Sun, September 29, 2024

ই-পেপার দেখুন
logo

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নিলেন বাংলার কৃষি বিশেষজ্ঞ ড: গৌরাঙ্গ কর


Bipasha Chakraborty   প্রকাশিত:  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৫:৫২ এএম

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নিলেন বাংলার কৃষি বিশেষজ্ঞ ড: গৌরাঙ্গ কর

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,সুন্দরবন : এবারে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত  আন্তর্জাতিক সেমিনারে আমন্ত্রিত হয়ে বাংলার নাম উজ্জ্বল করলেন বিশিষ্ট কৃষি বিজ্ঞানী ড: গৌরাঙ্গ কর। বাংলা তথা দেশের পাট ও প্রাকৃতিক তন্তু চাষ সংক্রান্ত বিষয় তুলে ধরেন তিনি।


সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে আন্তর্জাতিক সেচ ও নিষ্কাশন কমিশন এবং ইরিগেশন অস্ট্রেলিয়ার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত নবম এশিয়া সম্মেলনে বাংলার বিশিষ্ট কৃষি গবেষক এবং ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদের অধীনস্থ কেন্দ্রীয় পাট ও  সমবর্গীয় তন্তু অনুসন্ধান সংস্থার নির্দেশক ড: গৌরাঙ্গ কর আমন্ত্রিত হয়ে পাট এবং অন্যান্য তন্তু ফসলের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি এবং তাদের বিবিধ ব্যবহারের বিষয়  তুলে ধরেন।


এই সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন নামী গবেষণা সংস্থা থেকে কম বেশি এক হাজারের অধিক বিজ্ঞানী অংশগ্রহণ করেছিল। তাঁরা জল ও পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রশমনও অভিযোজন ইত্যাদি বিষয়ের উপরে প্রযুক্তিগত দিক নিয়ে আলোচনা করেন, বাংলার কৃষি বিজ্ঞানী ড: গৌরাঙ্গ কর পরিবেশ সুরক্ষার, পাঠ সহ অন্যান্য প্রাকৃতিক তন্তু গুলির অবদান এবং তাঁর দীর্ঘস্থায়ী জলপ্রবন্ধন ব্যবস্থার পদ্ধতিগুলি সম্বন্ধে আলোকপাত করন। তাঁর আলোচনায় বিশ্বের বিজ্ঞানীগণ রাজ্য তথা দেশের পাট ও প্রাকৃতিক তন্তুর উপকারিতা সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে আগ্রহ প্রকাশ করেন।


ড: কর অস্ট্রেলিয়া ক্যানবেরায় সি এস আই আর ও সংস্থা পরিদর্শন করেন এবং সেখানকার বিজ্ঞানীদের সাথে আলোচনা করেন কিভাবে অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সি এস আই আর ও এবং ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদের অন্যতম সংস্থা কেন্দ্রীয় পার্ট ও সমবর্গীয় তন্তু অনুসন্ধান সংস্থার মধ্যে একটি যৌথ প্রকল্প গঠন করে পাট ও অন্যান্য তন্তু ফসল গুলির উপর গবেষণার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।


পাট পচানোর সময় জলের সমস্যা এবং পাট পৌঁছানোর পরে সেই জল কি ভাবে পুন:ব্যবহার করা যাবে,সে বিষয়ে ও ড: কর তাঁর বক্তব্য এ তুলে ধরেন।বর্তমানে পাট ও সমবর্গীয় তন্ত্গুলি থেকে বস্তা ও দড়ি বানানোর মতো গতানুগতিক ব্যবহার ছেড়ে তাদের মূল্য বৃদ্ধি  করে ভিন্নমুখী নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রাদি  হস্তশিল্পের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব বস্তু তৈরির কাজে কিভাবে উপযোগী করে আনা যায় সে ব্যাপারেও তিনি চর্চা করেন।


অন্যদিকে পরিবেশ দূষণ রোদে প্লাস্টিক সহ অন্যান্য সিন্থেটিক তন্তু দিয়ে তৈরি সামগ্রী বর্জন করার ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক সামগ্রী ব্যবহার করার বার্তা দেন। যার মধ্য দিয়ে গ্রামীণ মহিলাদের স্বনির্ভর করতে পারলে গ্রামীণ ভারতের অর্থনীতিতে নতুন দিশা দেখানো সম্ভব বলে তিনি দাবি করেন। ইতিমধ্যে তাঁর সংস্থায় স্কিল ডেভেলপমেন্ট এর জন্য পৃথক ইউনিট তৈরি করেছেন।


এ ছাড়া পাট ও কেনার থেকে জৈব ইথানল এবং পেপার পাল্প বানিয়ে এই প্রাকৃতিক তন্তুগুলির জনপ্রিয় করার অধিক সম্ভাবনা আছে। তাঁর সংস্থা ইতিমধ্যে বিশ্বমানের তন্তু তৈরি করেছে। যেমন লিনেন ও রোমি এবং বর্তমানে এই সব তন্তু আমদানি কিভাবে বন্ধ করা যায় তার ব্যবস্থা ও সংস্থা করছে। 


তিনি বলেন, পাট একটি পরিবেশ বান্ধব ফসল,কম কার্বন  ফুটপ্রিন্ট উৎপন্ন করে ,দেখা গেছে এক হেক্টর জমির পাট ফসল বায়ু মণ্ডল থেকে ১২০দিনে প্রায় ১৫ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস শোষণ করে এবং বায়ুমন্ডলের ১০ টন অক্সিজেন গ্যাস ছাড়ে। পাটকে সবুজ স্যার হিসেবে ব্যবহার করে মাটির স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করা যায়। এবং ২০-২৫ শতাংশ রাসায়নিক সারের ব্যবহার কম করে প্রাকৃতিক কৃষি ফসল করা যায় ।