পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: প্রয়াত বিশিষ্ট বর্ষীয়ান অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিক। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। শুক্রবার রাতে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে তিনি বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। মায়ের মৃত্যর খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে আসেন অঞ্জনা ভৌমিকের কন্যা নীলাঞ্জনা সেনগুপ্ত ও জামাই, অভিনেতা যিশু সেনগুপ্ত। অঞ্জনা ভৌমিকের প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর শোকবার্তায় বলেন, ‘বিশিষ্ট অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিকের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তিন দশক ধরে বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর অসামান্য অভিনয় আজও দর্শকদের মনে অমলিন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র: নিশিবাসর, প্রথম বসন্ত, মহাশ্বেতা, নায়িকা সংবাদ, থানা থেকে আসছি ইত্যাদি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ২০১২ সালে ‘বিশেষ চলচ্চিত্র পুরস্কার’ প্রদান করে। এছাড়া তিনি বহু পুরস্কারে ভূষিত হন। তাঁর মৃত্যুতে অভিনয় জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি অঞ্জনা ভৌমিকের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, স্বর্ণযুগের অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিকের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিউড। উত্তমকুমারের সঙ্গে একাধিক সিনেমায় নায়িকার ভূমিকায় দেখা গেছে এই বিশিষ্ট অভিনেত্রীকে। তাঁর অভিনীত সিনেমাগুলির মধ্যে অন্যতম হল ‘চৌরঙ্গী’, ‘নায়িকা সংবাদ’, ‘কখনও মেঘ’। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘মহেশ্বেতা’ ছবিতে অভিনয়ে নজর কেড়েছিলেন তিনি। ব্যক্তিগত জীবনে অনিল শর্মা নামের একজন নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে বিয়ে করেন তিনি। তাঁদেরই দুই মেয়ে নীলাঞ্জনা ও চন্দনা।
১৯৪৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর উত্তরবঙ্গে কোচবিহারে জন্ম করেন অঞ্জনা ভৌমিক। আসল নাম ছিল আরতি ভৌমিক, আর ডাক নাম বাবলি। কোচবিহার স্কুলেই পড়াশোনা। পরবর্তী সময় তিনি কলকাতায় এসে দমদমের সরোজিনী নাইডু কলেজ থেকে পড়াশোনা করেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। মাত্র ২০ বছর বয়সেই সিনেমার দুনিয়ায় পা রাখেন অঞ্জনা ভৌমিক, ছবির নাম ছিল ‘অনুষ্টুপ চন্দ’। তবে একটা সময় নিজেকে রঙিন দুনিয়া থেকে সরিয়ে নিয়ে সংসারে মন দিয়েছিলেন এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী।