পুবের কলম প্রতিবেদক: মিথ্যা মামলার জালে জড়িয়ে বহু নিরাপরাধ মানুষকে পোহাতে হয় আদালত ও জেলের ঘানি। অনেকেই নিজেকে নিরাপরাধ প্রমাণ করতে করতেই অনেকটা সময় পার হয়ে যায়। এমনই একজন ইমান আলি মণ্ডল। তিনি দীর্ঘ পাঁচ-বছরের আইনি লড়াইয়ের পর বেকসুর খালাস পেলেন। তরুণীর উপর অ্যাসিড আক্রমণের মিথ্যা কেসে জেলে যেতে হয়েছিল, অবশেষে মিলল মুক্তি। ততদিনে তছনছ হয়ে গিয়েছে সংসার। তবে অবশেষে জেল থেকে রেহাই মিলেছে। মিটেছে মিথ্যা মামলার কলঙ্ক, এটাই অনেক বলছেন পরিবার-পরিজনরা।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট ইমান আলি মণ্ডলকে বেকুসুর খালাস ঘোষণা করেছে এবং দ্রুত তাকে জেল থেকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিভাষ পট্টনায়ক।
জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের দুর্গাপুজোর নবমীর দিন গভীর রাতে অ্যাসিড হামলার শিকার হন এক তরুণী। তিনি পরে অবশ্য মারাও যান। অভিযোগ করা হয়, প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক ছিল তন্ময় হালদার নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। মৃত তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, ইমান আলি তন্ময় নাম নিয়ে তাঁদের মেয়েকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছে। ইমান আলি মুসলিম হওয়ায় তাঁদের মেয়ে সম্পর্ক রাখতে অস্বীকার করে তাই সে অ্যাসিড হামলা করে বলে অভিযোগ করা হয়। নদিয়ার হাঁসখালি থানার তদন্তকারী অফিসার তরুণীর বাড়ির লোকের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা শুরু করেন। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। শেষ পর্যন্ত যাবজ্জীবন জেলের সাজা হয় ইমান আলির।
এ দিকে ইমানের আইনজীবী জানান, ইমান আলি মহারাষ্ট্রের মুম্বাইতে কনস্ট্রাকশনের কাজ করতেন। তাঁর সঙ্গেই থাকতেন তন্ময় মণ্ডল নামে আর একজন। তিনি ইমান আলির মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন। সেই সূত্র ধরেই ইমান আলির নামে মামলা হয়। নদিয়া জেলা হাঁসখালি থানা সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী ইমানের নামে চার্জশিট জমা করে। জেলা আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে ইমাননে। অভিযোগ, তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা ইমান আলির কোন কথাই সেভাবে শুনতে চাননি। একতরফা মামলা সাজিয়েছিলেন।
পরে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ইমান আলির পরিবার। তাঁরা যোগাযোগ করেন আইনজীবী ফজলুর রহমান ও নাসরা আলি রহমান-এর সঙ্গে। দায়ের হয় মামলা। ২০১৭ সালে আদালতে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁরা। অবশেষে আদালত সন্তুষ্ট হয় যে, ইমান আলি নির্দোষ। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।