Fri, September 20, 2024

ই-পেপার দেখুন
logo

চারশো বছর আগে মুঘলদের তৈরি নিয়ম বদলাল বাংলাদেশ


ইমামা খাতুন   প্রকাশিত:  ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০২:২০ পিএম

চারশো বছর আগে মুঘলদের তৈরি নিয়ম বদলাল বাংলাদেশ


ঢাকা, ৪ জুলাই: বাংলা সাল অনুযায়ী ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের ৪৪০ বছরের পুরোনো মুঘল প্রথা  বাংলাদেশ থেকে বাতিল করা হয়েছে। চলতি মাস থেকে অর্থবছরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে অর্থাৎ পয়লা জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত কর আদায়ের প্রথা কার্যকর করা হয়েছে। এতদিন ভূমি কর আদায় করা হত পয়লা বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত। এই রীতি চালু হয়েছিল প্রায় ৪৪০ বছর আগে সুবে বাংলায়। তবে এখন থেকে সেটা খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে অর্থবছরের সাথে মিল রেখে আদায় করা হবে। 
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কৃষি ফসল ওঠার উপর নির্ভর করে মুঘল আমলে খাজনা  আদায় করা হত। সেই কৃষির ফলনের ঋতু পরিবর্তন হয়েছে। একইসাথে আর্থিক কাঠামোর সাথে সঙ্গতি রেখে হিসাব ব্যবস্থাপনা সহজ করার লক্ষ্যে অর্থবছর অনুযায়ী ভূমি কর আদায়ের উদ্দেশ্যেই শতশত বছরের পুরোনো এ রীতি পরিবর্তন করা হয়েছে। 
যুগের পর যুগ ধরে বাংলার গ্রামীণ সমাজ ও কৃষিখাতে নানা উপলক্ষে বাংলা সন ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ইতিহাসের বিভিন্ন বইতে দেখা যায়, মুঘল আমলে রাজস্ব আদায়ের প্রধান খাত ছিল কৃষি। তখন ফসল থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য সব কাজেই বাংলা সন ব্যবহার করা হত। 
মুঘল আমলে মূলত কৃষিভিত্তিক রাজস্ব আদায় করা হতো। সে সময় প্রধানত আমন ধান চাষ করা হতো। এর সাথে কলাই, মুসুরি, সরিষা এসব ফসল বেশি চাষ হতো। এসব ফসল মাঘ-ফাল্গুন মাসে জমি থেকে তোলার সময় হতো। তাই চৈত্র মাসকে ফসল ওঠার শেষ সময় ধরে মুঘল সম্রাট বা তার জমিদারেরা খাজনা আদায় করতো। কারণ ওই সময় ফসল উঠলে বিক্রি করে খাজনার টাকা দিতো কৃষকেরা। ফলে কেন এই পরিবর্তন আনা হয়েছে সেই যুক্তি তুলে ধরে বাংলাদেশ সরকার বলছে, মুঘল আমলের মতো কৃষির ফলনের সময় এখন নেই তা পরিবর্তন হয়েছে।

এখন আমাদের দেশে প্রধান হয়ে গেছে গ্রীষ্মকালীন ধান। আমনের থেকে ফলন এখন বোরোর বেশি। এই ধান জ্যৈষ্ঠ মাসের দিকেই উঠে যায়। এখন অর্থনীতি এমন হয়ে গেছে কৃষকদের বারো মাসই তরিতরকারি, সবজি, ফলমূল সবকিছু হচ্ছে। বারো মাসই ইনকাম থাকে। এখন সারা বছর কৃষকের ইনকাম যা আসে প্রয়োজন মিটিয়ে তারা খাজনা দিতে পারবে। বিশেষ করে জুন মাসে কর দিতে পারবে কারণ ধান উঠে যাচ্ছে মে মাসের মধ্যে। ফলে ধান উঠলে তারা খাজনা দিতে পারবে। ফলে সবকিছু মিলিয়ে আগের পরিস্থিত বদলে যাওয়ায় শতাধী প্রাচীন এই রীতি পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানান দেশটির ভূমি মন্ত্রী। এর ফলে দেশে বাংলা সন অনুযায়ী কর আদায়ের একমাত্র রীতিটির বিলোপ হয়েছে।