আবুল খায়ের প্রকাশিত: ০৩ অক্টোবর, ২০২৪, ০৬:৩১ পিএম
ওয়েব ডেস্ক, পুবের কলমঃ প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য। সংসার চালাতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে মধ্যবিত্তের। পিকনিক গার্ডেন এলাকার বাসিন্দা আসিফ রেজা আনসারী জানান, ৫০০টাকার বাজার ব্যাগের কোন কোণায় পড়ে রয়েছে, দেখা যাচ্ছে না। ক্রমবর্ধমান এই মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধে এবার আসরে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আনাজ শাক সবজি কিনতে গিয়ে কার্যত পকেট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে আমজনতার। বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কিলো দরে। চন্দ্রমুখী আলু ৪০/৪৫ টাকা কিলো। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কিলো দরে। আদার দাম প্রতি কিলো ২৫০ টাকা। রসুনের দাম কিলোয় ৩০০ টাকা ছুঁয়েছে। টম্যাটো বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা কিলো দরে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কিলো দরে। পটল প্রতি কিলো ৪০-৫০ টাকা দরে। ঢেঁড়শের দাম কিলো-প্রতি ৬০ টাকা ছাড়িয়েছে। কাঁচা পেঁপের দাম ৫০ টাকা কিলো।
আগুন বাজারের চড়া দামের সুযোগ নিয়ে কেউ যাতে কালোবাজারি করতে না পারে তার জন্যে প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মত বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে কোমর বেঁধে নামছে রাজ্য প্রশাসন। কেউ অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন কিনা, তার ওপরে নজর রাখতে রাজ্য কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি মাঠে নেমে বাজারে ঘুরে ঘুরে অভিযান চালাতে তিনি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এনফোর্সমেন্ট বিভাগকেও।
শুধু তাই নয়, সূত্রের দাবি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুব শীঘ্রই টাস্ক ফোর্সের বৈঠকও ডাকতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকদের অভিমত, বাজারে শাকসবজির থেকেও তাঁদের এখন সব থেকে বড় মাথা-ব্যাথা হয়ে দাঁড়িয়েছে আলু-পেঁয়াজের দাম। এ বার যেহেতু শুরুতে চাষিদের থেকে বেশি দামে আলু কিনতে হয়েছে, সে জন্যে গতবারের তুলনায় দাম একটু বেশি থাকবে। কিন্তু বাজারে অস্বাভাবিক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু পেঁয়াজ। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষকে কিছুটা সুরহা দিতে জেলা থেকে সরাসরি চাষিদের থেকে পেঁয়াজ কিনে এনে 'সুফল বাংলা'র স্টলে বিক্রি করছে সরকার। সুফল বাংলার স্টলে পেঁয়াজের দাম কিলো প্রতি ৪৫ টাকা। একইভাবে বাজারের থেকে কম দামে সুফল বাংলায় আলু এবং অন্যান্য শাক-সব্জিও বিক্রি করছে রাজ্য কৃষি বিপণন দফতর। জেলা থেকে কম দামে পেঁয়াজ সংগ্রহের জন্যে বর্ধমানের কালনা, পূর্বস্থলী এবং মুর্শিদাবাদের স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কৃষি বিপণন দফতরের চুক্তি হয়েছে। সপ্তাহে গড়ে চার টন করে পেঁয়াজ আনা হচ্ছে জেলা থেকে। চাহিদা বাড়লে এই পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের গঠিত টাস্ক ফোর্সের একও আধিকারিক প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, 'যে সব শাকসবজি এখানে উৎপাদিত হয় না সেগুলির জোগান কমলে অনেক সময়ে দাম বেড়ে যায়। কিন্তু আলুটা আমাদের রাজ্যেই উৎপাদিত হয়। তার দাম এতটা বাড়ার কথা নয়। এ ব্যাপারে আমরা কৃষি বিপণন দফতরের সচিবকে চিঠি দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীকেও সবটা জানাব।'