Sun, September 29, 2024

ই-পেপার দেখুন
logo

হিন্দু-মুসলিমের যুক্ত সাধনাই ভারতের এগিয়ে যাওয়ার পথ: অমর্ত্য সেন


ইমামা খাতুন   প্রকাশিত:  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৭:০৬ পিএম

হিন্দু-মুসলিমের যুক্ত সাধনাই ভারতের এগিয়ে যাওয়ার পথ: অমর্ত্য সেন


পুবের কলম প্রতিবেদক: অধ্যাপক অমর্ত্য সেন মানেই দিশাভিত্তিক দিক নির্দেশনা, যা সমাজ ও রাষ্ট্রকে প্রকৃত অর্থেই সমৃদ্ধ করে। শনিবার এই অমর্ত্য সেনই উপস্থিত হয়েছিলেন মিউজিয়ামে রূপান্তরিত আলিপুর কারাগারে। সচেতন শ্রোতা-দর্শকে পরিপূর্ণ বক্তব্য রাখেন অমর্ত্য সেন। তার আগে সংক্ষিপ্ত অভিমত ব্যক্ত  করেন অমর্ত্য সেন কন্যা নন্দনা দেবসেন, কিউরেটর জয়ন্ত সেনগুপ্ত, মন্ত্রী ও মেয়র ফিরহাদ হাকিম।  
এই অনুষ্ঠানের একটি প্রধান দিক ছিল নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেন উদ্বোধন করেন নো ইয়োর নেবার-এর একটি নয়া উদ্যোগের। আর তাহল সাহিত্যের মাধ্যমে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়কে কাছে আনার প্রয়াস। 
অমর্ত্য সেন বলেন, এখন দেশে এক ধর্মের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু বৈচিত্রই হচ্ছে ভারতের বৈশিষ্ট। তিনি বাংলা সাহিত্যের চর্যাপদের উদাহরণ তুলে ধরেন। চর্যাপদের সৃষ্টিকর্তারাই ছিলেন বৌদ্ধ। বাংলায় এক সময় ক্ষমতায় ছিলেন বৌদ্ধরাই। মাঝখানে অল্প সময়ের জন্য সেন রাজারা এসেছিলেন। তারপর মুসলিম সুলতান ও নবাবদের যুগ আসে। 

তাঁরা রামায়ন ও মহাভারতকে বাংলায় অনুবাদ করিয়েছিলেন। বাংলা ভাষার প্রসারে এটা এক বড় অবদান। তিনি আরও বলেন, মিডিয়ার স্বাধীনতায় অনেক সময়ই খর্ব করা হয়। দেশ তখন সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজদের অধীনে। আর স্বাধীনতার আগে বাংলায় যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, তা বাংলা সংবাদপত্রে প্রকাশ করায় বাধা ছিল। কিন্তু স্টেটসম্যানের মতো ইংরেজি পত্রিকার উপর কোনও বিধি নিষেধ ছিল না। তা সত্ত্বেও তারা নিজেদের স্বার্থে দুর্ভিক্ষের খবর প্রকাশ করত না।

কিন্তু স্টেটসম্যানের এক সম্পাদকের বিষয়টি বিবেকে লাগে এবং তিনি পরে এ নিয়ে ‘মনসুন মর্নিং’ নামে একটি বইও লেখেন। রবীন্দ্রনাথের রাশিয়ার চিঠিরও ইংরেজি অনুবাদ ইংরেজরা প্রকাশ করতে দেয়নি। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর তা ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়। 
অমর্ত্য সেন হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও পুনরায় জোর দেন। অমর্ত্য সেন বলেন, তাঁর দাদামশাই  ক্ষিতিমোহন সেনের ‘ভারতের হিন্দু-মুসলিম যুক্ত সাধনা’ পুস্তকটি আজও সমান প্রাসঙ্গিক। তিনি আরও বলেন, একত্রে কাজ করলেই দেখা যাবে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠেছে। তিনি সঙ্গীতের ক্ষেত্রেও হিন্দু-মুসলিম যুক্ত সাধনার উল্লেখ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই সুস্থ সমাজ গড়ে উঠবে।