Sun, September 29, 2024

ই-পেপার দেখুন
logo

ক্ষমা চাইতে হবে হাসিনাকে, দাবি বিক্ষোভকারীদের


ইমামা খাতুন   প্রকাশিত:  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১১:৫৭ এএম

ক্ষমা চাইতে হবে হাসিনাকে, দাবি  বিক্ষোভকারীদের

ঢাকা, ২০ জুলাই: কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে গোটা বাংলাদেশ। বিক্ষোভকে না থামিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর পালটা হামলা চালিয়ে সহিংসতা আরও উসকে দিয়েছে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনরা। দেশে ইন্টারনেট, টিভি থেকে শুরু করে বন্ধ সব রকমের সম্প্রচারমাধ্যম। এমতাবস্থায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দেশে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীরা দেশব্যাপী আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেছেন।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাইছেন। ১৮ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী বিদিশা রিমঝিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে আমাদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, এটাই আমাদের প্রথম দাবি। দ্বিতীয়ত, আমাদের নিহত ভাই-বোনদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’ লন্ডনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা নেটব্লকস জানায়, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট শাটডাউন চলছে।

এর ফলে, ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের। নেটব্লকস এক্সে লিখেছে, ‘নেট বন্ধ থাকার কারণে বাংলাদেশে বহু পরিবার তাদের প্রিয়জনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না।’ শুক্রবার সকালে চলমান কোটা-বিরোধী বিক্ষোভের সবচেয়ে ভয়াবহ দিন ছিল। বাংলাদেশের সেনা-পুলিশের  আক্রমণে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর পর ক্ষুব্ধ ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর ফলে দেশব্যাপী ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট হয়ে যায়। চলতি সপ্তাহের বিক্ষোভ-সহিংসতায় বাংলাদেশে অন্তত ১০০ জনের প্রাণহানি হয়েছে।

দেশের অন্তত ৩২টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলন। প্রতিটি জেলা থেকেই শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের খবর আসছে। তবে পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি খারাপ রাজধানীর। ঢাকায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের সদর দফতরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। পুলিশ ফোর্সের মুখপাত্র ফারুক হোসেন জানান, গতকালের সংঘর্ষে ১০০রও বেশি পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। ৫০টিরও বেশি পুলিশ বুথে হামলা চলেছে।

ঢাকার ব্যস্ত রাস্তাগুলি শুক্রবার ফাঁকা ছিল। শুধু রাস্তায় ছিল বিগত দিনের সহিংসতার কিছু চিহ্ন। চলমান বিক্ষোভে এখনও পর্যন্ত ৭৩০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন, এদের মধ্যে রয়েছেন ৩০ জন সাংবাদিক। প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে প্রতিদিনই বিক্ষোভ করছেন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই কোটা ব্যবস্থা সেসকল সরকারপন্থীদের সহায়তা করে যারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে সমর্থন করে এসেছে। ৭৬ বছরের হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ শাসন করছেন। জানুয়ারিতে ফের নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসেন তিনি। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অপব্যবহার করে ক্ষমতা দখল এবং ভিন্নমতকে দমন করার জন্য বিরোধী কর্মীদের বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ রয়েছে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে। 

চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে হাসিনা সরকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পথে নামানো হয়েছে সেনা ও পুলিশকে। ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতির অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেছেন, ‘বছরের পর বছর ধরে গড়ে ওঠা যুব জনগোষ্ঠীর অসন্তোষের বিস্ফোরণ এটি। চাকরির কোটা এখন কারচুপির প্রতীক।’