সিউল: দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্ষমতার রশি ধরে কোনোমতে ঝুলে থাকা প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইয়োলের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হল। এর আগে ১৪ ডিসেম্বর পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিশংসন প্রস্তাব পাস হয়। এরপর তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় সাংবিধানিক আদালতে। তা নিয়ে ১৬ ডিসেম্বর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত শনিবার সংসদ সদস্যরা ইয়ুনের অভিশংসন প্রস্তাব পাস করার পর তার বিরুদ্ধে এই বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ইয়ুনের বিরুদ্ধে সামরিক আইন(মার্শাল ল) জারির পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হয়, যা রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। তার পদক্ষেপের কারণে দেশে ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ শুরু হয় এবং জনগণ তার পদত্যাগ দাবি করে।
আদালত আগামী ছয় মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবে যে প্রেসিডেন্ট ইয়ুনকে চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে নাকি পুনর্বহাল করা হবে। এর মধ্যে, দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাসীন দল পিপলস পাওয়ার পার্টি (পিপিপি) এই অভিশংসনের প্রভাবে ব্যাপক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। দলের নেতা হান ডং-হুন সোমবার পদত্যাগ করেছেন, কারণ ইয়ুনের বিরুদ্ধে অভিশংসনের পর দলীয় বিভাজন এবং চাপ আরও বেড়ে গিয়েছে। আদালত ২৭ ডিসেম্বর প্রাথমিক শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে।
Read More: সিরিয়ার গোলান মালভূমিতে বসতি বাড়াচ্ছে ইসরাইল
এদিকে ইয়ুন তার সামরিক আইন ( মার্শাল ল)ঘোষণার সপক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়ে বলেছেন যে তিনি শেষ পর্যন্ত লড়াই করবেন। তবে তিনি রবিবার প্রসিকিউটরদের তলব উপেক্ষা করেছেন এবং আরও একবার ডাকার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যদি তিনি আদালতে না যান, পুলিশ তাকে গ্রেফতারের ব্যবস্থা করতে পারে। শনিবার সংসদের ১২ জন পিপিপি আইনপ্রণেতা অভিশংসন পক্ষে ভোট দেন, যার ফলে প্রস্তাবটি পাস হয়। যদিও দলের অনেকেই তার বিরুদ্ধে ভোট দেননি। অভিশংসনের পর, পিপিপির সুপ্রিম কাউন্সিলের পাঁচ সদস্য তাদের পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এই পদক্ষেপ কার্যত দলটির নেতৃত্ব ভেঙে দেয়।
উল্লেখ্য, এ মাসের শুরুর দিকে তিনি আকস্মিকভাবে সামরিক শাসন জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইয়োল। তাতে দেশ রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থার মধ্যে পড়ে। শুরুতে তিনি সামরিক শাসন জারি করার পর তীব্র বিরোধিতার মুখে ৬ ঘন্টা পর তা প্রত্যাহার করেন। তার বিরুদ্ধে ৭ ডিসেম্বর প্রথম দফা অভিশংসন প্রস্তাব আনা হয় পার্লামেন্টে। যদিও সেদিন তার ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টি (পিপিপি) ভোট শুরু হওয়ার অনেক আগে পার্লামেন্ট থেকে ওয়াকআউট করে। ফলে বিরোধীদের উদ্দেশ্য ভেস্তে যায়।