Fri, September 20, 2024

ই-পেপার দেখুন
logo

অন‍্যের পাট্টা খাস জমি লক্ষাধিক টাকার দুর্নীতিতে নিজের নামে নথিভুক্ত করে জবর দখল


Bipasha Chakraborty   প্রকাশিত:  ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৪:২০ পিএম

অন‍্যের পাট্টা খাস জমি লক্ষাধিক টাকার দুর্নীতিতে নিজের নামে নথিভুক্ত করে জবর দখল

দেবশ্রী মজুমদার, রামপুরহাট: পাট্টা জমি দখল করে ভোগদখলের চেষ্টা। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে এ ব‍্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিলেও বিভাগীয় দফতর চোখ বুজে আছে। এদিকে পঞ্চায়েতের কথা না শুনে পাট্টা জমি দখল করে চলছে তড়িঘড়ি ঘেরার ব‍্যবস্থা। বড়শাল পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের স্বামী পবন মাল বলেন, আমরা নিষেধ করেছি। কিন্তু কথা শুনছে না।  মুখ‍্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় ওই জায়গাই চলছে পাকা প্রাচীর তুলে স্থায়ীভাবে দখল। 

উল্লেখ্য, তারাপীঠ যাওয়ার পথে বড়শাল পঞ্চায়েতের অধীন মধ‍্যগোপালপুর মৌজায় 267 নং দাগে রাস্তার ধারে আট কাঠা পরিমাণ সরকারি ভেস্ট ল‍্যাণ্ড। যার বর্তমান মূল‍্য এক কোটি টাকা। সে কারণেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের যোগ সাজসে এই বহু মূল‍্যের সরকারি জায়গা পাট্টাদারকে উচ্ছেদ করে ব‍্যক্তির নামে নথিভুক্ত করা হয়েছে। রামপুরহাট মহকুমা পথ ও পরিবেশ সঙ্ঘের সহ সভাপতি তথা আইনজীবী শেখর সিনহা বলেন, এভাবে সরকারি খাস জায়গা, বিশেষ করে অন‍্যের পাট্টা জমি নিজের নামে রেকর্ড করা যায় না। বিভাগীয় দফতর থেকে এই রেকর্ড কী করে হয়? এটা সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ।

এব‍্যাপারে মহকুমা শাসক সৌরভ পাণ্ডেকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে বিধিব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সাঁকিরপুর নিবাসী সুনীল মণ্ডল বলেন, আমাদের কোনো কথা না শুনে লোকজন নিয়ে এসে জোর করে পাঁচিল তুলে ঘিরছে বিশ্বজিৎ ঘোষ। এই জমির পিছনে আমাদের জমি। কোনো রাস্তা ছাড়ছে না। আমাদের চাষ বন্ধ হয়ে যাবে। খাস জমিকে কী করে নিজের নামে করা যায়, আমরা বুঝতে পারছি না। পঞ্চায়েতকে জানিয়েছি। তাদের কথাও শুনছে না।

একইভাবে রাহুল সাহা বলেন,  লক্ষাধিক টাকার দুর্নীতিতে নিজের নামে নথিভুক্ত করে জবর দখল করছেন বিশ্বজিৎ ঘোষ নামে এক ব‍্যক্তি। এই অভিযোগ তুলে রামপুরহাট থানার অন্তর্গত গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা রাহুল সাহা যথাক্রমে রামপুরহাট এক ব্লকের বি এল এণ্ড আরও দফতরের পাশাপাশি রামপুরহাট মহকুমা শাসককে চলতি বছরের তিরিশে জানুয়ারি একটি অভিযোগও দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মহকুমা শাসক ওই একই দিনে বিষয়টি তদন্ত  করে কী পদক্ষেপ নিলেন তা জানাতে বলেন। কিন্তু সেসব উপেক্ষা করে রামপুরহাট থানার রদিপুর নিবাসী বিশ্বজিৎ ঘোষ জমিতে ডাস্ট ভরে চারিদিকে ইঁটের পাঁচিল তুলছেন। 

জানা গেছে, প্রায় বছর পঁইত্রিশ আগে রাজ‍্য সরকার বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন মধ‍্য গোপালপুর মৌজায় প্রয়াত ফটিক বাউড়ীর নামে আট কাঠা জমির পাট্টা দেয়। বর্তমানে ফটিক বাউড়ীর চার মেয়ে বিয়ে হওয়াই অন‍্যত্র বাস করেন। সেই সুবাদে পাট্টাদারকে উচ্ছেদ করিয়া একই পঞ্চায়েতের পাকুরিয়া গ্রাম নিবাসী আসিফ সেখ অন‍্যের নামে ওই পাট্টা জমি দখল করে নেয়।

পরে আসিফ সেই অন‍্যের পাট্টা জমি রামপুরহাট থানার রদিপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ঘোষকে প্রচুর অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। যা আদপে একটি সরকারি জায়গা।  প্রতিবেদক বিশ্বজিৎ ঘোষকে ফোন করলে, প্রথমে স্বীকার করলেও, পরে সাংবাদিক বুঝতে পেরে নিজের পরিচয় অস্বীকার করেন।

ঘটনাটি জেলা শাসক বিধান রায়ের নজরে আসার পর তিনি বলেন, সরকারি জায়গা দখল করা যায় না। জায়গা থেকে বেআইনি দখলদার সরিয়ে দেওয়া হবে।