কলকাতাMonday, 28 October 2024
  1. আজকের শিরোনাম
  2. ইতিহাস-ঐতিহ্য
  3. ক্রাইম
  4. খেলা
  5. জেলা
  6. দেশ
  7. ধর্ম ও দর্শন
  8. পর্যটন
  9. ফোটো গ্যালারি
  10. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  11. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
  12. বিনোদন
  13. বিশ্ব-জাহান
  14. ব্লগ
  15. ভ্রমণ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সংখ্যালঘু হওয়ায় বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় খুন, সুন্দরবনের যুবকের মৃত্যু নিয়ে প্রতিক্রিয়া জয়নগরের সাংসদের 

Bipasha Chakraborty
October 28, 2024 1:37 pm
Link Copied!

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,জয়নগর : পেটের টানে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে ভিন রাজ্যে গিয়ে খুন হতে হয়েছে মিথ্যা বদনাম নিয়ে সুন্দরবনের এক সংখ্যালঘু যুবকের।শুধু মাত্র সংখ্যালঘু পরিবারের ছেলে হওয়ায় বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় গিয়ে খুন হতে হয়েছে বলে এবার তীব্র ভাষায় অভিযোগ করলো জয়নগরের সাংসদ তৃনমূল কংগ্রেসের প্রতিমা মন্ডল।

গত ২৭ আগস্ট হরিয়ানার চরখি দাদরি জেলার হানসাওয়াস খুর্দ গ্রামের একটি ঝুপড়িতে বসবাসকারীসুন্দরবনের জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের বাসন্তী থানার বল্লারটপ গ্রামের সাবির মল্লিক নামে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করে ছিলো গোরক্ষকরা বলে অভিযোগ ওঠে ।আর সাবিরের পিটিয়ে মারার দুমাস পর তাদের রান্না করা মাংস ফরিদাবাদের পরীক্ষাগারে পাঠায় হরিয়ানা সরকারের পুলিশ।আর সেই রিপোর্ট প্রকাশ হতে উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য।রিপোর্টে উঠে এলো ওটি গোমাংস ছিলো না অন্য মাংস ছিলো।আর এই পিটিয়ে খুনের কেসে হরিয়ানা পুলিশ ইতিমধ্যে ১০ জনকে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করেছে।

আর এই রিপোর্ট আসার পরে কেন তাদের পরিবারের সদস্যকে এই ভাবে মিথ্যা অভিযোগে খুন করা হলো তা নিয়ে সরব হয়েছে মৃত সাবিরের স্ত্রী,শ্যালক সহ পরিবারের অন্য সদস্যগণ।

মৃত সাবিরের স্ত্রী সাকিলা সরদার মল্লিক বলেন, আমরা সংখ্যালঘু বলে আমাদের ওপর অত্যাচার করলো বিজেপি শাসিত এই হরিয়ানা সরকার।ওখানে গোমাংস পাওয়া যায় না।তাহলে গোমাংস রান্নার অপরাধে কেন খুন করা হলো।আর এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ তৃনমূল কংগ্রেসের প্রতিমা মন্ডল। তিনি রবিবার বলেন,আমার লোকসভা কেন্দ্রের ক্যানিং,গোসাবা, বাসন্তী, কুলতলি ও জয়নগর থেকে যখনই কোনো সংখ্যালঘু ভাই কাজের তাগিদে বিজেপি শাসিত রাজ্যে যায় তখনই তাদের ওপর নির্মম ভাবে হত্যা চালায় অত্যাচার চালায় গোরক্ষকেরা। এটা কেন হবে।

স্বাধীন গণতন্ত্রে সব ধর্মের মানুষ সব জায়গায় গিয়ে কাজ করতে পারে।কই বিজেপি শাসিত কোনো রাজ্যে থেকে আমাদের রাজ্যে কেউ আসলে আমরা তো তাদের সাথে এধরনের কোনো কাজ করি না।আসলে সাবিরকে শুধুমাত্র সংখ্যালঘু হওয়ার অপরাধে মিথ্যা অভিযোগে খুন করা হলো।আমরা সঠিক বিচার চাই হরিয়ানা সরকারের কাছ থেকে। যাতে আগামী দিনে এ রাজ্যের কোনো মানুষের ভীন রাজ্যে গিয়ে খুন হতে না হয়।সাবিরের কিছু জিনিস পত্র ও টাকা হরিয়ানায় আটকে আছে।

ইতিমধ্যে ক্যানিং মহকুমা শাসক মারফত হরিয়ানা সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।আমিআবার নিজে এ বিষয়ে হরিয়ানা সরকারের সাথে যোগাযোগ করছি।মৃত সাবিরের পাশে হরিয়ানা সরকার এগিয়ে আসে নি।এসেছে আমাদের রাজ্যের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত সরকার।আর তাই তো মৃত সাবির মল্লিকের অন্ত্যিষ্টিক্রিয়ার খরচ সামলানোর পাশাপাশি নগদ কয়েক লক্ষ টাকা এবং মৃতের স্ত্রী সাকিলা সরদার মল্লিককে ভূমি ও রাজস্ব দফতরে কাজে নিয়োগ করেন।এটাই ওদের সাথে আমাদের তফাৎ।উল্লেখ্য, সুন্দরবনের বাসন্তী থানার বল্লার টপ গ্রামের বাসিন্দা সাবির মল্লিক সপরিবারে জীবিকা নির্বাহের কাজে গিয়েছিলেন হরিয়ানার চরখি দাদরিতে।

সেখানে ২০২১ সালে কোভিড কাল থেকে সাবির তাঁর স্ত্রী,মেয়ে, শ্যালক ও শশুর কে নিয়ে থাকতেন।আর তাঁরা ওখানে স্ক্র্যাপ সংগ্রহ করে সংসার চালাতো।সেখানে গত ২৭ শে আগস্ট সাবিরের বাড়িতে একদল গো রক্ষক হাজির হয়ে অভিযোগ করে গোমাংস রান্না করা হচ্ছে কেন।সাবিররা সে কথা মানতে না চাইলে সাবিরের সাথে কথা কাটাকাটি হয় এবং তাকে বাড়ি থেকে টানতে টানতে রাস্তায় এনে পিটিয়ে খুন করা হয়।এর পরে মৃতদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় গোরক্ষকরা।

এর পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সহায়তায় কফিনবন্দি অবস্থায় সাবিরের মৃতদেহ বাসন্তীর বল্লারটপ গ্রামেতে নিয়ে আসা হয় ও শেষ কার্য করা হয়। এরপরে মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃত সাবিরের স্ত্রীকে নবান্নতে ডেকে কাজে নিয়োগ করেন ও আর্থিক সহায়তা করেন। রবিবার মৃত সাবির মল্লিকের শ্যালক আলাউদ্দিন সরদার বলেন, হরিয়ানা সরকার কোন রকম ভাবে আমাদের সাহায্য করছে না, এমনকি ময়না তদন্তের রিপোর্ট ও এখনো পর্যন্ত আমাদেরকে দেওয়া হলো না।

আমরা চাই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসুক। তিনি এদিন এও বলেন, রাজ্যের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বোনকে বাসন্তী ব্লক ভূমি রাজস্ব দপ্তরে চাকরি করে দিয়েছেন এবং কয়েক লক্ষ টাকা সহায়তা করেছেন। আমরা চাই আর যেন কোন মানুষের ভীন রাজ্য গিয়ে এইভাবে খুন হতে না হয়।পাশাপাশি সঠিক তদন্তে দাবি ও জানালেন তাঁরা।