Fri, September 20, 2024

ই-পেপার দেখুন
logo

নিজভূমে পরবাসী: সুপ্রিম হস্তক্ষেপে ২০ বছর পর ‘ভারতীয়’ পরিচয় ফিরে পেলেন অসমের রহিম আলি


Kibria Ansary   প্রকাশিত:  ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৬:০২ পিএম

নিজভূমে পরবাসী: সুপ্রিম হস্তক্ষেপে ২০ বছর পর ‘ভারতীয়’ পরিচয় ফিরে পেলেন অসমের রহিম আলি

গুয়াহাটি, ১৪ জুলাই: নিজভূমে পরবাসী হয়েছিলেন অসমের রহিম আলি। ১২ বছর আগে তাঁকে ‘বিদেশি’ তকমা দিয়েছিল ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। এবার অসমের রহিম আলিকে ফের ‘ভারতীয়’ পরিচয় ফিরিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট!

২০০৪ সালের জুলাইয়ে অসমের নলবাড়ি থানার পুলিশ আচমকাই রহিম আলির বাড়ি গিয়ে জানান, তাঁকে বিদেশি বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। নিজেকে ভারতীয় প্রমাণের জন্য তথ্যপ্রমাণ পেশ করতে হবে তাঁকে। তিনি যে ভারতীয় নাগরিক সেই নথিপত্র দেখানোর জন্য সাত দিনের সময় চেয়েছিলেন রহিম। কিন্তু নথিপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। ফলে ২০০৬ সালে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিচার শুরু করে। তারপরই ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল জানিয়ে দেয়, বাংলাদেশ থেকে অসমে বেআইনি ভাবে অনুপ্রবেশ করেছেন রহিম। কারও নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠলে, উক্ত ব্যক্তি যে ‘বিদেশি’ নন, সেটা তাঁকেই প্রমাণ করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন রহিম।

এদিকে নিজভূমে পরবাসী হওয়ার পর ট্রাইব্যুনালের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অসমের রহিম। তাকে বিদেশী ঘোষণা করা অবৈধ ছিল বলে সুপ্রিম কোর্টের কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়ল অসম প্রশাসন এবং সেই রাজ্যের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। শীর্ষ কোর্টের জানায়, কোন তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে কাউকে ‘বিদেশি’ ভাবা হচ্ছে, সেটা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জানাতে বাধ্য ট্রাইব্যুনাল। যাতে তিনি সেই তথ্যপ্রমাণকে খণ্ডাতে পাল্টা নাগরিকত্বের প্রমাণ পেশ করতে পারেন। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি আহসানউদ্দিন আমানউল্লাহের বেঞ্চের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘এটা ন্যায়বিচারের চূড়ান্ত অবমাননা। ফরেনার্স অ্যাক্টের ৯ সেকশন ইচ্ছেমতো কোনও ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে, তাঁকে বিদেশি সন্দেহে জেরার অনুমতি দেয় না।’

রহিমের পেশ করা নথিতে বানান এবং তারিখের ভুলের যুক্তি দিয়ে তাকে বিদেশী ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল। সেই প্রসঙ্গ টেনে শীর্ষ কোর্টের বলেছে, ‘এই ত্রুটি নগণ্য। ১৯৬৬ সালের আগে থেকে রহিমের বাবা-মা যে ভারতের নাগরিক, সেই প্রমাণ তিনি দিয়েছেন। আর ভারতের ভোটার তালিকায় নামের ভুল তো নতুন নয়!’ এভাবেই শুধুমাত্র সন্দেহের বশে অনেককে বিদেশি বলে দেগে দেওয়া হয়েছে। এই রায় সেই মানুষগুলোকে আশার আলো দেখাবে বলেই মন্তব্য করেছেন মামলাকারীর আইনজীবী আমন ওয়াদুদ।