পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ আপাতত সারা বিশ্ব জুড়ে একটাই আলোচনা আফগানিস্তানে তালিবানি অভ্যুদয়। ২০০১ সালের প্রায় ২০ বছর পর আবারও আফগানিস্তানে শুরু হল তালিবান জামানা। কি করে ফের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার শীর্ষ অলিন্দে পৌঁছে গেল তালিবানরা। আসুন একটু দেখে নেওয়া যাক।
সোমবারের পরিস্থিতি বলছে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের কিছু দুর্গম এলাকায় স্থানীয় মিলিশিয়া ও সর অনুগত বাহিনী থাকলেও গোটা দেশের ক্ষমতার লাগাম এখন তালিবানদের হাতে।
৬ লক্ষ ৫২ হাজার ৮৬৪ বর্গ কিলোমিটারের আফগানিস্তান আয়তনের নিরিখে বিশ্বে ৪০ তম। সামরিক ইতিহাস বলছে, কোনও ক্ষমতায় না থাকা বাহিনীর পক্ষে এতটা কম সময়ে এমন সাফল্য নজিরবিহীন।
মনে করে দেখা যেতে পারে সোভিয়েত রাশিয়ার কথা। সেই ১৯৮৯ সালে আমুদরিয়া পেরিয়ে সোভিয়েত ফৌজ ফিরে যাওয়ার পরেও প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাজিবুল্লার সরকারের পতন ঘটাতে প্রায় তিন বিছর সময় লেগে গিয়েছিল আমেরিকার মদতে পুষ্ট মুজাহিদ বাহিনীর।
১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত লাগাতার আক্রমণ চালিয়েও এত বেশি জায়গার দখল নিতে পারেনি তালিবানরা।
কি ভাবে এল তালিবানদের এই সাফল্য? সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন নিখুঁত পরিকল্পনা আর অঙ্ক কষেই এই সাফল্য পেল তালিবানরা। গ্রামের ভিত্তি মজবুত করে তবেই শহরের দখল নেওয়া এই স্ট্রাটেজিকেই কাজে লাগিয়েছে তারা। চল্লিশের দশকে চিনের গৃহযুদ্ধের সময় কতকটা এমন কৌশলেই বাজিমাত করেছিলেন, চেয়ারম্যান মাওয়ের বাহিনী।
চলতি বছরের মে মাসের গোড়া থেকে মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ছাড়তে শুরু করেছিল। কিন্তু প্রথমেই বড় শহর বা প্রাদেশিক রাজধানীগুলি দখলের পথে হাঁটেনি হিবাতুল্লা আখুন্দজাদার বাহিনী। বরং আফগান সেনার সঙ্গে সঙ্ঘাত এড়িয়ে ধীরে ধীরে পাকিস্তান ও ইরান সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলিতে আধিপত্য বাড়াতে শুরু করে তারা।
সেই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট আশরফ গনির সরকারের দুর্বলতার সুযোগ প্রত্যন্ত এলাকাগুলির উপজাতি সর্দারদের দলে টানার কাজও শুরু করে। এমনকি, ‘যোগাযোগ’ তৈরি করে আফগান সেনার অফিসারদের একাংশের সঙ্গেও। এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।