পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে বসবাস করেন রাজবংশী জনজাতি। নাচ-গান- লোকাচার এসবের মধ্যে লুকিয়ে আছে তাঁদের নিজস্ব সংস্কৃতির নানান উপকরণ ও প্রাচুর্য। সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরেই তাঁদের জীবনযাপন। উত্তরবঙ্গে রয়েছে প্রচুর নদ-নদী। আর নদীকে কেন্দ্র করে রয়েছে রাজবংশীদের নানান লোকাচার। উত্তরবঙ্গের তরাই অঞ্চলের খড়িবাড়ি ওয়ারিশ জোত বস্তির রাজবংশীরা আজও ১০০ বছরের পুরনো পালা করে থাকেন। এই পালার অন্যতম উপকরণ রাজধারি মুখোশ নৃত্য বা লঙ্কা গান।
এটি রাজবংশীদের জনপ্রিয় একটি পালা। লঙ্কা গান আগে টানা সাত দিন ব্যাপী সারা রাত ধরে হত। এখন হয় চার দিনব্যাপী।
১৯২৫ সালে খড়িবাড়ির ওয়ারিশ জোত বস্তিতে চৌরঙ্গী ঠাকুর রাজধারী গান চালু করেন। মাটিগাড়া, শিলিগুড়ি, বিহারের ঠাকুরগঞ্জ, নেপালে রাজবংশীদের এই পালা গান খুব জনপ্রিয় ছিল। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নৃত্য নাটক সঙ্গীত ও দৃশ্যকলা আকাদেমির আয়োজনে ৯ থেকে ১২ মার্চ উত্তরবঙ্গের খড়িবাড়ি ওয়ারিশ জোত বস্তিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এই রাজধারী পালার একটি কর্মশালা। সহযোগিতায় পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্র, ভারত সরকার, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নৃত্য নাটক সঙ্গীত ও দৃশ্যকলা আকাদেমির সদস্য সচিব ডক্টর হৈমন্তী চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘রাজ্য আকাদেমি ৫৫ সাল থেকেই এই কাজগুলো করে আসছে। পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে নানান মানুষের নানান সাংস্কৃতিক উপকরণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। সেগুলোকে পুনরুজ্জীবিত ও একত্রিত করে এবং লিখিত ও ডিজিটাল মাধ্যমে ডকুমেন্টেশন করে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরাই আমাদের উদ্দেশ্য। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই সংরক্ষণের কাজ করে চলেছে রাজ্য আকাদেমি। আমরা আশা রাখি এই সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনের কাজ ও সংরক্ষণ ভবিষ্যত প্রজন্মকে পশ্চিমবঙ্গের অনেক অজানা সাংস্কৃতিক সম্পদের সন্ধান দেবে এবং ভবিষ্যত প্রজন্ম এই অমূল্য সাংস্কৃতিক সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও অনুসন্ধানে আগ্রহী হবেন’।