পুবের কলম, ওয়েব ডেস্ক: ২০১৯-এ বিক্রম ল্যান্ডার চাঁদের মাটিতে নেমেও শেষ মুহূর্তে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জড়িয়ে ধরে শিশুর মত কেঁদেছিলেন ইসরো প্রধান কে শিভান। মন ভেঙেছিল দেশের বিজ্ঞানী মহল থেকে শুরু করে মাঝরাতে টিভির পর্দায় চোখ রাখা গোটা দেশের মানুষের। তাই চন্দ্রায়ন-৩ এর ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছে না ইসরো। পরবর্তী চন্দ্রাভিযানে শেষ মুহূর্তে ল্যান্ডিং এর সমস্যা এড়াতে ইসরো ল্যান্ডার তৈরির দায়িত্ব দিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিশেষজ্ঞদের এই দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই কাজ এখন প্রায় সম্পূর্ণ করে ফেলেছেন বাংলার প্রযুক্তিবিদরা। আগামী ১০ নভেম্বর পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক অমিতাভ গুপ্তর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক হবে ইসরোর প্রতিনিধিদের।
চন্দ্রায়ন-২ এর সময় শেষ ধাপ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু বিক্রম ল্যান্ডার চাঁদের মাটিতে নামার পর মাটির সঙ্গে সংঘর্ষ সামাল দিতে না পারে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এরপরই সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারপর থেকে বিক্রম ল্যান্ডারের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। চন্দ্রায়ন-২ অভিযানের সময় ‘সফট ল্যান্ডিং’ নিশ্চিত করা যায়নি। পরের বার এই সমস্যা এড়াতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা এমন একটি ল্যান্ডার তৈরি করছেন, যেটি সফট ল্যান্ডিং সুনিশ্চিত করবে। অধ্যাপক অমিতাভ গুপ্ত জানিয়েছেন, তাঁরা যে যানটি তৈরি করছেন তাতে মোট ১৩ টি থ্রাস্টার রয়েছে। ওই থ্রাস্টারগুলি যানটির ফেদারটাচ ল্যান্ডিং নিশ্চিত করবে বলে আশাবাদী অধ্যাপক গুপ্ত। তিনি বলেন, এই যানটিতে ‘হোভারিং’ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে চাঁদের মাটিতে নামার আগে ল্যান্ডারটি বেশ কিচ্ছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে মাটি পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। পরিস্থিতি অনুকূল মনে হলে তখন চাঁদের মাটিতে নামবে ওই ল্যান্ডারটি। এভাবে মাটির সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে পারবে ল্যান্ডার।
ল্যান্ডারের ইমেজিংয়ের দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক সায়ন চট্টোপাধ্যায়। এবারে অবতরণস্থল থেকে সরে গেলেও মহাকাশযানটির অবস্থান বোঝা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী অধ্যাপক চট্টোপাধ্যায়।