Sat, September 21, 2024

ই-পেপার দেখুন
logo

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে মিডডে মিল খাওয়াতে হিমশিম স্কুল কর্তৃপক্ষের


ইমামা খাতুন   প্রকাশিত:  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৮:০৯ এএম

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে মিডডে মিল খাওয়াতে হিমশিম স্কুল কর্তৃপক্ষের


সেখ কুতুবউদ্দিন: পড়ুয়াদের মিডডে মিল খাওয়াতে হিমশিম খাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। আলুর দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ছাড়িয়েছে, কয়েক সপ্তাহ হয়ে গেল আদা, রসুন, লঙ্কা, ঝিঙের দামে আগুন। মহার্ঘ মশলাপাতি, জ্বালানি গ্যাস। তবে টাক্সফোর্সের অভিযানের ফলে কিছুটা হলেও সবজি-দ্রব্য মূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে। এই অবস্থায় বরাদ্দ টাকায় পড়ুয়াদের উপযুক্ত মানের মিড ডে মিল খাওয়াতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা স্কুল  কর্তৃপক্ষের। 


প্রাথমিকে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মিড ডে মিলে প্রত্যেক পড়ুয়ার জন্য  ২০২২ সালের নির্দেশিকা অনুসারে বরাদ্দ  ৫ টাকা ৪৫ পয়সা। ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণির জন্য বরাদ্দ ৮ টাকা ১৭ পয়সা। জেলা প্রশাসন বিভিন্ন সরকারি, সরকার পোষিত বিদ্যালয়, মাদ্রাসাকে সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে পড়ুয়াদের কী খাবার দিতে হবে, তার তালিকা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে মরসুমি আনাজের পাশাপাশি সপ্তাহে এক দিন ডিম দেওয়ার কথা বলা আছে। 
‘আলু-পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। পটল, বেগুন ৪০-৫০ টাকা কেজি। আদা ২০০-৩০০ টাকা, কাঁচালঙ্কা ১০০- ১৫০ টাকা কেজি। কয়েক মাস আগেও যে পরিমাণ ডাল ৫০ জন পড়ুয়াকে দেওয়া হত, এখন তাতে জল মিশিয়ে ১০০ জনকে খাওয়াতে হচ্ছে। পদে আলু, আনাজ কম দিয়ে ঝোল বেশি করতে হচ্ছে।’ এক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ক্ষোভ চেপে না রেখে বলেন, ‘মিড ডে মিল চালুর উদ্দেশ্য ছিল পড়ুয়াদের জন্য পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করা। কিন্তু সেই উদ্দেশ্যই পূরণ হচ্ছে না বরাদ্দ একই থাকায়। মিড ডে মিলের খাবার দিনে দিনে অখাদ্যে পরিণত হচ্ছে।’ 
 শিক্ষক সংগঠনগুলির বক্তব্য, ‘জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে বরাদ্দ টাকায় পড়ুয়াদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া অসম্ভব। মাঝখানে দু’মাসের জন্য বরাদ্দ বেড়েছিল। তাতে খাবারের মান এবং পড়ুয়াদের উপস্থিতিও বেড়েছিল।’  
রাজ্যের প্রধানশিক্ষকদের সংগঠনের তরফে চন্দন মাইতির প্রশ্ন, জিনিসপত্রের যা দাম বেড়েছে, ওই টাকায় পুষ্টিকর খাদ্য দেওয়া কী ভাবে সম্ভব? এই বরাদ্দ ন্যূনতম দশ টাকা হওয়া উচিত। এই  নিয়ে রাজ্যের স্টেট প্রোজেক্ট ডিরেক্টরের কাছে  লিখিতভাবে মিডডে মিলে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে এই  সংগঠন। 
তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের এক নেতা বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। রাজ্য সরকারও চাইছে  পড়ুয়াদের মিডডে  মিলে ভালো খাবার দিতে। এতে কেন্দ্র সরকারকে মিডডে মিলে বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। 
  মাদ্রাসা শিক্ষক নেতা আবু সুফিয়ান পাইক বলেন, ‘এটা ঠিক,  মিডডে মিলে বরাদ্দ যা, ভালো মানের খাবার দেওয়া কঠিন। কেন্দ্র সরকার বরাদ্দ বাড়ালে মিডে মিলের মান বাড়ানো সম্ভব নয়। রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা রয়েছে, তাই রাজ্যের কোষাগার  থেকে অতিরিক্ত অ্যাডিশনাল নিউট্রেশনের জন্য চার মাস পর্যন্ত বরাদ্দ করে নিজস্ব কোষাগার  থেকে। একে স্বাধুবাদ।   
পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের বিষয়টি দেখভাল করে সমগ্র শিক্ষা মিশন।  সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, সরকারি ভাবে যে টাকা বরাদ্দ রয়েছে, তা দিয়েই খাদ্য তালিকা অনুযায়ী পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে ছাত্রছাত্রীদের।’ 
বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ও বঙ্গীয় শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সমিতির বক্তব্য, করোনাকালে বহু শিশু স্কুলছুট  হয়েছে। তাদের ফের স্কুলে ফিরিয়ে আনার প্রধান অস্ত্র হতে পারে মিড-ডে মিলে অন্তত একবেলার খাবারের নিশ্চয়তা।