পুবের কলম,ওয়েবডেস্ক: ‘বন্ধুত্ব জিহাদ’ ? হিন্দু হয়ে মুসলিমের সঙ্গে বন্ধুত্বের জের। হাজার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে টিকিয়ে রেখেছিল সম্পর্ক। যার জেরে যোগীরাজ্যে প্রাণ খোয়াতে হল বছর ৩৮-এর এক সাংবাদিককে।
নাম দিলীপ সাইনি। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের ফতেপুরে। শুধু তাই নয়, বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত মুসলিম বন্ধু শাহিদ খান। রাজ্যের বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের নেতা তিনি। আপাতত চিকিৎসাধীন শাহিদ। মোদি জমানায় ডাবল-ইঞ্জিন সরকার শাসিত রাজ্যে দেশজুড়ে সংখ্যালঘু বিদ্বেষ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। আর যোগীরাজ্যে তার মাত্রা আকাশচুম্বী। বিদ্বেষের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না বিজেপির সংখ্যালঘু নেতারাও।
কথা হচ্ছে শাহিদ খানের। রাজ্যের বিজেপি শাখার সংখ্যালঘু শেলের নেতা।
বিজেপি নেতা তো কি হয়েছে? ধর্মে মুসলিম সে। তাই তার সঙ্গে গাড় বন্ধুত্ব থাকতে পারে না। আর সেই বিদ্বেষের বলি হলেন এক নিরীহ হিন্দু সাংবাদিক! বাড়িতে ঢুকে কুপিয়ে খুন করা হল তাঁকে। চলল গুলি। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হলেন বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের ওই নেতা। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
READ MORE: প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেক দেবরায়
ঘটনাপ্রসঙ্গে শাহিদ পুলিশকে জানায়, দিলীপও আমি বসে একসঙ্গে খাবার খাচ্ছিলাম। হঠাৎ একটি ফোন আসে। দিলিপ ফোনে কথা বলার সময়ই দরজা ভেঙে আচমকা ঘরে ঢুকে পড়ে প্রায় ১৬ জনের একটি দল।তারপর দিলীপকে ছুরি দিয়ে কোপাতে শুরু করে তারা।
আমি দিলীপকে বাঁচাতে গেলে আমাকেও বেধড়ক মারধর করে দুষ্কৃতীরা।
ভয় দেখাতে কয়েক রাউন্ড গুলি পর্যন্ত চালায়। অভিযুক্তদের ১৬ জনের মধ্যে ৯ জনকে চিনতেন তারা। বাকিরা অজানা। এদিন চিৎকারের আওয়াজ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে স্থানীয়রা। গুরুতর আহত অবস্থায় দিলীপ সাইনি এবং শাহিদ খানকে দ্রুত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে কানপুরের লালা লাজপত রায় হাসপাতালে স্থানান্তর করার কথা বলা হয়েছিল। নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় দিলীপ সাইনির। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দিলীপের সঙ্গে সংখ্যালঘু শাহিদ খানের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে অনেকেই আপত্তি জানিয়েছিলেন।
‘লাডকা-লাডকি’ কাভি দোস্ত নেহি হো সাখতে আগে অনেকের মুখে এই কথাটি শোনা যেত। তবে যোগীরাজ্যের ক্ষেত্রে সেটি আলাদা। সেখানে শোনা যায় হিন্দু-মুসলিম কাভি দোস্ত নেহি বান সাখতে।
তাই দিলীপ ও শাহিদের সম্পর্ক অনেকের চক্ষুশূল হয়েছিল। যার জেরে তৈরি হয় পরিবারিক বিবাদ। আর সেই কারণেই এই খুন কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাপ্রসঙ্গে ফতেপুর পুলিশের প্রধান ধবল জয়সওয়াল বলেন, “দিলীপ সাইনিকে কোপানো হয়েছে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।মৃত অভিযুক্তদের চিনতেন। তাঁদের সঙ্গে কিছু নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। পুরো বিষয়ে আমরা মামলা দায়ের করেছি। তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। এছাড়া, লখনউ আর ফতেপুরে বেশ কিছু সম্পত্তির মালিক ছিলেন দিলীপ সাইনি। তা নিয়েও বিবাদ চলছিল। সেই কারণেও খুন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।