পড়ুয়াদের চাপ কমাতেই বাদ দেওয়া হয়েছে মুঘল ইতিহাস-গুজরাত দাঙ্গা : এনসিইআরটি
ইমামা খাতুন
- আপডেট :
৬ এপ্রিল ২০২৩, বৃহস্পতিবার
- / 11

পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ‘মুঘল মানেই মুসলমান, আর মুসলমান মানেই মুঘল’ এই মোটা দাগের ব্যাখ্যাতে বরাবরই বিশ্বাসী বিজেপির কর্মকর্তারা। তাই মূল্যবৃদ্ধি থেকে ইনকাম ট্যাক্স, সব সমস্যার মূলে আওরঙ্গজেব বা অন্য কোনও মুঘল বাদশাহ্কে খোঁজেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে তাঁর দলের ছোট-বড়-মাঝারি মাপের নেতাকর্মীরা।
মুঘল ইতিহাস নিয়ে বারবরই আপত্তি ছিল বিজেপির। ইতিহাস পাঠ্য থেকে যে তাঁরা মুঘল পর্ব মুছে ফেলতে চান সেই আভাসও আগেই দেওয়া হয়েছিল। সবটাই ছিল সময়ের অপেক্ষা। অপেক্ষা ফুরিয়ে দেখা গেল, এনসিইআরটি-র দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস পাঠ্যে যথেচ্ছ শল্যচিকিৎসা করে বাদ দেওয়া হয়েছে মুঘল ইতিহাস। কোপ পড়েছে গান্ধী-হত্যা সম্পর্কিত তথ্যেও। কারণ নাথুরামের সঙ্গে আরএসএস যোগ রয়েছে। বাদ পড়েছে গুজরাত দাঙ্গার। কারণ সেখানেও প্রত্যক্ষ যোগ আছে বিজেপির।
সহজ কথায় যে বিষয়ে বিজেপির আপত্তি, নির্দয়ভাবে কেটে ফেলা হয়েছে সেইসব অধ্যায়। কিন্তু যে কথা গোটা ভারত জানে, সেকথা বেমালুম মিথ্যা বলে মনে করছেন, এনসিইআরটি-র ডিরেক্টর দীনেশ প্রসাদ সাকলানি। সাকলানির মতে, এসবের সঙ্গে রাজনীতির বিন্দুমাত্র যোগ নেই।
করোনার সময় দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ ছিল। পড়ুয়ারা বিপদে পড়েছে। তাদেরকে সাহায্য করার জন্য ও তাদের বোঝা কমানোর জন্যেই সিলেবাসে পরিবর্তন এনেছে এনসিইআরটি। পড়ুয়াদের কথা ভেবে সমাজ ও জাতির প্রতি দায়িত্ব পালন করার জন্যেই এমন সিদ্ধান্ত বলে যুক্তি খাড়া করা হয়েছে।
গোটা দেশের সংবেদনশীল মানুষজন থেকে রাজনীতিবিদরা যখন বিশ্বাস করছেন, বেছে বেছে এই অধ্যায়গুলি বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্য, বিজেপির মেরুকণের রাজনীতি ও দলের কালিমালিপ্ত ইতিহাস মুছে ফেলা, তখন সাকলানির যুক্তি, এসব অভিযোগ আসলে ভুয়ো ও ভিত্তিহীন। এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, কোনও পক্ষপাতিত্ব করা হয়নি। নির্দিষ্ট কিছু মানুষ এমনটা মনে করছেন, কিন্তু এটা অসত্য। কিন্তু বিজেপির ভূমিকা না থাকলে কিভাবে বেছে বেছে বিজেপির অপছন্দের বিষয়গুলিতে কাঁচি চালানো হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিতে পারেননি এনসিইআরটি-র ডিরেক্টর দীনেশ প্রসাদ সাকলানি। উল্লেখ্য, এনসিইআরটি-র বেছে বেছে ইতিহাস বাতিলের সিদ্ধান্তে ধিক্কার জানিয়েছেন বিরোধীরা। গর্জে উঠেছেন দেশের সমাজকর্মীরা।