Sun, September 29, 2024

ই-পেপার দেখুন
logo

মোসাদের সদর দফতরে রকেট হামলা হিজবুল্লাহর


ইমামা খাতুন   প্রকাশিত:  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৭:২৫ এএম

মোসাদের সদর দফতরে রকেট হামলা হিজবুল্লাহর


বেইরুট, ২৫ সেপ্টেম্বর: একসঙ্গে গাজা ও লেবাননে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরাইলি হামলায় ৫৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদিকে, লেবাননে বিগত কয়েকদিনের ইসরাইলি হানায় নিহতের সংখ্যা ৬০০ পেরিয়েছে। লেবাননের দক্ষিণের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিতে এখন শুধুই গোলা-বারুদের গন্ধ। লেবাননের অসামরিক এলাকার বিভিন্ন স্থাপনাকে হিজবুল্লাহর ঘাঁটি দাবি করে বোমা ফেলছে ইসরাইল। প্রতিশোধ নিতে ইসারইলের অভ্যন্তরে পালটা ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট মারছে হিজবুল্লাহ। তবে এবার ইসরাইলের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দফতরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। এতে মোসাদের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর। হিজবুল্লাহ জানায়, লেবানন ও গাজার বিরুদ্ধে ইসরাইলের হামলাগুলোর মূল পরিকল্পনাকারী মোসাদ। হিজবুল্লাহ বলেছে, 'আমরা আজ বুধবার সকাল সাড়ে ছয় টায় তেল আবিবের শহরতলীতে অবস্থিত মোসাদের সদর দফতর লক্ষ করে একটি 'কাদের ১' ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছি। আমাদের কমাণ্ডারদের হত্যা এবং পেজার ও অন্যান্য ওয়্যারলেস ডিভাইসের বিস্ফোরণের জন্য মোসাদই দায়ী।’ সংগঠনটি আরও জানায়, গাজার মানুষের প্রতি সমর্থন ও লেবানন ও লেবানিজদের সুরক্ষায় এই হামলা চালানো হয়েছে। কয়েকদিন হল গাজার পরিবর্তে ইসরাইলের টার্গেটে পরিণত হয়েছে লেবানন। লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, সোমবার থেকে শুরু করে দেশটিতে অন্তত ৫৬০ জন নিহত হয়েছেন। তবে অন্যান্য সূত্রে নিহতের আসল সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে দাবি। আহত ২ হাজারেরও বেশি মানুষ। এদিকে জানা গিয়েছে, আকাশপথে ব্যাপক হামলার পর এবার লেবাননে ঢুকে হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইলের পদাতিক সেনা। এমনই জানিয়েছে ইসরাইলের একটি মিডিয়া। দাবি করা হয়, মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত। তার নির্দেশেই সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ দলকে লেবাননে প্রবেশের জন্য তৈরি রাখা হয়েছে। ইসরাইলের কেএএন সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ‘লেবাননে স্থলপথে সম্ভাব্য আক্রমণের জন্য তৈরি হচ্ছে ইসারইল। এখন প্রস্তুতি চলছে।’ তবে এ বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেনি ইসরাইল। 


হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরাইলের নতুন হামলাকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ইসরাইলকে থামাতে আরব বিশ্বের দেশগুলিকেও একজোট হতে দেখা যাচ্ছে না। তুরস্ক, কাতার, জর্ডান, ইরান ও ইরাকের মতো হাতে গোনা কয়েকটি দেশ ইসরাইলের সমালোচনা করেছে। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এ সংঘাতময় পরিস্থিতির বিষয়ে আলোচনা করেছে। তবে সেখান থেকে কোনও সমাধানসূত্রের আশা করা বৃথা। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘লেবানন বিপজ্জনক পরিস্থিতির দ্বারপ্রান্তে আছে। লেবাননের জনগণ, ইসরাইলের জনগণ এবং বিশ্বের জনগণ লেবাননকে আরেকটি গাজা হতে দিতে পারেন না।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাষ্ট্রসংঘে ইসরাইল-লেবানন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘পুরোদস্তুর যুদ্ধ কারও স্বার্থ হাসিল করবে না। এমনকি পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেলেও এখনও কূটনৈতিক সমাধান সম্ভব।’ তবে বাইডেনের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন লেবাননের বিদেশমন্ত্রী আবদাল্লাহ বো হাবিব। তিনি মনে করেন, বাইডেনের বক্তব্য ‘জোরালো ও আশাপ্রদ’ ছিল না। তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র দেশ, যারা সত্যিকার অর্থে মধ্যপ্রাচ্য ও লেবানন পরিস্থিতিতে পরিবর্তন আনতে পারে। কারণ, ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র। ইসরাইলকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহকারী দেশও যুক্তরাষ্ট্র। নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে লেবাননের বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘এ সংকট থেকে আমাদের উত্তরণে মূল ভূমিকা রাখতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।’