৩০ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যৌথ তদন্তে অনাস্থা, ফের সিবিআই চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চে ইডি

কিবরিয়া আনসারি
  • আপডেট : ২২ জানুয়ারী ২০২৪, সোমবার
  • / 13

মোল্লা জসিমউদ্দিন: যেন সাপেনেউলে সম্পর্ক! সন্দেশখালি ঘটনায় যৌথ তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে পুনরায় সিবিআই চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দারস্থ হলো কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডি। সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনার তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হল ইডি।

 

জানা গেছে, প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে। সেই সঙ্গে সব পক্ষকে মামলার নথি দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সোমবার ইডির আইনজীবী বলেন, ‘বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর সিঙ্গেল বেঞ্চ রাজ্য পুলিশের সঙ্গে সিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে যৌথ ভাবে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য পুলিশ অতীতে বরাবর কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে অসহযোগিতা করেছে। সুতরাং এহেন সিটের উপর ইডির ভরসা নেই। বরং ইডি মনে করছে এরফলে নিরপেক্ষ তদন্ত বিঘ্নিত হতে পারে। সেই সঙ্গে তথ্য ও প্রমান লোপাটের চেষ্টা হতে পারে। তাই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মামলা দায়ের করা হয়েছে’। খুব তাড়াতাড়ি এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।

 

কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ সিবিআইয়ের কাছে চার জন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসারের নাম চেয়েছিল। সেই সঙ্গে রাজ্যের কাছেও পুলিশ সুপার পদমর্যাদাপূর্ণ অফিসারের নাম চেয়েছিল। তবে সিবিআই এবং ইডি প্রথম থেকে তা নিয়ে আপত্তি করে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির মতে, ‘সন্দেশখালি কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতারের সদিচ্ছা থাকলে রাজ্য পুলিশ এতদিনে তা করে ফেলত। কিন্তু রাজ্য পুলিশের সেই সদিচ্ছা নেই। তাই যৌথ তদন্ত করার অর্থ হল, আরও জটিলতা তৈরি করা। সেই কারণেই তদন্তের নিরপেক্ষতার স্বার্থে শুধু সিবিআইয়ের উপর দায়িত্ব ছাড়ার আবেদন জানানো হয়েছে’। ইডি চাইছে, ‘সিট নয়, সন্দেশখালীর ঘটনার পুরো তদন্তের ভার দেওয়া হোক সিবিআইকে’।

 

সন্দেশখালির ঘটনায় মোট ৩ টি মামলা রুজু হয়েছিল ন্যাজোট থানায়। তার মধ্যে একটি এফআইআর দায়ের করেন ইডি আধিকারিকরা। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি মামলা রুজু করে পুলিশ। তৃতীয় এফআইআর-টি করেন সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়ির কেয়ারটেকার। হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ অনুযায়ী এর মধ্যে প্রথম দুটি এফআইআর এর তদন্ত করবে সিট। তবে ইডি চাইছে না এই মামলার তদন্তভারে রাজ্য পুলিশের উপস্থিতি। সেই কারণে সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে তারা। গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে রেশন দুর্নীতির তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার পর ইডি কলকাতা হাইকোর্টে জানায় যে রাজ্য পুলিশের উপর তাদের ভরসা নেই। অন্যদিকে, রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছিল পুলিশ নিজের যাবতীয় কর্তব্য পালন করেছে। এমনকী বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তারের সংখ্যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সিঙ্গেল বেঞ্চও।

প্রতিবেদক

কিবরিয়া আনসারি

Kibria obtained a master's degree in journalism from Aliah University. He has been in journalism since 2018, gaining work experience in multiple organizations. Focused and sincere about his work, Kibria is currently employed at the desk of Purber Kalom.

Copyright © Puber Kalom All rights reserved.| Developed by eTech Builder

যৌথ তদন্তে অনাস্থা, ফের সিবিআই চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চে ইডি

আপডেট : ২২ জানুয়ারী ২০২৪, সোমবার

মোল্লা জসিমউদ্দিন: যেন সাপেনেউলে সম্পর্ক! সন্দেশখালি ঘটনায় যৌথ তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে পুনরায় সিবিআই চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দারস্থ হলো কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডি। সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনার তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হল ইডি।

 

জানা গেছে, প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে। সেই সঙ্গে সব পক্ষকে মামলার নথি দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সোমবার ইডির আইনজীবী বলেন, ‘বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর সিঙ্গেল বেঞ্চ রাজ্য পুলিশের সঙ্গে সিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে যৌথ ভাবে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য পুলিশ অতীতে বরাবর কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে অসহযোগিতা করেছে। সুতরাং এহেন সিটের উপর ইডির ভরসা নেই। বরং ইডি মনে করছে এরফলে নিরপেক্ষ তদন্ত বিঘ্নিত হতে পারে। সেই সঙ্গে তথ্য ও প্রমান লোপাটের চেষ্টা হতে পারে। তাই প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মামলা দায়ের করা হয়েছে’। খুব তাড়াতাড়ি এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।

 

কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ সিবিআইয়ের কাছে চার জন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসারের নাম চেয়েছিল। সেই সঙ্গে রাজ্যের কাছেও পুলিশ সুপার পদমর্যাদাপূর্ণ অফিসারের নাম চেয়েছিল। তবে সিবিআই এবং ইডি প্রথম থেকে তা নিয়ে আপত্তি করে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির মতে, ‘সন্দেশখালি কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতারের সদিচ্ছা থাকলে রাজ্য পুলিশ এতদিনে তা করে ফেলত। কিন্তু রাজ্য পুলিশের সেই সদিচ্ছা নেই। তাই যৌথ তদন্ত করার অর্থ হল, আরও জটিলতা তৈরি করা। সেই কারণেই তদন্তের নিরপেক্ষতার স্বার্থে শুধু সিবিআইয়ের উপর দায়িত্ব ছাড়ার আবেদন জানানো হয়েছে’। ইডি চাইছে, ‘সিট নয়, সন্দেশখালীর ঘটনার পুরো তদন্তের ভার দেওয়া হোক সিবিআইকে’।

 

সন্দেশখালির ঘটনায় মোট ৩ টি মামলা রুজু হয়েছিল ন্যাজোট থানায়। তার মধ্যে একটি এফআইআর দায়ের করেন ইডি আধিকারিকরা। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি মামলা রুজু করে পুলিশ। তৃতীয় এফআইআর-টি করেন সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়ির কেয়ারটেকার। হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ অনুযায়ী এর মধ্যে প্রথম দুটি এফআইআর এর তদন্ত করবে সিট। তবে ইডি চাইছে না এই মামলার তদন্তভারে রাজ্য পুলিশের উপস্থিতি। সেই কারণে সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে তারা। গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে রেশন দুর্নীতির তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার পর ইডি কলকাতা হাইকোর্টে জানায় যে রাজ্য পুলিশের উপর তাদের ভরসা নেই। অন্যদিকে, রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছিল পুলিশ নিজের যাবতীয় কর্তব্য পালন করেছে। এমনকী বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তারের সংখ্যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সিঙ্গেল বেঞ্চও।