৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পার্কিং ফি নিয়ে কারচুপি রুখতে কড়া কলকাতা পুরসভা

বিপাশা চক্রবর্তী
  • আপডেট : ২৭ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার
  • / 10

পুবের কলম প্রতিবেদক: শহর জুড়ে বেআইনি পার্কিং, অতিরিক্ত ফি আদায়ের মতো একাধিক অভিযোগ বারেবারে জমা পড়ছিল কলকাতা পুরসভার কাছে। এই অব্যবস্থা রুখতে লাগাতার প্রচার করেও কোনও সুরাহা হয়নি। অবশেষে পাকিং সংক্রান্ত অভিযোগ কমাতে আধুনিকতার পথে হেঁটেছে কলকাতা পুরসভা। ফি নিয়ে কারচুপি রুখতে পার্কিং লটে ‘ই-পস’ সিস্টেম বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু দেখা গিয়েছে অনেক এজেন্সি এই সিস্টেম ব্যবহার করছে না। এবার সেই সমস্ত এজেন্সিকে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে সদুত্তর না মিললে ব্ল্যাক লিস্টেডও করা হতে পারে।

শহর জুড়ে ৬০০ রাস্তায় পুরসভার অনুমোদনপ্রাপ্ত ১৩ হাজার পার্কিংজোন রয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি এজেন্সি এইসব পার্কিং লটের দায়িত্বে রয়েছে। টেন্ডারের মাধ্যমে এই লটগুলি এজেন্সিগুলোকে দিয়ে থাকে পুরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, বর্তমানে এই ধরণের প্রায় ৪০ টি এজেন্সি কাজ করে। এরমধ্যে ৩০ টি এজেন্সি ই পস মেশিন ব্যবহার করলেও প্রায় ১০ টি এই মেশিন ব্যবহার করছে না। কেন করছে না, কী সমস্যা, এই বিষয়গুলি জানতেই সোমবার পুরভবনে একটি রিভিউ মিটিং হয়। এজেন্সিগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেন পার্কিং বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার।

সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে এজেন্সিগুলিকে ই পস মেশিন ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক বলে জানানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেক্ষেত্রে মেশিন ব্যবহার না করলে তাদের চিহ্নিত শোকজ করবে কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে তাদের ব্ল্যাকলিস্টেডও করা হতে পারে। এ প্রসঙ্গে মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, অনেক এজেন্সি যুক্তি দেখিয়েছে যে তারা টাওয়ার লকেট পারছে না। যে যে সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে তা সমাধান করা হবে। তবে মেষয়িন ব্যবহার বাধ্যতামূলক। তিনি আরও জানান যে, পুরসভার আইটি সেক্টরকে ইতিমধ্যেই বলা হয়েছে, এমন কোনও টেকনোলজি অযাপলাই করতে যাতে পুরসভা থেকেই জানা যায় কোথায় কোন মেশিন চলছে, অথবা বন্ধ রয়েছে কি না।

ধর্মতলা, নিউ মার্কেট, বড়বাজার, পার্কস্ট্রিট সহ শহরের বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে অতিরিক্ত পার্কিং ফি আদায়ের অভিযোগ বারবার উঠছিল বারবার। পার্কিংয়ের বোর্ড ছাড়া বেআইনিভাবে সাইকেল, বাইক এমনকী গাড়ি পার্কিং করিয়েও টাকা আদায়ের অভিযোগ পুরসভার কাছে এসেছে। কোথাও ১০ টাকার জায়গায় ২০ টাকা, কোথাও আবার ৫০ টাকা নেওয়ারও অভিযোগ আসে। অনেক পার্কিং এরিয়াতে বোর্ড লাগানো থাকে না। থাকে না রেট চার্টও। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েন নাগরিকেরা।

এইসব অনিয়ম ঠেকাতেই শহরজুড়ে পার্কিং ব্যবস্থায় ডিজিটালাইজেশনের ওপর দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে, কোনও পার্কিং লটে কটা গাড়ি রাখার জায়গা আছে, তা পুরসভার বিভাগীয় সার্ভারে থাকছে। সেক্ষেত্রে যখন সংশ্লিষ্ট পার্কিং লটে কোনও বাইক বা গাড়ি ঢুকলে সঙ্গে সঙ্গে তা সার্ভারে নথিভুক্ত হয়ে যাবে। যখন বেরোবে সেই সময়টিও সার্ভারে ধরা পড়বে। সেই অনুযায়ী ই-পস মেশিনে ডিজিটাল ব্যবস্থায় স্লিপ জেনেরেট হবে। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট অর্থই দিতে হবে। ফলে পার্কিং ফি তে কারচুপি করার সুযোগ থাকছে না।

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

পার্কিং ফি নিয়ে কারচুপি রুখতে কড়া কলকাতা পুরসভা

আপডেট : ২৭ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার

পুবের কলম প্রতিবেদক: শহর জুড়ে বেআইনি পার্কিং, অতিরিক্ত ফি আদায়ের মতো একাধিক অভিযোগ বারেবারে জমা পড়ছিল কলকাতা পুরসভার কাছে। এই অব্যবস্থা রুখতে লাগাতার প্রচার করেও কোনও সুরাহা হয়নি। অবশেষে পাকিং সংক্রান্ত অভিযোগ কমাতে আধুনিকতার পথে হেঁটেছে কলকাতা পুরসভা। ফি নিয়ে কারচুপি রুখতে পার্কিং লটে ‘ই-পস’ সিস্টেম বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু দেখা গিয়েছে অনেক এজেন্সি এই সিস্টেম ব্যবহার করছে না। এবার সেই সমস্ত এজেন্সিকে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে সদুত্তর না মিললে ব্ল্যাক লিস্টেডও করা হতে পারে।

শহর জুড়ে ৬০০ রাস্তায় পুরসভার অনুমোদনপ্রাপ্ত ১৩ হাজার পার্কিংজোন রয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি এজেন্সি এইসব পার্কিং লটের দায়িত্বে রয়েছে। টেন্ডারের মাধ্যমে এই লটগুলি এজেন্সিগুলোকে দিয়ে থাকে পুরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, বর্তমানে এই ধরণের প্রায় ৪০ টি এজেন্সি কাজ করে। এরমধ্যে ৩০ টি এজেন্সি ই পস মেশিন ব্যবহার করলেও প্রায় ১০ টি এই মেশিন ব্যবহার করছে না। কেন করছে না, কী সমস্যা, এই বিষয়গুলি জানতেই সোমবার পুরভবনে একটি রিভিউ মিটিং হয়। এজেন্সিগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেন পার্কিং বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার।

সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে এজেন্সিগুলিকে ই পস মেশিন ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক বলে জানানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেক্ষেত্রে মেশিন ব্যবহার না করলে তাদের চিহ্নিত শোকজ করবে কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে তাদের ব্ল্যাকলিস্টেডও করা হতে পারে। এ প্রসঙ্গে মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, অনেক এজেন্সি যুক্তি দেখিয়েছে যে তারা টাওয়ার লকেট পারছে না। যে যে সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে তা সমাধান করা হবে। তবে মেষয়িন ব্যবহার বাধ্যতামূলক। তিনি আরও জানান যে, পুরসভার আইটি সেক্টরকে ইতিমধ্যেই বলা হয়েছে, এমন কোনও টেকনোলজি অযাপলাই করতে যাতে পুরসভা থেকেই জানা যায় কোথায় কোন মেশিন চলছে, অথবা বন্ধ রয়েছে কি না।

ধর্মতলা, নিউ মার্কেট, বড়বাজার, পার্কস্ট্রিট সহ শহরের বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে অতিরিক্ত পার্কিং ফি আদায়ের অভিযোগ বারবার উঠছিল বারবার। পার্কিংয়ের বোর্ড ছাড়া বেআইনিভাবে সাইকেল, বাইক এমনকী গাড়ি পার্কিং করিয়েও টাকা আদায়ের অভিযোগ পুরসভার কাছে এসেছে। কোথাও ১০ টাকার জায়গায় ২০ টাকা, কোথাও আবার ৫০ টাকা নেওয়ারও অভিযোগ আসে। অনেক পার্কিং এরিয়াতে বোর্ড লাগানো থাকে না। থাকে না রেট চার্টও। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েন নাগরিকেরা।

এইসব অনিয়ম ঠেকাতেই শহরজুড়ে পার্কিং ব্যবস্থায় ডিজিটালাইজেশনের ওপর দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে, কোনও পার্কিং লটে কটা গাড়ি রাখার জায়গা আছে, তা পুরসভার বিভাগীয় সার্ভারে থাকছে। সেক্ষেত্রে যখন সংশ্লিষ্ট পার্কিং লটে কোনও বাইক বা গাড়ি ঢুকলে সঙ্গে সঙ্গে তা সার্ভারে নথিভুক্ত হয়ে যাবে। যখন বেরোবে সেই সময়টিও সার্ভারে ধরা পড়বে। সেই অনুযায়ী ই-পস মেশিনে ডিজিটাল ব্যবস্থায় স্লিপ জেনেরেট হবে। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট অর্থই দিতে হবে। ফলে পার্কিং ফি তে কারচুপি করার সুযোগ থাকছে না।