কচুরিপানা ব্যবহার করে বিকল্প শিল্প নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনায় শিলমোহর বিশ্বভারতীর
Bipasha Chakraborty
প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১০:৫৭ এএম
সৌমিলী পাল
দেবশ্রী মজুমদার, শান্তিনিকেতন: কবির আশ্রম স্বীকৃতি দিল কচুরিপানা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বিকল্প শিল্প ভাবনাকেই। চিরাচরিত শিল্প থেকে উদ্ভাবনী নতূন কিছু করার কথা বলে থাকেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। প্রথাগত চিরাচরিত চর্ম শিল্পে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ জলজ প্রাণী থেকে পরিবেশ দূষিত করে। সেই ভাবনা থেকে মুখ্যমন্ত্রী কচুরিপানা থেকে বিকল্প শিল্প ভাবনার কথা বলেন। সেই ভাবনার কদর বিরোধী রাজনীতির কারবারিরা না দিলেও, মুখ্যমন্ত্রীর সেই শিল্প ভাবনাকেই শিলমোহর দিল শ্রীনিকেতনে বিশ্বভারতীর পল্লী সংগঠন বিভাগের অধীন শিল্প সদন।
১৯২২ সাল থেকে বিশ্বভারতীর এই বয়ন বিভাগ অনেক উদ্ভাবনী ক্ষমতার নিদর্শন দেখিয়ে চলেছে। এই বয়ন বিভাগের প্রযুক্তি এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ অনেকটাই হস্তশিল্প সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। বর্তমানে এই বিভাগ থেকে টেক্সটাইল ডিজাইনিংয়ে স্নাতক থেকে স্নাতকোত্তর এবং পি এইচ ডি পর্যন্ত করার সুযোগ রয়েছে।
পরিবেশ বান্ধব এই প্রকল্পে শুধু বাংলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীরা দিশা পেয়েছেন। তার প্রমাণ পাওয়া গেছে তেইশ সালে মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরে আসেন বোলপুরে। সেই সভায় সাঁইথিয়ার বার্ড ফাউন্ডেশনের তরফে বিব্রসু পরামানিক কচুরিপানা দিয়ে তৈরী বিভিন্ন শিল্প পন্যের পসরা নিয়ে হাজির হন।
বিশ্বভারতীর স্নাতক স্তরের ফাইনাল ছাত্রী সৌমিলী পাল এবং কমল শ প্যাকেজিং শিল্পে উদ্ভাবনী মূলক কাজ করেছেন। ড. শঙ্কর রায় মৌলিক চিরাচরিত প্রথার বাইরে এই প্রজেক্টের গাইড। মূলত কচুরিপানাকে চর্মজাত শিল্পের পুরোপুরি বিকল্প না হলেও একটি উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে একটি সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছেন। এর ফলে বাংলার আতঙ্ক এই জলজ কচুরিপানা মুক্ত হবে জলাশয়গুলি। যার বারবৃদ্ধি ভয়ংকর দ্রুত। এরফলে জলজ প্রাণী বাচবে। এই কচুরিপানা প্যাকেজিং শিল্পে বিপ্লব আনবে।
হাতে তৈরী কাগজ, হস্তশিল্পের সম্ভার, এবং অন্যান্য তন্তুর মিশ্রণে পোশাকও তৈরী করবে। যার অধীনে এই কর্মকাণ্ড বিপ্লব ঘটেছে ডিজাইনিংয়ে। তিনি হলেন শিল্প সদনের বয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. শঙ্কর রায় মৌলিক।
তিনিও বলেন, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী অনেক উদ্ভাবনী সম্ভবনাময় শিল্পের কথা বলেন এবং প্রচারও করেন। এটা খুবই ভালো। পরিবেশ বান্ধব এই বিকল্প উপাদান প্যাকেজিং জগতে শিল্পের এক তৃতীয়াংশ যোগান দিতে সক্ষম। এছাড়াও কাগজ শিল্পে এর অবদান বাড়বে। জলাশয় যেমন বাঁচবে, তেমনি বাঁচবে গাছপালা।
রাজ্যের ছোট, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যেটা বলেন সেটা করে দেখান। আমাদের রাজ্যে আগে থেকেই শিল্পীদের আমরা এই উদ্যোগকে সরকারিভাবে সাহায্য করে থাকি। অনেকেই বিরূপ সমালোচনা করেন রাজনীতির কারণে। পরে তারা মুখ্যমন্ত্রীর শিল্প ভাবনাকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হন। একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্যমন্ত্রীর কচুরিপানা নিয়ে সম্ভাবনাময় শিল্প চেতনাকে শুধু স্বীকৃতি নয় স্নাতক থেকে পি এইচ ডি পর্যন্ত পাঠ্যক্রমে রাখতে বাধ্য হয়েছেন। এব্যাপারে যদি সাহায্য চাওয়া হয়, রাজ্য সরকার ভাববে।