Fri, September 20, 2024

ই-পেপার দেখুন
logo

ধূমপান করতে বারণ করায় কাঁওড়যাত্রীরা ভাঙচুর চালাল পেট্রোল পাম্পে


ইমামা খাতুন   প্রকাশিত:  ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৪:৫৭ পিএম

ধূমপান করতে বারণ করায় কাঁওড়যাত্রীরা ভাঙচুর চালাল পেট্রোল পাম্পে




মুজাফফরনগর, ২৯ জুলাই:  কাঁওড়যাত্রীদের ‘দাদাগিরি’ চলছেই। মুজাফফরনগরে একটি পেট্রোল পাম্প চত্বরে ধূমপান করছিল কয়েকজন কাঁওড়যাত্রী। পেট্রোল পাম্পের কর্মীরা তাদের পাম্প চত্বরে ধূমপান করতে বারণ করে। কিন্তু কাঁওড়যাত্রীরা কর্মীদের কথায় গুরুত্ব না দিয়ে ধূমপান চালিয়ে যেতে থাকে। পাম্পের এক কর্মী মনোজ কুমার তাঁদের সরে যেতে বলেন। এরপরই কাঁওড়যাত্রীরা পেট্রোল পাম্পে ভাঙচুর চালায়। স্থানীয় মনসুরপুর থানায় কাঁওড়যাত্রীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পেট্রোল পাম্প কর্তৃপক্ষ। ৪০-৫০ জন অজ্ঞাতপরিচয় কাঁওড়যাত্রীর বিরুদ্ধে দাঙ্গা, হিংসা ও হামলার সময় অ্যাসিড ব্যবহারেরও অভিযোগ আনা হয়েছে এফআইআর-এ।
ধূমপান করতে বারণ করায়  উগ্র কাঁওড়যাত্রীরা পেট্রোল পাম্পের কর্মচারী মনোজ কুমারের কলার ধরে মারধর শুরু করে। নিজেকে বাঁচাতে মনোজ পেট্রোল পাম্পের সেলরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। কাঁওড়যাত্রীরা পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে মনোজকে ধরে ব্যাপক মারধর শুরু করে। পেট্রোল পাম্পের মালিক আশুতোষ শর্মা জানিয়েছেন, ‘কাঁওড়যাত্রীরা বেসবল ব্যাটের মতো কিছু দিয়ে মনোজের মাথায় আঘাত করে।’
এরইমধ্যে খবর পেয়ে আরও কাঁওড়যাত্রী পেট্রোল পাম্পে জড়ো হয়। তারা মনোজ ও  অন্যান্য কর্মচারীদের মারধর করতে থাকে এবং সেলরুম-সহ পাম্প চত্বরে ভাঙচুর চালায়। শর্মা বলেন, ‘কম্পিউটার, গেট, ক্যাশ কাউন্টিং মেশিন, বায়োমেট্রিক মেশিন, প্রিন্টার এবং আরও অনেক জিনিস ভেঙে চুরমার করে দেয়। প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে।’ কাঁওড়যাত্রীদের হামলার পুরো ঘটনার ভিডিয়ো সিসিটিভিতে বন্দি করা হয়েছে। কিন্তু মুজাফফরনগর পুলিশ জানিয়েছে, পাম্প চত্বরে কিছু কাঁওড়যাত্রী আমের আঁটি ছুড়লে পাম্পকর্মী আপত্তি জানালে ঘটনাটি ঘটে। অন্যদিকে, ডিএসপি রামাশীষ যাদব আবার বলেছেন, এই ঘটনায় শুধু একটি জানালার কাচ ভেঙেছে।  
ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়েছে। পেট্রোল পাম্পের মালিক শর্মা বলেন, তাঁর কর্মী মনোজ  যখন পালানোর চেষ্টা করছিলেন, তখন কাঁওড়যাত্রীরা তাঁকে ধরে ফেলে তাঁর পিঠে বেশ কয়েকবার ছুরিকাঘাত করে। হামলায় মনোজের বেশ কয়েকটি হাড় ভেঙেছে এবং মাথায় আঘাত লেগেছে। মুজাফফরনগর মেডিকেল কলেজে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে। 
কাঁওড়যাত্রীদের এমন উগ্রতা কখনও দেখেননি স্থানীয় হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের স্থানীয় মানুষরা।  তাঁদের কথায়, কাঁওড়যাত্রীরা শাস্তিকে ভয় পায় না। তীর্থযাত্রীদের ‘যত্ন’ নেওয়ার নির্দেশকে হাতিয়ার করে কাঁওড়যাত্রীরা যখন তখন অশান্তি বাধাচ্ছে। কারণ যোগী সরকারের কঠোর নির্দেশে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।  
পেট্রোল পাম্পের মালিক আশুতোষ শর্মা বলেন, গত দু’দশক ধরে কাঁওড়যাত্রা দেখছি। কিন্তু গত কয়েক বছর দেখা যাচ্ছে কাঁওড়যাত্রীরা তাদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা অপব্যবহার করছে। তারা এটা বুঝে গেছে, তারা যেকোনও হিংসাত্মক কাজই করুক না কেন, প্রশাসনের তরফে তাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।

এরকম চলতে থাকলে আগামীদিনে মব লিঞ্চিং বা যেকোনও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শর্মা পেট্রোল পাম্পের কাছে দুটো হোটেলও চালান। বলছিলেন, কাঁওড়যাত্রার সময় স্থানীয় হোটেল, ধাবা, খাবারের দোকান মালিকদের এত ভয়ে থাকতে দেখিনি। সর্বত্র ভয়ের আবহ বিরাজ করছে। আমরা খুবই চিন্তিত।