পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: কেন্দ্রের প্রস্তাবিত ওয়াকফ বিল রুখতেই হবে। এটা মুসলিম সমাজের জীবন ও মৃত্যুর বিষয়। ঠিক এই ভাষাতেই ওয়াকফ বিলের বিরোধিতায় সরব হলেন মুসলিম পার্সোন্যাল ল’ বোর্ডের সভাপতি মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ।
প্রস্তাবিত ওয়াকফ বিলের তীব্র বিরোধিতা করে ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড’ (এআইএমপিএলবি)-এর সভাপতি মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ জানান, তিনি ‘যে কোনও মূল্যে’ এর বাস্তবায়ন রুখবেন। আর এজন্য বোর্ডের সদস্যরা নিজেদের জীবন দিতেও বিন্দুমাত্র সংকোচ করবেন না। উত্তরপ্রদেশের কানপুরে একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, বেআইনি জবর দখল হিসেবে সরকারের হাতেই সবথেকে বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে।
ল’বোর্ড সভাপতির কথায়, ‘এটা আমাদের জন্য জীবন-মৃত্যুর বিষয়।
আমাদের এটা (ওয়াকফ বিল) যে কোনও মূল্যে রুখে দেওয়া উচিত। প্রয়োজন হলে দেশের মুসলিমরা এমনভাবে জেল ভরিয়ে দেবে যে, সেখানে অপরাধীদের রাখার মতো আর কোনও জায়গা থাকবে না। যদি প্রয়োজন হয়, আমরা নিজেদের জীবন দিতেও দ্বিধা করব না।’ উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৮ জুলাই কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল পেশ করেছিল। তবে, বিরোধী দলগুলির তীব্র আপত্তিতে বিলটিকে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে (জেপিসি) পাঠানো হয়।
আরও পড়ুনঃ নেতাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার ইসরাইলি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের
বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, কেন্দ্রের এই বিলের লক্ষ্য, ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতাকে সীমিত করে দিয়ে ওয়াকফ সম্পত্তিগুলি দখল করা।
বিলটির আরও একটি লক্ষ্য—কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল এবং রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডগুলিতে মুসলিম মহিলা এবং অমুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব দেওয়া। অমুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে এদিন সাইফুল্লাহ বলেন, সরকারের একমাত্র লক্ষ্য মুসলিমদের কাছ থেকে ওয়াকফ জমি ছিনিয়ে নেওয়া। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যদি এটি (ওয়াকফ বোর্ড) পরিচালনা অমুসলিমদের মাধ্যমে করা হয়, তাহলে কি তারা মসজিদ ও কবরস্থানের প্রতি সহানুভূতি দেখাবে? এর ফলে আপনাদের জমি আপনাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে…।
এটি একটি খুবই বিপজ্জনক আইন। খোদ তামিলনাড়ুতে ৪,৭৮,০০০ একর মন্দির-জমি (টেম্পল প্রপার্টি) রয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশে মন্দির-জমি রয়েছে ৪,৬৮,০০০ একর। শুধুমাত্র এই ২ রাজ্যেই ১০ লক্ষ একরের বেশি মন্দির-জমি রয়েছে। অন্যদিকে, গোটা দেশ মিলিয়ে মুসলিমদের কাছে যদি মাত্র ৬ লক্ষ একর ওয়াকফ জমি থাকে তাতে সমস্যা কিসের?’’
তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, সরকার ল’বোর্ডের কিছু সদস্যের উপর প্রবল চাপ দিচ্ছে মামলাটিতে হেরে যাওয়ার জন্য এবং আদালতে এই সংক্রান্ত নথিপত্র দাখিল না করার জন্য।
এরপরই মুসলিমদের সতর্ক করে সাইফুল্লাহ বলেন, এটা ভেবে দেখার বিষয় যে, ওয়াকফ বোর্ড এবং সরকারের মধ্যে কোনও ক্ষেত্রে বিরোধ তৈরি হলে কালেক্টর কি তখন সরকারের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন? কারণ কালেক্টর নিজেই তো সরকারের লোক। প্রস্তাবিত বিলে তো এই ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে কালেক্টরের হাতেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
1 Comment
Pingback: গুরুতর অসুস্থ খামেনি, উত্তরসূরি নির্বাচনের দৌড়ে এগিয়ে কে?