পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ইরান একটি নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করেছে, যা ইসরাইল পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম। এই ক্ষেপণাস্ত্রটির সক্ষমতা ইরানের সামরিক শক্তির আরও এক গুরুত্বপূর্ণ বিস্তার হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইরান দাবি করছে যে, এটি তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ইরান দীর্ঘ সময় ধরে নিজস্ব ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি উন্নত করার জন্য কাজ করছে, এবং এই নতুন স্থাপনা তার সামরিক সক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই ক্ষেপণাস্ত্রের উন্মোচন আন্তর্জাতিক মহলে নতুন আলোচনা সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে। ইরানের এই পদক্ষেপ পশ্চিমী দেশগুলোর কাছে উদ্বেগের কারণ হতে পারে, কারণ এটি তাদের অস্ত্র প্রতিযোগিতা এবং নিরাপত্তা কৌশলে প্রভাব ফেলতে পারে।
এটি একটি বড় বার্তা দেয় যে, ইরান তাদের সামরিক সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিরক্ষামূলক দিক থেকে তারা চূড়ান্ত প্রস্তুত। শনিবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ফুটেজে উন্মোচনের দৃশ্য দেখানো হয়। রাজধানী তেহরান থেকে এএফপি এ খবর জানায়। টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূগর্ভস্থ শহরগুলোতে ধ্বংসকারী ইলেক্ট্রনিক যুদ্ধে শত্রুপক্ষকে মোকাবেলা করতে সক্ষম শত শত ত্রুজ মিসাইল রাখা হয়েছে।
পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, এটি মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন, ‘প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও মহাকাশ প্রযুক্তি উন্নয়নের লক্ষ্য হলো এমন একটি অবস্থান তৈরি করা, যাতে কেউ ইরানের ভূখণ্ডে হামলার সাহস না করে।’তাই শুনে অনেকে বলেছেন যাদের মারণাস্ত্র শতশত ফুলের মত শিশু অকালে ঝরে যাচ্ছে তাদের নিয়ে কেন সরব হচ্ছে না পশ্চিমা দুনিয়া।
কেবল সমালোচনা করে কেউ কেউ দায় সারছে বটে কিন্তু তাতে দায়িত্বের প্রমাণ নেই। ফিলিস্তিনে দিনের পর দিন অসভ্য বর্বরতা চালানো হচ্ছে। তাদের যত উদ্ধেব্য ইরানের মিসাইল নিয়ে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ভূগর্ভের শত শত মিটার গভীরে রাখা হয়েছে এবং খুবই কম সময়ের মধ্যে ব্যবহার করা যায়।এই স্থাপনাটি ভূমির নিচে অবস্থান করে, যা এর নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করে। এর মাধ্যমে ইরান তাদের ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে শত্রুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারবে এবং প্রয়োজনে তা ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়া, ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলি শত্রু আক্রমণের থেকে সুরক্ষিত থাকে, যেমন বিমান হামলা বা মিসাইল আক্রমণ।
ইরান এই স্থাপনাটিকে যুদ্ধ প্রস্তুতির উন্নয়ন হিসেবে তুলে ধরছে এবং এটি তাদের রণকৌশলকে আরও শক্তিশালী করবে বলে দাবি করছে। দেশটি এর মাধ্যমে তাদের প্রতিরক্ষা কৌশলকে আধুনিকায়ন করতে চায় এবং একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়।
এই ধরনের উন্নয়ন আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে পশ্চিমী দেশগুলোর সাথে ইরানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে। অনেক দেশই ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নকে উদ্বেগের চোখে দেখে, বিশেষ করে ইসরাইল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এটি ইরানের নিজস্ব প্রতিরক্ষা কৌশল এবং অস্ত্রনীতি সম্পর্কে একটি বড় বার্তা পাঠাচ্ছে, যে দেশটি যে কোনো ধরনের আক্রমণের জন্য প্রস্তুত এবং সেই অনুযায়ী তার প্রতিরক্ষা শক্তি গড়ে তুলছে।সমুদ্রের অনেক দূরের লক্ষ্যবস্তুতে এটি আঘাত হানতে সক্ষম।
বিপ্লবী গার্ডের প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি এবং নৌবাহিনীর কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আলিরেজা তাংসিরি ঘাঁটিটি পরিদর্শন করেছেন। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনাটির অবস্থান গোপন রাখা হয়েছে। প্রতিবেদনে গদর-৩৮০ নামে একটি নতুন ত্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের মডেলও উন্মোচন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন ক্ষেপণাস্ত্রগুলো শত্রু জাহাজের জন্য জাহান্নাম তৈরি করতে পারে। গত মাসে, ইরানের দক্ষিণ জলসীমায় অভিযানরত আক্রমণকারী জাহাজগুলোর জন্য একটি ভূগর্ভস্থ নৌঘাঁটিও উন্মোচন করে ইরানের বিপ্লবী গার্ড।