Sun, September 29, 2024

ই-পেপার দেখুন
logo

হাসপাতালের লিফটে ৪২ ঘণ্টা আটকে রোগী, দু'দিন পর সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার


Kibria Ansary   প্রকাশিত:  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৫:৫৩ পিএম

হাসপাতালের লিফটে ৪২ ঘণ্টা আটকে রোগী, দু'দিন পর সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার

তিরুবনন্তপুরম, ১৭ জুলাই: চিকিৎসা করাতে গিয়ে সরকারি হাসপাতালের লিফটে আটকা পড়েন এক রোগী। খাদ্য ও পানীয় জল ছাড়াই সেখানে প্রায় ৪২ ঘণ্টা আটকে ছিলেন তিনি। প্রস্রাব-পায়খানা করেন সেখানেই। অবশেষে দু'দিন পর তাকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি কেরলের।

গত শনিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে তিরুঅনন্তপুরম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন ৫৯ বছর বয়সী রবীন্দ্রন নায়ার। লিফটে করে হাসপাতালের ওপরে যাওয়ার সময় আটকে পড়েন তিনি। সোমবার (১৫ জুলাই) সকালে লিফট অপারেটর তাকে খুঁজে পাওয়ার আগ পর্যন্ত লিফটের মধ্যেই ছিলেন তিনি। আটকা পড়ার দু’দিন পর লিফটের মধ্য থেকে তাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রবীন্দ্রন এখন ওই হাসপাতালেই রয়েছেন। সেখানে পানিশূন্যতা ও পিঠের ব্যথার চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। ঘটনাটি সংবাদমাধ্যমে আসার পরই টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের।
 এই ঘটনার পরই রাজ্য সরকার লিফটের তিন টেকনিশিয়ানকে বরখাস্ত করে তদন্ত শুরু করেছে। এদিকে তিরুঅনন্তপুরম সরকারি মেডিকেল কলেজের আধিকারিক ও রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভুক্তভোগী রোগী রবীন্দ্রন নায়ারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। রবীন্দ্রন নায়ার জানান, "আমি সাহায্যের জন্য চিৎকার করে উঠলাম এবং আমার হাত দিয়ে টেনে দরজাগুলো ফাকা করার চেষ্টা করলাম। লিফটের ভেতরে তখন অন্ধকার। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে শ্বাস নেয়ার মতো পর্যাপ্ত বাতাস ছিল। এরপর তিনি লিফটের চারপাশে হাঁটতে শুরু করেন। বারবার অ্যালার্ম বেল টিপতে থাকেন এই আশায় যে, কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। কিন্তু কোনো লাভ হলো না।"

তার কথায়, আটকা পড়ার পর বেশ কয়েকবার লিফটের অ্যালার্মের সুইচ চাপেন তিনি। তার পরও তাকে কেউ উদ্ধার করতে যাননি। এরপর তিনি লিফটের ভেতরের ইমার্জেন্সি ফোন নম্বরে ফোন দেন। কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি। এরপর তিনি তার স্ত্রীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে তার ফোনটি হাত থেকে পড়ে ভেঙে যায়।
 নায়ার বলেন, কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর আমি বুঝতে পারছিলাম না এটা দিন নাকি রাত। কারণ ভেতরে প্রচণ্ড অন্ধকার। যখন আমি ক্লান্ত হয়ে পড়লাম, তখন আমি এক কোণে শুয়ে পড়ি। আমাকে প্রস্রাব ও মলত্যাগ করার জন্য অন্য কোনা ব্যবহার করতে হয়েছিল।
 এদিকে রবীন্দ্রন বাড়ি না ফেরায় চিন্তায় পড়ে যান তার পরিবারের সদস্যরা। তার পরিবারের পক্ষ থেকে মেডিকেল কলেজ থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করা হয়। মেডিকেল কলেজের কেউ জানতেন না যে একজন রোগী লিফটে আটকে আছেন। সোমবার সকাল ৬টার দিকে লিফট অপারেটর এসে লিফট খুলে দেখেন একজন সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। লিফট অপারেটর জানান, লিফটের সামনে একটি বোর্ড ছিল। সেখানে ওই লিফট ব্যবহার না করার কথা লেখা ছিল। কিন্তু রবীন্দ্রন নায়ারের পরিবারের অভিযোগ, বিকল লিফটের সামনে কোনো সতর্কতামূলক বোর্ড লাগানো হয়নি।