মস্কো: দিনকয়েক আগেই উত্তর কোরিয়ার সামরিক মহড়া দেখে চোখ কপালে তুলেছিল ন্যাটো, আমেরিকা, ইউরোপ। সেই দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সামরিক সহযোগিতার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে, দেশটি রাশিয়ার সঙ্গে একটি নতুন মিউচুয়াল ডিফেন্স বা পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুমোদন করেছে। এই চুক্তি এমন এক সময়ে স্বাক্ষরিত হল যখন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে প্রায় ১১,০০০ উত্তর কোরিয়ান সেনা মোতায়েনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি ব্রিকস গড়ে আমেরিকা বিরুদ্ধে বেশ কিছু দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছে রাশিয়া। ডলারের বিকল্প গড়ে তোলার চেষ্টা করছে পুতিন। তাকে এবার সামরিক সহযোগিতা দিচ্ছেন আমেরিকার শত্রু দেশ হিসেবে পরিচত উত্তর কোরিয়ার কিম।
গত ১৯ জুন পিয়ংইয়ংয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সফরকালে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী, যেকোনো এক দেশ শত্রুতার সম্মুখীন হলে অন্য দেশ অবিলম্বে সব ধরনের সামরিক সহায়তা প্রদান করবে। কিম জং উন চুক্তি অনুমোদন করে জানিয়েছেন, এটি রাশিয়ার সাথে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে। কিম জং এটিকে একপ্রকার জোট বলে আখ্যায়িত করেছেন। রাশিয়ার সংসদ এই চুক্তি ৬ নভেম্বর অনুমোদন করেছে। রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা সহযোগিতার অংশ হিসেবে উত্তর কোরিয়ার থেকে রাশিয়ায় অস্ত্র সরবরাহ ও সেনা মোতায়েনের খবর এসেছে। দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলেছে,অন্তত ১১,০০০ উত্তর কোরিয়ান সেনা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে, বিশেষত কুরস্ক অঞ্চলে। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এই অঞ্চলে রাশিয়া প্রায় ৫০,০০০ সৈন্য প্রস্তুত করেছে, যার মধ্যে উত্তর কোরিয়ান সৈন্যরাও রয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক মহলে যথেষ্ট উদ্বেগ বেড়েছে। বিশেষত ইউরোপের ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল জানিয়েছেন, যদি উত্তর কোরিয়া বিশেষ বাহিনী ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠায়, তবে দক্ষিণ কোরিয়া ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে।