Bipasha Chakraborty প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৮:২৬ এএম
মুশারফ হোসেন, চাঁচল: রাজস্থানে নিহত পরিযায়ী শ্রমিক মতিউরের লাশ রবিবার কাকভোরে গ্রামে পৌঁছতেই কান্নার রোল পড়ে যায়। এরপর সকাল দশটার দিকে কবরস্থ করা হয় পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ। পরিযায়ী শ্রমিক মতিউরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে ঘটনাস্থলে হাজির ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ও তজমুল হোসেন। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সী, জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া, পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের সদস্য তথা মালদা জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন সহ অন্যান্যরা। তারা জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নিহত পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের তরফে ২ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয় মৃত শ্রমিক মতিউরের স্ত্রী রৌশনা খাতুনের হাতে। এছাড়াও রাজস্থান থেকে মৃতদেহ আনতে গাড়ি ভাড়া বাবদ নগদ পঁচিশ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
বিজেপি শাসিত রাজস্থানে পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর সম্প্রচারিত হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ‘পুবের কলম’ পত্রিকার তরফে পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যান সাংসদ সামিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তৎক্ষনাৎ বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর গোচরে আনেন। শুক্রবার চাঁচলের মহকুমা শাসক সৌভিক মুখার্জি মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পরিবারটির হাতে দাফনের জন্য সমব্যথী প্রকল্পের টাকা তুলে দেন। ব্লক প্রশাসনের তরফে রিলিফও তুলে দেওয়া হয়। কর্মসাথী প্রকল্পে রৌশনা খাতুনের নাম অন্তর্ভুক্ত না থাকলে সেটা করে দেওয়া ও পরবর্তীতে বিধবা ভাতা চালু করার আশ্বাস দেন মহাকুমা শাসক।
প্রসঙ্গত, মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের ভিঙ্গল গ্রামপঞ্চায়েতের মিস্কিনপুর গ্রামের পরিযায়ী শ্রমিক মতিউর (৪৫) রাজস্থানের জয়পুরে একটি সোনার দোকানে কুড়ি বছর ধরে কাজ করতেন। তবে ছুটি নিয়ে পাঁচ মাস আগে বাড়ি এসেছিলেন। তারপর তিনি কিছুদিন আগেই ফের সোনার দোকানে কাজে যোগ দেন। গত আগস্ট মাসের ২৮ তারিখে দোকানের খাওয়ার রুমে জয়পুরের স্থানীয় কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে তার বচসা হয়। তখন ওই পরিযায়ী শ্রমিককে কয়েকজন মিলে বেদম মারধর করে বলে অভিযোগ। কিছু ভালো সহকর্মীর সহযোগিতায় মতিউরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসা চলাকালীন শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়। মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের স্ত্রী রৌশনা খাতুন বলেন, পরিবারে একমাত্র রোজগেরে ছিলেন স্বামী। ছোটো ছোটো দুই নাবালক ছেলেকে নিয়ে কিভাবে চলবে সংসার তা ভেবেই দিশেহারা। সরকারি তরফে তাকে দুই লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তবে, প্রশাসন তার একটি স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলে আরও ভালো হতো বলে জানিয়েছেন রৌশনা খাতুন।