Sun, September 29, 2024

ই-পেপার দেখুন
logo

ইনসাফ করাই ছিল আল্লাহর রাসূলের পয়গাম: ইমরান


Bipasha Chakraborty   প্রকাশিত:  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৬:৫৯ এএম

ইনসাফ করাই ছিল আল্লাহর রাসূলের পয়গাম: ইমরান
সংখ্যালঘু বিত্ত নিগমের কার্যালয়ের ড. এপিজে আবদুল কালাম অডিটোরিয়ামে ঈদ-উন নবী অনুষ্ঠানে সম্মিলিত দোয়া। ছবি: খালিদুর রহিম

                         সল্টলেক-নিউটাউনে ‘হারমনি’-র উদ্যোগে নবী সা.-এর জীবনের উপর আলোচনা 


পুবের কলম প্রতিবেদক: নব্বই দশকে নতুন গড়ে ওঠা উপনগরী সল্টলেকে কিছু মুসলিম পরিবার যাদের মধ্যে সরকারি অফিসার ও অন্য চাকুরিজীবীরাই প্রধান বসবাস করতে শুরু করেন। তখন তাঁরা উপলব্ধি করেন যে, ইসলাম ও ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী নিজস্ব পরিচিতি-সহ ধর্মীয়, সামাজিক কাজ করার জন্য তাঁদের কোনও পরিকাঠামো নেই। কিন্তু দুই ঈদের নামায, রমযান মাসে রোজা ও ইফতার ও অন্য কিছু সাংস্কৃতিক -সামাজিক কার্যক্রমের জন্য ১৯৯২ সালে গড়ে তোলা হয় ‘সল্টলেক হারমনি অ্যাসোসিয়েশন’।

এ সম্পর্কে একজন পুরনো সদস্য বলেন, সংখ্যালঘু মুসলিমদের কার্যক্রমের মধ্যে সল্টলেকের অন্যান্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে হারমনি (সম্প্রীতি) ও ঐকতান গড়ে তোলাও ছিল আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য। তা এখনও রয়েছে। এই হারমনি অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন প্রসিদ্ধ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এম এ ওয়ালি।

এই হারমনির উদ্যোগে সল্টলেকের সদস্যরা একত্রে প্রথম ঈদ-উল-ফিতর, ঈদ-উল-আযহার নামায আদায় করেন। কখনও কখনও একত্রে ইফতারের আয়োজন করার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের সেতুবন্ধন তৈরি করেন।

এই সংস্থার উদ্যোগে রবিবার বিকেলে পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের কার্যালয়ে অবস্থিত ড. এ পি জে আবদুল কালাম অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হল ঈদ-এ মিলাদ-উন-নবী উপলক্ষ্যে এক আলোচনাচক্র। কুরআন তিলওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। 

‘সল্টলেক হারমনি অ্যাসোসিয়েশন’-এর বর্তমান সভাপতি, অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক জনাব সৈয়দ নাসিরুদ্দিন স্বাগত ভাষণ দেন। তিনি তাঁর ভাষণে বলেন, বর্তমান সময়ে সমগ্র পৃথিবী জুড়ে মানুষ শান্তির খোঁজ করছে। আর ইসলামের মধ্যেই আছে সেই শান্তির ঠিকানা। হারমনি প্রতিষ্ঠার ইতিহাস উল্লেখ করে, সংস্থাটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তিনি সংক্ষেপে বর্ণনা করেন। 

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি ও বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান, পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান। তিনি সহজ ভাষায় ইসলামের অন্তর্নিহিত নৈতিক সামাজিক মূল্যবোধের কথা তুলে ধরেন। তিনি তাঁর ভাষণে বলেন, বিচ্ছিন্নতা কাটিয়ে নিজেরা জামাতবদ্ধ থাকলে ঈমান জাগ্রত থাকে। সল্টলেক নিউটাউন এলাকার বাসিন্দারা যেভাবে ‘হারমনি’ গড়ে তুলেছেন, তিনি তার প্রশংসা করেন। পাশাপাশি তিনি ইসলামের শিক্ষা তুলে ধরে সোশ্যাল জাস্টিসের কথা বলেন। তিনি বলেন, কালো মানুষ, দলিত, মুসলিম যার উপরেই অত্যাচার হোক না কেন আমার তাদের ইনসাফের দাবি করব।

কুরআন এবং হযরত মুহাম্মদ সা.এর শিক্ষা এটাই। তিনি কুরআন ও নবী সা.-এর জীবনী বুঝে পড়া এবং তার চর্চা করার উপর জোর দেন। তিনি বলেন, বর্তমান মানব সভ্যতার ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইসলামের দ্বারা। ইমরান বলেন, অনেকেই প্রচার করে মুসলিম নারীদের স্বাধীনতা নেই। কিন্তু প্রথম ইসলাম কবুল করেছিলেন তিনি একজন মহিলা। হযরত মহম্মদ (সা.)-এর স্ত্রী খাদিজা রা.। ইতিহাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, গাজার মহিলারা দেখিয়ে দিচ্ছে ইসলামের জন্য কীভাবে প্রাণ দিতে হয়। শুধু তাই নয়, গাজার মহিলাদের লড়াইয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে আমেরিকায় মহিলারা অনেকেই ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা করছেন ও এই ধর্ম গ্রহণ করছেন। তিনি ইসলামের পারিবারিক মূল্যবোধের উপর জোর দেন।

এ ছাড়াও এ দিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আইএএস সাকিল আহমেদ, সল্টলেক নজরুল পার্কের ঈদের নামাযের ইমাম খুরশিদ আলম। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন সল্টলেক হারমনি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মীর গোলাম নবী। এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আইএএস জনাব নুরুল হক, অম্বর মসজিদের জুম্মার নামাযের ইমাম একরামুল হাসান। অনুষ্ঠানের শেষে দোয়া করা হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন ডা. সামিনা খান।