পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও পশ্চিম তীরে অব্যাহত ইসরাইলি হামলা । রবিবার রাতে জেরুসালেমের উত্তরে পশ্চিম তীরের দুটি গ্রামে ইসরাইলি অবৈধ বসতকারীরা হামলা চালায়। জানা গেছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীদের সহায়তায় এই হামলা চালাচ্ছে তারা। এদিন ফিলিস্তিনি বাড়িঘর, একটি শিশুদের স্কুল এবং স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, এই হামলায় অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে। এমনকি গাজার খান ইউনুসে ইসরাইলি স্নাইপারদের হাতে ২ জন নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী বসতকারীদের এই সহিংসতায় সমর্থন দিয়েছে। এই সহিংসতার মধ্যে, ইসরাইলি বাহিনী পশ্চিম তীরে রাতভর সামরিক অভিযান চালিয়ে বহু ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে। তবে এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেই গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ৯০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছিল। পরিস্থিতি শান্ত হয়েও অশান্তি জিইয়ে রেখছে হানাদার বাহিনীরা। দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় ইসরাইলি সেনাবাহিনী তিন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে। নিহতদের মধ্যে একটি শিশু রয়েছে।
শুধু তাই নয়, সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দখলকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠী এবং ব্যক্তিদের ওপর বাইডেন প্রশাসন কর্তৃক আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছেন। একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, ট্রাম্প ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালে জারি করা নির্বাহী আদেশ ১৪১১৫ বাতিল করেছেন, যা পশ্চিম তীরে শান্তি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা নষ্টকারী ব্যক্তিদের ওপর কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপের অনুমোদন দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ৪৭,০৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,১১,০৯১ জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে, হামাসের হামলায় ইসরাইলে ১,১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি মানুষ অপহৃত হয়েছেন। যদিও যুদ্ধবিরতি কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে, কিন্তু সহিংসতা এবং সামরিক অভিযান বন্ধ না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরুর পর বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার গাজাবাসী তাদের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। এলাকায় ফেরার পরেই চলছে উদ্ধার অভিযান। উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে যেয়ে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে ও প্রতিটি সড়কে পড়ে আছে সারি সারি লাশ।