পর্কে ভেঙে যাচ্ছে। কাউকে কৈফিয়ত দেওয়ার ব্যাপার এই সম্পর্কে থাকে না। ফলে মানুষ খুব সহজেই দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যেতে পারছে। এই ধরনের সম্পর্কে অনেক সময় কোথাও একটা হীনমন্যতা, অপরাধ বোধ কাজ করছে