৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মায়ানমারে উদ্ধারকার্যে অপারেশন ‘ব্রহ্মা’

চামেলি দাস
  • আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৫, রবিবার
  • / 46

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: শুক্রবারের জোরালো ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গেছে মায়ানমার। ভূমিকম্পে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৭। ভূমিকম্পের পর প্রায় ১৪-১৫টা আফটারশকে আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মায়ানমার। ভূমিকম্পের প্রভাব পড়ে সুদূর থাইল্যান্ডে। নির্মীয়মাণ বহুতল বাড়ি মুহূর্তের মধ্যে ধুলিসাতে হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী দুঃখপ্রকাশ করে পড়শি দেশের পাশে থাকার বার্তা দেন। সেই মতো শনিবার মায়ানমারের উদ্দেশে পাড়ি দেয় ত্রাণসামগ্রী। অপারেশন ‘ব্রক্ষা’-র মাধ্যমে প্রায় ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী, জাহাজ ও বিমানে করে ইয়াঙ্গুনে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধারকর্মী, একটি কুকুরের দল এবং ডাক্তার ও সহয়তাকর্মী নিয়ে একটি সজ্জিত জাহাজ মায়ানমারের উদ্দেশে রওনা হয়। আরও ত্রাণ সমাগ্রী পাঠানো হয়েছে। ২০০৪ সালের সুনামির সময় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং কর্তৃক নির্ধারিত নীতি অনুসারে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: অনলাইনে বাতিল করা যাবে কাউন্টারে কাটা সংরক্ষিত টিকিট, স্বস্তির খবর যাত্রীদের

ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং-এর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে জানান, “বিধ্বংসী ভূমিকম্পে প্রাণহানির জন্য গভীর সমবেদনা জানাই। ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং প্রতিবেশী দেশ হিসাবে, ভারত এই কঠিন সময়ে মায়ানমারের জনগণের পাশে রয়েছে। অপারেশন ‘ব্রহ্মা’র অংশ হিসাবে ত্রাণ সামগ্রী, মানবিক সহায়তা, অনুসন্ধান ও উদ্ধার দলগুলিকে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পাঠানো হচ্ছে”।

রাত ২টোয় বিশাখাপত্তনম থেকে আইএনএস সাবিত্রী ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে রওনা দেয়। তার এক ঘন্টা পরে, ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিমান দিল্লির কাছে হিন্ডন বিমানঘাঁটি থেকে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে যাত্রা  করে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, “ত্রাণসামগ্রী ইতিমধ্যেই ইয়াঙ্গুনে পৌঁছে গেছে এবং সামগ্রীগুলি মায়ানমার সরকারের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।” বিদ্রোহ-অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে ভারত সহায়তা দেবে কিনা জানতে চাইলে জয়সওয়াল বলেন,  “মায়ানমার সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে অপারেশন ব্রহ্মা পরিচালিত হবে।” জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর অনুসন্ধান ও উদ্ধার কর্মী, সরঞ্জাম এবং একটি কুকুরের দল নিয়ে দ্বিতীয় বিমানটি শনিবার সন্ধ্যায় মায়ানমারে পৌঁছেছে।

বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, রবিবার এনডিআরএফের দল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা মান্দালয়ে যাবে। সেখানে প্রথম উদ্ধারকারী দল হিসাবে পৌঁছবে।এর আগে, মায়ানমারে অবস্থিত চীনা দূতাবাস ঘোষণা করেছিল যে, চিনের ইউনান প্রদেশ থেকে ৩৭ সদস্যের একটি উদ্ধার ও চিকিৎসা দল ইয়াঙ্গুনে পৌঁছেছে।  ভারতের সাহায্যের তৃতীয় ধাপে রয়েছে একটি ফিল্ড হাসপাতাল,  যেখানে ১১৮ জন চিকিৎসকের একটি দল রয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় আগ্রা থেকে নেপিদোর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। এই দলে ২০২৩ সালের তুরস্কের ভূমিকম্পের সময় ভারতের ত্রাণ ও উদ্ধারকারী এবং অপারেশন ‘দোস্ত’-এপ অংশগ্রহণকারী কর্মীরা রয়েছেন। আইএনএস সাবিত্রী ছাড়াও, আইএনএস সাতপুরাও শনিবার বিশাখাপত্তনম থেকে ইয়াঙ্গুনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। মায়ানমারের দুর্যোগ কবলিত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে আরও দু’টি নৌ জাহাজ পোর্ট ব্লেয়ারে প্রস্তুত রয়েছে।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মায়ানমারে উদ্ধারকার্যে অপারেশন ‘ব্রহ্মা’

আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৫, রবিবার

পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: শুক্রবারের জোরালো ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গেছে মায়ানমার। ভূমিকম্পে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৭। ভূমিকম্পের পর প্রায় ১৪-১৫টা আফটারশকে আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মায়ানমার। ভূমিকম্পের প্রভাব পড়ে সুদূর থাইল্যান্ডে। নির্মীয়মাণ বহুতল বাড়ি মুহূর্তের মধ্যে ধুলিসাতে হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী দুঃখপ্রকাশ করে পড়শি দেশের পাশে থাকার বার্তা দেন। সেই মতো শনিবার মায়ানমারের উদ্দেশে পাড়ি দেয় ত্রাণসামগ্রী। অপারেশন ‘ব্রক্ষা’-র মাধ্যমে প্রায় ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী, জাহাজ ও বিমানে করে ইয়াঙ্গুনে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধারকর্মী, একটি কুকুরের দল এবং ডাক্তার ও সহয়তাকর্মী নিয়ে একটি সজ্জিত জাহাজ মায়ানমারের উদ্দেশে রওনা হয়। আরও ত্রাণ সমাগ্রী পাঠানো হয়েছে। ২০০৪ সালের সুনামির সময় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং কর্তৃক নির্ধারিত নীতি অনুসারে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: অনলাইনে বাতিল করা যাবে কাউন্টারে কাটা সংরক্ষিত টিকিট, স্বস্তির খবর যাত্রীদের

ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং-এর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে জানান, “বিধ্বংসী ভূমিকম্পে প্রাণহানির জন্য গভীর সমবেদনা জানাই। ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং প্রতিবেশী দেশ হিসাবে, ভারত এই কঠিন সময়ে মায়ানমারের জনগণের পাশে রয়েছে। অপারেশন ‘ব্রহ্মা’র অংশ হিসাবে ত্রাণ সামগ্রী, মানবিক সহায়তা, অনুসন্ধান ও উদ্ধার দলগুলিকে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পাঠানো হচ্ছে”।

রাত ২টোয় বিশাখাপত্তনম থেকে আইএনএস সাবিত্রী ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে রওনা দেয়। তার এক ঘন্টা পরে, ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিমান দিল্লির কাছে হিন্ডন বিমানঘাঁটি থেকে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে যাত্রা  করে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, “ত্রাণসামগ্রী ইতিমধ্যেই ইয়াঙ্গুনে পৌঁছে গেছে এবং সামগ্রীগুলি মায়ানমার সরকারের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।” বিদ্রোহ-অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে ভারত সহায়তা দেবে কিনা জানতে চাইলে জয়সওয়াল বলেন,  “মায়ানমার সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে অপারেশন ব্রহ্মা পরিচালিত হবে।” জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর অনুসন্ধান ও উদ্ধার কর্মী, সরঞ্জাম এবং একটি কুকুরের দল নিয়ে দ্বিতীয় বিমানটি শনিবার সন্ধ্যায় মায়ানমারে পৌঁছেছে।

বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, রবিবার এনডিআরএফের দল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা মান্দালয়ে যাবে। সেখানে প্রথম উদ্ধারকারী দল হিসাবে পৌঁছবে।এর আগে, মায়ানমারে অবস্থিত চীনা দূতাবাস ঘোষণা করেছিল যে, চিনের ইউনান প্রদেশ থেকে ৩৭ সদস্যের একটি উদ্ধার ও চিকিৎসা দল ইয়াঙ্গুনে পৌঁছেছে।  ভারতের সাহায্যের তৃতীয় ধাপে রয়েছে একটি ফিল্ড হাসপাতাল,  যেখানে ১১৮ জন চিকিৎসকের একটি দল রয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় আগ্রা থেকে নেপিদোর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। এই দলে ২০২৩ সালের তুরস্কের ভূমিকম্পের সময় ভারতের ত্রাণ ও উদ্ধারকারী এবং অপারেশন ‘দোস্ত’-এপ অংশগ্রহণকারী কর্মীরা রয়েছেন। আইএনএস সাবিত্রী ছাড়াও, আইএনএস সাতপুরাও শনিবার বিশাখাপত্তনম থেকে ইয়াঙ্গুনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। মায়ানমারের দুর্যোগ কবলিত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে আরও দু’টি নৌ জাহাজ পোর্ট ব্লেয়ারে প্রস্তুত রয়েছে।