আবুল খায়ের প্রকাশিত: ০৭ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:৪১ এএম
পুবের কলম,ওয়েব ডেস্কঃ অবশেষে লাদাখ ভবনেই অনশন শুরু করলেন পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী সোনম ওয়াংচুক। কেন্দ্রশাসিত লাদাখে স্বায়ত্ত শাসনের দাবিতে যন্তরমন্তরে অনশনের বসার কথা থাকলেও দিল্লি পুলিশ ওয়াংচুকদের অনুমতি না দেওয়ায় রবিবার লাদাখ ভবনেই তারা এই আন্দোলনের সূচনা করেন।
এ দিন অনশন শুরু করার
আগে সংক্ষিপ্ত এক সাংবাদিক সম্মেলনে ওয়াংচুক বলেন, প্রতিবাদ জানানোর জন্য অন্য কোনও
স্থান না পেয়েই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ দিন লাদাখ ভবনের গেটের কাছে ওয়াংচুক-সহ
প্রায় ১৮জন প্রতিবাদীকে 'আমরা করবো জয়' গানের হিন্দি সংস্করণটি গাইতে শোনা যায়। পাশাপাশি,
'ভারত মাতা কি জয়ও', 'জয় লাদাখ', 'লাদাখ বাঁচান'-এর মতো স্লোগান তুলতে শোনা যায়।
যন্তর মন্তরে প্রতিবাদের
অনুমতি বাতিলের কথা জানিয়ে দিল্লি পুলিশের পাঠানো চিঠি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট
করেন ওয়াংচুক। সঙ্গে লেখেন, 'আরও একটি প্রত্যাখান, আর একটি হতাশা। প্রতিবাদ জানানোর
যে সরকারি স্থানের অনুমতি চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল, আজ সকালে তা প্রত্যাখান করে দিল্লি
পুলিশের পাঠানো চিঠি পেয়েছি।
সেই চিঠিতে দিল্লি পুলিশ
জানিয়েছে, খুব কম সময়ের নোটিশে প্রতিবাদের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। পাশাপাশি জমায়েতের জন্য নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমার
উল্লেখ নেই। পুলিশের মতে, যন্তর মন্তরে প্রতিবাদ প্রদর্শনের জন্য অন্তত দশ দিন আগে
আবেদন জানাতে হবে। সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে প্রতিবাদ প্রদর্শন সম্পূর্ণ করতে
হবে।
আমরণ অনশন শুরু করার
আগে শনিবার রাতে এক ভিডিও পোস্টে ওয়াংচুক জানান, দু' দিনের মধ্যে কোনও শীর্ষ নেতৃত্বের
সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় তাঁরা রাজঘাটের অনশন ভঙ্গ করেছিলেন। কিন্তু
সেই প্রতিশ্রুতি না রাখায় তাঁরা অনির্দিষ্ট কালের জন্য অনশন শুরু করতে চলেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯’র ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরকে ভেঙে দুই কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল করা
হয়। পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে
দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন চলছে লাদাখে। তিনি ভারতীয় সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে লাদাখকে তফসিলি এলাকার
মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে ২০১৯ সালের দিকে তৎকালীন কেন্দ্রীয় উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রী
অর্জুন মুন্ডাকে চিঠি দিয়েছিলেন। মুন্ডা প্রতিক্রিয়ায় জানান যে, তাঁর মন্ত্রক চিঠিটি পেয়েছে। সেটা
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে প্রস্তাব হিসেবে পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু, লাদাখের নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রের এই বিষয়ে পরবর্তী আলোচনা হয়নি। ওয়াংচুক
২০২৩ সালে এমনটাই অভিযোগ করেছিলেন। এবার সেই দাবি নিয়েই তিনি দিল্লি চলো ডাক দেন।
কেন্দ্রীয়
সরকারের সঙ্গে লাদাখের প্রশাসনে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবি নিয়ে আলোচনা করতে সেপ্টেম্বরে
লাদাখ থেকে দিল্লির পথে রওনা হয়েছিলেন সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা। আন্দোলনকারীদের দাবি, কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত প্রশাসন যে কায়দায় উন্নয়ন করছে তাতে স্থানীয়রা
বিপন্ন,
পরিবেশ বিপন্ন। ২ অক্টোবর মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর জন্মবার্ষিকীতে
দিল্লিতে অবস্থান করার কথা ছিল সুদূর লাদাখ থেকে আসা এই পদযাত্রীদের।