৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৪ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট হোক, পরামর্শ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ১২ জুন ২০২৩, সোমবার
  • / 5

পারিজাত মোল্লা:  সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে দুটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলে। একটি মামলা দায়ের করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। দ্বিতীয় মামলাটি করেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

মনোনয়ন পেশের দিন থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন অংশ কলকাতা হাইকোর্টে তুলে ধরে বিরোধিতা করেছেন মামলাকারীরা। এদিন দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর পঞ্চায়েত ভোট আরও ৬ দিন পিছিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। সোমবার পঞ্চায়েত মামলার শুনানির সময় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়, -‘মনোনয়নের সময়সীমা একদিন বাড়ানো যেতে পারে।

সেক্ষেত্রে ১৫ জুন থেকে বাড়িয়ে ১৬ জুন হতে পারে। তাঁর চেয়ে বেশি সময় বাড়ানো সম্ভব নয়’।সেই সময়েই প্রধান বিচারপতি এজলাসে বলেন, মনোনয়নের দিন বাড়ালে ভোটের দিনও পিছোতে হবে। সেক্ষেত্রে ১৪ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচন করা হোক।গত শুক্রবারের শুনানির সময় মনোনয়ন পর্বের সময়সীমা বাড়ানো যায় কিনা? সে বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ভেবে দেখতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট।

 

সোমবারের শুনানিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানায়, -‘এই সময়সীমা একদিন বাড়ানো যেতে পারে’। কমিশনের পক্ষ থেকে এও বলা হয়, -‘অতীতেও সাত দিনের মনোনয়ন পর্বে নির্বাচন রয়েছে রাজ্যে। এবারই প্রথম নয়’।মনোনয়নের সময় একদিন পিছলেও কোনওভাবেই ভোটের দিন পিছতে রাজি নয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট করানোর বিষয়ে তারা বদ্ধপরিকর বলে আদালত কে জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।তবে কমিশন যে নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেছে তা একেবারে সন্তোষজনক নয় বলেই পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের প্রস্তাব, -‘ ২১ জুন পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হোক। ২৬ জুন মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন করা হোক। আর নির্বাচন হোক ১৪ জুলাই’। এই বিষয়ে কমিশনের মত জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর যায় কিনা? সেই বিষয়টিও আদালত উল্লেখ করেছে।

 

উল্লেখ্য, এই বিষয়ে সবটাই হাইকোর্টের প্রস্তাব এবং পর্যবেক্ষণ। আইনজীবীদের একাংশ জানাচ্ছেন, -‘ভোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার কেবলমাত্র নির্বাচন কমিশনেরই রয়েছে।এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে রিপোর্ট পেশ করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। প্রাথমিক প্রস্তাবে আদালত জানায়, ‘১৫ জুন মনোনয়ন পেশের দিন শুরু, ২১ জুন মনোনয়নের শেষ দিন, ২৩ জুন স্ক্রুটিনি এবং ২৬ জুন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন’, ১৪ জুলাই নির্বাচন করা হোক’। তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, -‘আদালত নির্দেশ দিলে ১৬ ই জুন পর্যন্ত মনোনয়ন পেশের সময়সীমা বাড়াতে প্রস্তুত কমিশন। আগের নির্বাচনে সাতদিন সময় দেওয়া হয়েছিল। একদিন বাড়ানো যেতে পারে’। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন , -‘ সাধারণ নির্বাচন কত সময় দেওয়া হয়? পার্লামেন্ট নির্বাচনে কত সময় দেওয়া হয়? যে দিনে বিজ্ঞপ্তি সেই দিনেই মনোনয়ন জমা শুরু কিভাবে হয়! মনোনয়ন জমা নেওয়ার জন্য সবাই কি প্রস্তুত ছিল? সবাই যাতে সুযোগ পান তেমন সময়সূচি করা দরকার। আপনারা ভেবে দেখুন’।’

শুক্রবারই বিজ্ঞপ্তি জারি হল, আবার শুক্রবারই মনোনয়ন গ্রহণ শুরু হল। এতে তো প্রশাসনও প্রস্তুতির পর্যাপ্ত সময় পাবে না’। এই মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানান, -‘ একদিন সময় বাড়ানো যেতে পারে কারণ নিয়ম সেটা করার অনুমতি দিচ্ছে’। ‘পঞ্চায়েত স্বাধীন প্রার্থীদের জন্য সবথেকে শক্তিশালী জায়গা। তারা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও যুক্ত হতে চান না। প্রার্থীদের সম্পত্তির খতিয়ান, কোনও ফৌজদারি মামলা আছে কিনা সেটা জানাতেও তো প্রার্থীদের সময় লাগবে। মনোনয়ন জমা চলুক, সময় বাড়ান এবং নিয়ম মতো যে ভাবে নির্বাচন নির্ঘন্ট করা দরকার সেইমত করুন’, এই পরামর্শ বেঞ্চের। বিডিও এসডিও তাদের প্রস্তুত করাটা খুব দরকার। রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে , -‘সবাই প্রস্তুত। সিসিটিভি, ভিডিওগ্রাফি করতেও প্রস্তুত’।এখন দেখার আদালতের পরামর্শ মেনে নেয় কিনা রাজ্য নির্বাচন কমিশন?

 

 

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

১৪ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট হোক, পরামর্শ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের

আপডেট : ১২ জুন ২০২৩, সোমবার

পারিজাত মোল্লা:  সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে দুটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলে। একটি মামলা দায়ের করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। দ্বিতীয় মামলাটি করেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

মনোনয়ন পেশের দিন থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন অংশ কলকাতা হাইকোর্টে তুলে ধরে বিরোধিতা করেছেন মামলাকারীরা। এদিন দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর পঞ্চায়েত ভোট আরও ৬ দিন পিছিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। সোমবার পঞ্চায়েত মামলার শুনানির সময় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়, -‘মনোনয়নের সময়সীমা একদিন বাড়ানো যেতে পারে।

সেক্ষেত্রে ১৫ জুন থেকে বাড়িয়ে ১৬ জুন হতে পারে। তাঁর চেয়ে বেশি সময় বাড়ানো সম্ভব নয়’।সেই সময়েই প্রধান বিচারপতি এজলাসে বলেন, মনোনয়নের দিন বাড়ালে ভোটের দিনও পিছোতে হবে। সেক্ষেত্রে ১৪ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচন করা হোক।গত শুক্রবারের শুনানির সময় মনোনয়ন পর্বের সময়সীমা বাড়ানো যায় কিনা? সে বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ভেবে দেখতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট।

 

সোমবারের শুনানিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানায়, -‘এই সময়সীমা একদিন বাড়ানো যেতে পারে’। কমিশনের পক্ষ থেকে এও বলা হয়, -‘অতীতেও সাত দিনের মনোনয়ন পর্বে নির্বাচন রয়েছে রাজ্যে। এবারই প্রথম নয়’।মনোনয়নের সময় একদিন পিছলেও কোনওভাবেই ভোটের দিন পিছতে রাজি নয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট করানোর বিষয়ে তারা বদ্ধপরিকর বলে আদালত কে জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।তবে কমিশন যে নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেছে তা একেবারে সন্তোষজনক নয় বলেই পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের প্রস্তাব, -‘ ২১ জুন পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হোক। ২৬ জুন মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন করা হোক। আর নির্বাচন হোক ১৪ জুলাই’। এই বিষয়ে কমিশনের মত জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর যায় কিনা? সেই বিষয়টিও আদালত উল্লেখ করেছে।

 

উল্লেখ্য, এই বিষয়ে সবটাই হাইকোর্টের প্রস্তাব এবং পর্যবেক্ষণ। আইনজীবীদের একাংশ জানাচ্ছেন, -‘ভোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার কেবলমাত্র নির্বাচন কমিশনেরই রয়েছে।এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে রিপোর্ট পেশ করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। প্রাথমিক প্রস্তাবে আদালত জানায়, ‘১৫ জুন মনোনয়ন পেশের দিন শুরু, ২১ জুন মনোনয়নের শেষ দিন, ২৩ জুন স্ক্রুটিনি এবং ২৬ জুন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন’, ১৪ জুলাই নির্বাচন করা হোক’। তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, -‘আদালত নির্দেশ দিলে ১৬ ই জুন পর্যন্ত মনোনয়ন পেশের সময়সীমা বাড়াতে প্রস্তুত কমিশন। আগের নির্বাচনে সাতদিন সময় দেওয়া হয়েছিল। একদিন বাড়ানো যেতে পারে’। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন , -‘ সাধারণ নির্বাচন কত সময় দেওয়া হয়? পার্লামেন্ট নির্বাচনে কত সময় দেওয়া হয়? যে দিনে বিজ্ঞপ্তি সেই দিনেই মনোনয়ন জমা শুরু কিভাবে হয়! মনোনয়ন জমা নেওয়ার জন্য সবাই কি প্রস্তুত ছিল? সবাই যাতে সুযোগ পান তেমন সময়সূচি করা দরকার। আপনারা ভেবে দেখুন’।’

শুক্রবারই বিজ্ঞপ্তি জারি হল, আবার শুক্রবারই মনোনয়ন গ্রহণ শুরু হল। এতে তো প্রশাসনও প্রস্তুতির পর্যাপ্ত সময় পাবে না’। এই মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানান, -‘ একদিন সময় বাড়ানো যেতে পারে কারণ নিয়ম সেটা করার অনুমতি দিচ্ছে’। ‘পঞ্চায়েত স্বাধীন প্রার্থীদের জন্য সবথেকে শক্তিশালী জায়গা। তারা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও যুক্ত হতে চান না। প্রার্থীদের সম্পত্তির খতিয়ান, কোনও ফৌজদারি মামলা আছে কিনা সেটা জানাতেও তো প্রার্থীদের সময় লাগবে। মনোনয়ন জমা চলুক, সময় বাড়ান এবং নিয়ম মতো যে ভাবে নির্বাচন নির্ঘন্ট করা দরকার সেইমত করুন’, এই পরামর্শ বেঞ্চের। বিডিও এসডিও তাদের প্রস্তুত করাটা খুব দরকার। রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে , -‘সবাই প্রস্তুত। সিসিটিভি, ভিডিওগ্রাফি করতেও প্রস্তুত’।এখন দেখার আদালতের পরামর্শ মেনে নেয় কিনা রাজ্য নির্বাচন কমিশন?