পুবের কলম প্রতিবেদক : সন্তানের কাছে মায়ের থেকে বড় আর কিছু নেই। 'মা' শব্দটি ছোট কিন্তু তার বিশালতা বিরাট। কিন্তু সেই সুন্দর সম্পর্কের 'মৃত্যু' হল নৃশংসতায়। প্রেমিকের জন্য মা'কে খুন করল তাঁর নাবালিকা মেয়ে। ১৪ বছরের পালিতা নাবালিকা মেয়ের প্রেমের সম্পর্কে রাজি ছিলেন না মা। সেই আক্রোশেই নিজের প্রেমিকের সঙ্গে যোগসাজশ করে বাবার সামনে মাকে গলা টিপে হত্যা করে মেয়ে। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৬ জুনের ঘটনা। ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঠাকুরপুকুরের পল্লী মঙ্গল কলোনি এলাকায়। নাবালিকা মেয়ের প্রণয়ের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি বাবা-মা। মেয়ের সঙ্গে নিত্যদিন অশান্তি লেগেই থাকত। মেয়ের প্রেমিককে পছন্দ করতেন তারা। নিত্যদিনের এই গঞ্জনা অসহ্য হয়ে উঠেছিল মেয়ের কাছে। প্রেমিকের সঙ্গে ফন্দি এঁটে মাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার মতলব করে সে। ঘটনায় অভিযুক্ত নাবালিকা, তাঁর সঙ্গীকে গ্রেফতার সহ নাবালিকার বাবাকে আটক করেছে পুলিশ। 

স্থানীয় সূত্রে খবর,  নাবালিকার সঙ্গে গত দেড় বছর আগে ফেসবুকে এক যুবকের পরিচয় হয়। দু’জনের মধ্যে তৈরি হয় প্রেমের সম্পর্ক। বাড়িতে বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়েটির মা রীতা সান্ন্যাল ও তাঁর বাবা বাদল সান্ন্যাল তাকে এই সম্পর্ক ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বলেন। নারাজ মেয়ে। ৬ জুন রাতে নাবালিকা তার প্রেমিককে নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠায়। ঘুমন্ত অবস্থায় মায়ের গলা টিপে ধরে সে, সেই সঙ্গে বুকে দুমাদ্দুম ঘুঁষি মারে মেয়ের বয়ফ্রেন্ড। পাশ থেকে বাবা জেগে উঠলে তাকে খাট থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে খুনের হুমকি দেয় মেয়ে। এখানেই শেষ হয় নয়। মায়ের ডেথ সার্টফিকেট সে তৈরি করে দাহ কাজও সেরে ফেলে। 

ঘটনার প্রায় একমাস চলে যাওয়ার পর সোমবার পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। অভিযুক্তের বাবা বাদল স্যান্যাল পুরো বিষয়টি জানান প্রতিবেশীদের। তাঁর কথায়, তাঁর মেয়ে ৫০ হাজার টাকার দাবি করছেন তাঁর কাছে। না দিলে তাকে খুনের হুমকি দিয়েছে। প্রতিবেশীরা মিলে পুরো বিষয়টি ঠাকুরপুকুর থানায় জানায়। 

নাবালিকা বাদল ও রীতাদেবীর পালিতা সন্তান। অভিযুক্ত প্রেমিকের বয়ান অনুযায়ী, প্রথমে ও (মেয়েটি) বলেছিল আমরা শুধু ভয় দেখাব, মারব না, গলা টিপে ছেড়ে দেব। ও আমায় বলল পুরোই মেরে দিতে।