গ্রামবাংলায় লুকিয়ে থাকে অনেক প্রতিভা। মেধার সঠিক পরিচর্যায় তা মহীরূহের আকার ধারণ করে। সমৃদ্ধ করে শিক্ষাজগতকে। এমনই এক বিজ্ঞান-প্রতিভা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের ‘খোদারবাজার গ্রামের বাসিন্দা বিজ্ঞানী ড. ফারুক রহমান। গবেষণামূলক বিভিন্ন কাজকর্মের জন্য সম্প্রতি রাজ্যের সর্বোচ্চ শিক্ষা সম্মান ‘শিক্ষারত্ন’ পেয়েছেন তিনি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ড. ফারুক রহমানকে শিক্ষারত্ন পুরস্কারটি তুলে দেন। ড. ফারুক শুধু নিজেই গবেষণা করেন না, ছাত্রছাত্রীদেরও গবেষণার কাজে উদ্ধুদ্ধ করেন। সাহায্য করেন নানাভাবে। ইতিমধ্যে তাঁর কাছ থেকে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন ৩০ জনের বেশি গবেষক। তাঁকে নিয়ে পুবের কলম-এর বিশেষ প্রতিবেদন
পুবের কলম প্রতিবেদকঃ গ্যালাক্সির ভিতরে ওয়ার্মহোল রয়েছে। সেই গবেষণা সফল হয়েছে। এবার গ্যালাক্সির ভিতরে ‘ওয়ার্মহোল চিহ্নিত’ করা নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন ২০২২ সালের শিক্ষারত্ন প্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ফারুক রহমান। উল্লেখ্য, গবেষণামূলক বিভিন্ন কাজকর্মের জন্য রাজ্যের সর্বোচ্চ শিক্ষা সম্মান ‘শিক্ষারত্ন’ দেওয়া হয়েছে। তিনি শুধু নিজেই গবেষণা করেন না। ছাত্রছাত্রীদেরও নতুন নতুন গবেষণার কাজে উদ্ধুদ্ধ করেন। ইতিমধ্যে তাঁর কাছ থেকে গবেষণা করে পিএইচডি লাভ করেছেন ৩০ জনের বেশি গবেষক।
অধ্যাপক ড. ফারুক রহমানের গবেষণা অনুসারে, টাইম মেসিনে ভ্রমণ সম্ভব। যা যুগান্তকারী আন্তর্জাতিক অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট মহলে সাড়া ফেলে দিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারুক রহমানের গবেষণা।
পাশাপাশি বিজ্ঞানীদের ‘ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিংয়ের (টপ ২ পার্সেন্ট) স্থান করে নিয়েছে তাঁর গবেষণা। তাঁর এই সাফল্যে ড. ফারুক রহমানকে শিক্ষারত্ন পুরস্কার দিয়েছে। সম্প্রতি শিক্ষক দিবস অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ড. ফারুক রহমানকে শিক্ষারত্ন তুলে দেন।
আমেরিকার স্ট্যান্ডফোর্ড ইউনিভারসিটির বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত প্রকাশিত এই র্যাঙ্কিংয়ে এ দেশের যাদবপুর-সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের গবেষকরাও এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এর আগেও তিনি ইংল্যান্ডের রয়েল অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল সোসাইটির ফেলো হিসেবে নিযুক্ত হন। ইতিমধ্যে নাগপুর বিশ্ববিদ্যালয় ওয়ার্মহোল গবেষণা নিয়ে ড. ফারুক রহমানকে সংবর্ধনা জানিয়েছে। গবেষণা প্রসঙ্গে ফারুক রহমানের বক্তব্য, গ্যালাক্সির ভিতরে শর্টকাট পথ রয়েছে। যাকে ওয়ার্মহোল বলা হয়। মহাকাশে অসংখ্য নক্ষত্রমণ্ডলী রয়েছে, যা একে অপরটির চারদিকে ঘোরে। পবিত্র কুরআন শরীফে নক্ষত্রমণ্ডলীর কথা উল্লেখ রয়েছে। নক্ষত্রের ভারসাম্য রক্ষার জন্য একটি অপরটির দিকে টেনে রাখে। গ্যালাক্সির মধ্যেই এই ভারী নক্ষত্রগুলি একে অপরের চারদিকে ঘোরে। নবদ্বীপ বিদ্যাসাগর কলেজে অধ্যাপনা শুরু করার পর ২০০২ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যাথামেটিক্স বিভাগে নিযুক্ত হন। ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে তিনশোর বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের খোদারবাজার গ্রামের বাসিন্দা বিজ্ঞানী ড. ফারুক রহমান। তাঁর এই সাফল্যে এলাকার বাসিন্দারাও তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তাঁর গবেষণা গ্রুপের পক্ষ থেকে ড. সাঈদ উল ইসলাম জানান, ‘স্যারের এই সাফল্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষাকর্মী বন্ধুরা সকলেই ভীষণ আপ্লুত এবং গর্বিত। তারা আশাবাদী এমন সাফল্য ভবিষ্যতে আরও আসবে। গবেষণার পাশাপাশি একজন ভালো মানুষ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য তাঁর আদর্শ ছাত্র-ছাত্রীদের সর্বদা অনুপ্রাণিত করে।’