Sun, September 29, 2024

ই-পেপার দেখুন
logo

প্রাণপণ লড়াই, কুমিরের মুখ থেকে বাবাকে বাঁচাতে পারল না ছেলে, ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার


Bipasha Chakraborty   প্রকাশিত:  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১০:৪৬ এএম

প্রাণপণ লড়াই, কুমিরের মুখ থেকে বাবাকে বাঁচাতে পারল না ছেলে, ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুন্দরবন : বাবাকে কুমিরের মুখ থেকে চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারলো না ছোট ছেলেটা সুন্দরবনে। বাবাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল কুমির। পিছন থেকে সে দৃশ্য দেখে আর স্থির থাকতে পারেনি কিশোর ছেলে। সমস্ত সাহস নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাবাকে বাঁচাতে। বাবার হাত টেনে ধরা কুমিরের চোয়াল ঠেলে দাঁতের পাটির মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দিয়েছিল সে! কিন্তু শেষপর্যন্ত জল-দানবের সঙ্গে লড়াইয়ে আর পেরে ওঠেনি কিশোর। বাবাকে টেনে নিয়ে চলে যায় কুমির। একদিন পর নদীতে ভেসে উঠল মৎস্যজীবী বাবার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ।

ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয়েছে কাকদ্বীপে। পাথরপ্রতিমার মৎস্যজীবীর মৃত্যুতে শোকের পাশাপাশি প্রতিবেশীদের মুখে মুখে ফিরছে কিশোরের সাহসী পদক্ষেপের কথাও। আর ছেলে ভুলতেই পারছে না বাবার এই মৃত্যুকে।রবিবার আসাউদ্দিন মোল্লা নামে এক মৎস্যজীবী তাঁর ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে কাঞ্চন কৃট নদীতে মাছ ধরতে যান। তিনি গোবর্ধনপুর কোস্টাল থানার সত্যদাসপুর এলাকার বাসিন্দা। আচমকা কুমির নদীতে চলে আসে এবং আসাউদ্দিনের হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়। এমন সময়ে ছেলেটি বাবাকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কুমিরের দাঁতের পাটিতে হাত ঢুকিয়ে বাবার হাতটি বের করে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যর্থ হয় সে।

কুমির আসাউদ্দিনকে টেনে নিয়ে চলে যায়। খবর পেয়ে বনদপ্তরের কর্মীরা নদীতে তল্লাশি চালিয়েও তাঁকে খুঁজে বের করতে পারেনি।এর পর সোমবার বেলায় নদীতে ভেসে ওঠে আসাউদ্দিনের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ। পরিবারের কাছে খবর পৌঁছতেই শোকে ভেঙে পড়ে গোটা গ্রাম। কিন্তু তারই মাঝে কিশোর ছেলের বাবাকে বাঁচানোর রোমহর্ষক কাহিনির কথা বলছেন সকলে।তার কথায়, ”আমি পিছন থেকে দেখছি, বাবার হাত ধরে কুমির টেনে নিয়ে যাচ্ছে। বাবা চিৎকার করছে। আমি নিজে কুমিরের দাঁতকপাটির ভিতর হাত ঢুকিয়ে বাবার হাতটা ছাড়াতে যাই। কিন্তু পারছিলাম না। বাবা বলে, লোকজন ডাকতে। আমি ডাকতে গিয়ে দেখলাম বাবা আর নেই।” চোখের সামনে বাবা এভাবে কুমিরের পেটে চলে গেল! সে দৃশ্য যেন ভুলতেই পারছে না কিশোর।